দখল দূষণমুক্ত হোক জলাধার
- ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
ঢাকায় কোটি কোটি মানুষের বসবাস। সারা দেশের সবার প্রবণতা হলো- সবাই আমরা ঢাকায় থাকতে চাই। অথচ সেই শহর বাস উপযোগী করতে কোনো স্থায়ী টেকসই প্রচেষ্টা নেই। সরকার যেমন এটি করতে পারেনি; নাগরিকদের মধ্যেও জোরালো সামাজিক উদ্যোগ নেই। এ নিয়ে সচেতনতাও কম। এই শহরের প্রাণ এর ভেতর দিয়ে প্রবাহিত খালগুলো। এগুলো শহরের পানিপ্রবাহের উৎসের পাশাপাশি একসময় যোগাযোগের অন্যতম পথ ছিল। দুর্ভাগ্য শহরে মানুষের সংখ্যা যত বেড়েছে; খাল তত দখল-দূষণের কবলে পড়েছে। অবস্থা এমন যে, এখন অর্ধেকের বেশি খাল অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পরিবেশ আন্দোলনের পক্ষ থেকে খাল উদ্ধার ও সংস্কার নিয়ে আওয়াজ উঠছে। অন্তর্বর্তী সরকারও এ নিয়ে এই প্রথম কার্যকর উদ্যোগ নিয়েছে।
ঢাকার অভ্যন্তরে জলাধার উদ্ধার ও সংস্কার কার্যক্রম হাতে নিয়ে মিরপুর ১৩ নম্বর সেকশনে বাউনিয়া খাল দিয়ে এই উদ্যোগের উদ্বোধন করেন তিন উপদেষ্টা। সরকারি কাজে লালফিতা অর্থাৎ আমলাতান্ত্রিক জটিলতা এই কাজে বড় বাধা বলে পরিবেশ উপদেষ্টা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সরকারি প্রক্রিয়ায় এমন প্রকল্প নিতে কম করে আট থেকে দশ মাস লেগে যাবে। এই ধরনের জটিলতা এড়াতে যতটুকু সামর্থ্য আছে তাই নিয়ে মাঠে নেমেছেন বলে জানালেন তিনি। এখন খালে মশা ছাড়া কিছু নেই বলেও মন্তব্য করেন এই উপদেষ্টা। বাস্তবতা হলো- ময়লা আবর্জনা ফেলে ঢাকার খালগুলো মেরে ফেলা হয়েছে। এগুলোর পানি কুচকুচে কালো। গায়ে লাগলে চর্মব্যাধি হওয়া অবধারিত।
স্বাধীনতা-উত্তর ঢাকায় ৫৭টি খাল ছিল। এগুলোর পানি তখন টলটলে স্বচ্ছ ও পানের যোগ্য ছিল। মাছ ও জলজপ্রাণীতে ভরপুর ছিল। শহরের পানি ব্যবস্থাপনায় প্রধান ভূমিকা রাখত। রিভার অ্যান্ড ডেল্টা রিসার্চ সেন্টারের (আরডিআরসি) এক গবেষণা মতে, ১৫টি খাল খনন করলে ঢাকার ৮০ শতাংশ জলাবদ্ধতা নিরসন সম্ভব। আরডিআরসি শহরের ৯টি জায়গা চিহ্নিত করেছে। এগুলোর পাশের খাল সংস্কার করলে রাজধানীর বিশাল এলাকায় ভারী বৃষ্টিপাত হলে আর জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হবে না। শহরের ভেতরে আরো ২০টি বিলঝিলের মতো জলাধার ছিল। এগুলো থেকে মানুষ একসময় মাছ আহরণ করত। বিনোদন স্পট হিসেবেও ছিল উপযোগী। এগুলোর বেশির ভাগ আংশিক বা পুরো দখল হয়ে গেছে। বিগত চার দশক আগেও ঢাকা বসবাসের দারুণ উপযোগী ছিল। শুধু জলাধার নয়; উল্লেখযোগ্য অংশে সবুজ গাছাপালাও ছিল। এখন পুরোপুরি একটি কংক্রিটের বস্তিতে পরিণত হয়েছে। এর বাতাস, মাটি ও পানির মান এখন এতটা খারাপ হয়েছে যে, বিশ্বের দূষিত নগরীর তালিকায় শহরটি শীর্ষে উছে এসেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার ঢাকার পরিবেশদূষণ কমাতে চিন্তাভাবনা করছে। এর ধারাবাহিকতায় ১৯টি খাল সংস্কারের কর্মসূচি নিয়েছে। প্রথম ধাপে ছয়টির কাজ উদ্বোধন করা হয়েছে। এই কাজ অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়ার প্রথম সপ্তাহে শুরু করলে এতদিনে বেশ কয়েকটি খাল মুক্ত হতো। যাই হোক, বিলম্বে হলেও কাজটি শুরুর জন্য সরকার সাধুবাদ পেতে পারে। নগরবাসীর প্রত্যাশা, শহরের খালসহ প্রতিটি জলাধার উদ্ধার করে সেগুলোতে প্রাণ ফেরানোর কাজ চালিয়ে যেতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা