খুনিদের প্রতি কোনো নমনীয়তা নয়
- ০১ মার্চ ২০২৫, ০০:০০
বাংলাদেশ ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ এক বাঁকে হাজির হয়েছে। স্বাধীনতার পর থেকে কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া অনিয়ম-দুর্নীতি আর অপশাসনে পর্যুদস্ত হয়েছে দেশ। হাসিনার দানবীয় শাসন এর ষোলোকলা পূর্ণ করে। জুলাইয়ে এর প্রতিক্রিয়ায় এক বিস্ফোরণ ঘটে। জাতির সামনে এক মহাসুযোগ তৈরি করেছে জুলাই বিপ্লব। অন্যদিকে একটি বড় আশঙ্কাও দেশের মানুষের ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে। ফ্যাসিবাদী চক্রের ওপরের খোলসটি ধসেছে। কিন্তু অভ্যন্তরীণ ভিত্তিভূমি এখনো অক্ষত। যেকোনো অঘটন ঘটিয়ে তারা অভূতপূর্ব সম্ভাবনাকে নস্যাৎ করে দিতে পারে। আবার জুলাইয়ে ঐক্যবদ্ধ জাতি নানা সঙ্কীর্ণ স্বার্থে বিভক্ত হয়ে পড়ছে। এ অবস্থায় অপরাধী চক্রের উপযুক্ত বিচার করা না গেলে এমন জাতীয় সম্ভাবনা অঙ্কুরে বিনষ্ট হতে পারে।
অন্তর্বর্তী সরকার রাষ্ট্রকে পরিত্যক্ত ও ভঙ্গুর অবস্থায় পেয়েছে। বিশেষ করে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা একেবারে নিঃশেষিত ছিল। হাসিনার দোসরদের বিচার করা যখন সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এ অবস্থায় পুলিশ ও বিচারব্যবস্থার নড়বড়ে অবস্থা হতাশা বাড়াচ্ছে। এখন পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের প্রধান হোতাদের উপযুক্ত বিচার হওয়ার বিশ্বাসযোগ্য পরিস্থিতি তৈরি করা যায়নি। এমনকি গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে অভিযুক্তদের আইনি প্রক্রিয়ায় আনায় নানা দুর্বলতা দেখা যাচ্ছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যানসহ আরো দুই সদস্য অপরাধীদের গ্রেফতারি পরোয়ানা কার্যকর না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ট্রাইব্যুনাল এ পর্যন্ত ১০৭ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন। তাদের মধ্যে মাত্র ৩৫ আসামি গ্রেফতার হয়েছেন। বিগত ১৫ বছরে গুম খুন আয়নাঘর ও গুপ্ত কারাগার প্রতিষ্ঠা করেছেন এসব অপরাধী। আবিষ্কৃত গুপ্ত কারাগারগুলোতে নির্যাতন করে মানুষ হত্যার তথ্য-প্রমাণ রয়েছে। তিন ফুট বাই চারফুট আয়তনের কবরের সাইজের সেল পাওয়া গেছে। এ ছাড়া জুলাইয়ে আন্দোলনকারীদের নারকীয় কায়দায় তারা হত্যা করেছেন। বেসামরিক নাগরিকদের ওপর পরিচালনা করেছে সামরিক অভিযান। বিক্ষোভকারীদের ওপর প্রাণঘাতী অস্ত্রের প্রয়োগ করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ স্পটে স্নাইপার বসিয়ে এমনকি হেলিকপ্টার থেকে গুলি করে পাখির মতো মানুষ হত্যা করেছে। পতিত ক্ষমতাসীনরা ক্ষমতা চিরস্থায়ী করতে নাৎসিদের মতো হীন বর্বরতার নীতি গ্রহণ করেছিল। নির্বিচারে মানবহত্যাকারী কসাইদের বিচার তাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
এদের যদি উপযুক্ত বিচার করা না যায়; তাহলে কখনো একটি মানবিক রাষ্ট্র কায়েম করা যাবে না। আরো ভয়ের ব্যাপার হচ্ছে, বিদেশী শক্তি কিংবা অন্য কোনো অসৎ উপায় অবলম্বন করে এসব নাৎসি ফের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে নিতে পারে। সেক্ষেত্রে জুলাই বিপ্লব সংঘটনকারী ছাত্র-জনতাকে একজন একজন করে বাছাই করে তারা হত্যা করবে। যেমন তারা সাড়ে ১৫ বছরে কয়েক ডজন বিচারিক হত্যাকাণ্ড করেছে। আইনশৃঙ্খলা ও গোয়েন্দা বাহিনীগুলো সাজিয়েছে হাসিনা একান্ত নিজেদের লোকদের দিয়ে। ট্রাইব্যুনালের আদেশ যথাযথ কার্যকর করার ক্ষেত্রে তারা কিভাবে তৎপরতা দেখাচ্ছেন সেটি এখন বিবেচনায় রাখতে হবে। সময় থাকতে সতর্ক না হলে বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে জাতিকে।
ট্রাইব্যুনালের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে- আদেশ তামিলে কারো গাফিলতি থাকলে তাদের ব্যাপারে যেন অভিযোগ দেয়া হয়। আদালতের এ আদেশকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে। মানবাধিকার লঙ্ঘনকারী এ চক্রকে যেকোনো মূল্যে গ্রেফতার করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনো ধরনের গাফিলতি মার্জনা করা যাবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা