সাঁড়াশি অভিযান চালাতে হবে
- ২২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
উখিয়া-টেকনাফে আবারো সক্রিয় হয়ে উঠছে মানবপাচারকারী চক্র। এ চক্রের সদস্যদের হাতে শিকার হচ্ছেন স্থানীয় ও রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুরাও। বিভিন্ন সময়ে প্রশাসনের অভিযানে চক্রের কিছু সদস্য আটক হলেও হোতারা সবসময় আড়ালে থেকে যায়। নয়া দিগন্তের উখিয়া (কক্সবাজার) সংবাদদাতার প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
নয়া দিগন্তের খবর অনুযায়ী, ২০০৫ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত উখিয়ার রেজুখাল হয়ে এবং টেকনাফে সাগর উপকূল দিয়ে সাগরপথে ট্রলারে করে মালয়েশিয়ায় প্রচুর মানব পাচার হয়েছে। পাচারের শিকার লোকজন থাইল্যান্ড সীমান্তে বা মালয়েশিয়া পৌঁছালে পাচারকারীরা তাদের মারধর করে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা আদায় করে নিত। পরবর্তী সময়ে পাচারের শিকার লোকজন অবৈধভাবে মালয়েশিয়ায় অবস্থান করে সেখানে নৈতিক-অনৈতিক বিভিন্ন কাজে জড়িয়ে পড়তেন। ওই সময়ে থাইল্যান্ডে একটি পাহাড়ে মালয়েশিয়াগামী লোকজনের লাশ উদ্ধার ও একটি চক্র ধরা পড়ে। এর পর থেকে সাগরপথে মানবপাচারে মৃত্যুঝুঁকি জেনে যাওয়ার পর প্রশাসন শক্ত অবস্থান নেয়। এতে ধীরে ধীরে মানবপাচার বন্ধ হয়ে যায়।
২০১৭ সালে রোহিঙ্গা-সঙ্কট সৃষ্টি ও নতুনভাবে কক্সবাজারে লাখ লাখ রোহিঙ্গার অনুপ্রবেশের পর ২০২০ সালের দিকে এ পথে ফের মানবপাচারে সক্রিয় হয়ে ওঠে পাচারকারীরা। বর্তমানে পুরনো এবং নতুন পাচারকারীদের সমন্বয়ে গঠিত একটি চক্র আগের চেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছে। থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়াভিত্তিক একটি আন্তর্জাতিক মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা বাংলাদেশেও সক্রিয় রয়েছে। সম্প্রতি সীমান্ত উপজেলা টেকনাফে মানবপাচারের জন্য পাহাড়ে জড়ো করে রাখা একটি তাঁবু থেকে ৬৬ জনকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময়ে পাচারকাজে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়।
উদ্ধার হওয়া ভিকটিমদের মধ্যে সাতজন বাংলাদেশী এবং অন্যরা উখিয়া-টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা। পাচারকারীরা আর্থসামাজিক অনগ্রসরতা ও পরিবেশগত অসহায়ত্বকে পুঁজি করে উন্নত জীবনযাপন, অধিক বেতনে চাকরি ও অবিবাহিত নারীদের মালয়েশিয়ায় বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে যৌন-নিপীড়ন, প্রতারণামূলক বিয়ে ও জবরদস্তিমূলক শ্রমসেবা আদায়সহ ১০-১৫ দিন জড়ো করে রাখে। এ ঘটনায় আরো সাতজনকে পলাতক ও ৯-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হয় বলে জানান সংশ্লিষ্ট থানার ওসি। উখিয়া ও টেকনাফ থানা পুলিশের পাশাপাশি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে দায়িত্বরত এপিবিএন পুলিশও স্বীকার করেছে, প্রতিটি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পাচারকারী চক্রের সদস্যরা কাজ করছে।
প্রশাসনিক কাজ জোরদার ও যথাযথভাবে সম্পন্ন করাই হলো সরকারের অর্থাৎ সরকারি কর্মকর্তাদের দায়িত্ব। সরকার যদি সক্রিয় থাকে তাহলে মানবপাচারকারী চক্র সক্রিয় থাকতে পারে না। তদুপরি, এটা মানবপাচারের একটি আন্তর্জাতিক পথ হওয়ায় সরকারের কঠোরতা অবলম্বন করা উচিত ছিল; কিন্তু কঠোরতার পরিবর্তে দেখা যাচ্ছে চরম উদাসীনতা। ফলে মানবপাচারকারীরা আবারো সক্রিয় হয়ে ওঠার সুযোগ পেয়েছে। তাই এসব দুষ্কৃতকারীকে দমাতে টেকনাফ ও উখিয়ার মাঠপ্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলাবাহিনী সমন্বিতভাবে অপরাধী চক্রের বিরুদ্ধে সাঁড়াশি অভিযান চালাবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা