পানি আগ্রাসন থেকে বাঁচার পথ খুঁজুন
- ২১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
পানি আগ্রাসন কতটা প্রকট হয়ে উঠতে পারে বাংলাদেশ তার দৃষ্টান্ত। এ দেশের সব প্রধান নদীর উৎস ভারত। দেশটি কোনো ধরনের আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতি এমনকি ন্যূনতম সৌজন্যবোধের পরিচয় না দিয়ে নদীগুলোর পানি একচেটিয়া প্রত্যাহার করে নিচ্ছে। তারা এটা করছে জলবিদ্যুৎ প্রকল্প কিংবা সেচের কাজে ব্যবহারের জন্য। কিন্তু ভাটির দেশ বন্ধুপ্রতিম বাংলাদেশের কথা একবারও ভাবেনি। এই অসহনীয় পানিসঙ্কট থেকে বাঁচার জন্য চীনের সাথে তিস্তা চুক্তি করার চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েও ভারতের একধরনের ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছে বাংলাদেশ।
সহযোগী একটি দৈনিক খবর দিয়েছে, পদ্মা এখন ধু-ধু বালুচর। শুকনো মৌসুমে নদীটির বাংলাদেশ অংশে পানিপ্রবাহ আর থাকে না। একই দশা হতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গে গজলডোবা ব্যারাজ নির্মাণের পর তিস্তা নদীরও। শুকনো মৌসুমে পানির প্রবাহ নেমে আসে ২০০ থেকে ৩০০ কিউসেকে। অচিরেই এই নদীও পানিশূন্য হবে। দীর্ঘ দিন তিস্তার পানিবণ্টন নিয়ে চুক্তির ধরনা দিয়ে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশ সরকার তিস্তা প্রকল্প নিয়ে চীনের সাথে কথা বলে। চীন এতে সাড়া দিয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাথে সাড়ে তিন বছর ধরে সম্ভাব্যতা যাচাই করে।
তিস্তা নদীর পানি ব্যবস্থাপনা নিয়ে যখন চূড়ান্ত চুক্তি হতে যাচ্ছে তখন বাগড়া দেয় ভারত। ভারত জানায়, তারাই তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করবে। দিল্লির সেবাদাস হাসিনা কোনো বিচারবিবেচনা না করেই চীনের প্রস্তাব নাকচ করে দেয়। অথচ প্রস্তাবের পর ভারত নিশ্চুপ। এ নিয়ে তাদের আর কোনো কার্যক্রম নেই। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, চীনের সাথে চুক্তি ঠেকাতে ভারত এই চাল দিয়েছে। বৃহৎ প্রতিবেশী দেশটি বাংলাদেশের সাথে যেমন আচরণ করে তাতে তাদের বিশ্বাস করার সুযোগ নেই। সীমান্ত হত্যা, বাণিজ্যবৈষম্যসহ গুরুত্বপূর্ণ কোনো ইস্যুতেই বাংলাদেশ গত ৫৩ বছরেও ভারতকে আস্থায় পায়নি। ভারতের দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষ সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনার আশ্বাস প্রতি বছর দিলেও হত্যাকাণ্ড চলতেই থাকে।
হাসিনার ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য নতুন সুযোগ এসেছে। ভারতের কাছে জিম্মি হয়ে থাকা বিভিন্ন ইস্যুতে অন্য বন্ধু দেশগুলোর সাথে সম্পর্ক গড়ে আমরা মুক্তি পেতে পারি। ইতোমধ্যে চীন বিপুল আগ্রহ নিয়ে এগিয়ে এসেছে। তিস্তা ইস্যুতেও তারা আগ্রহ দেখাচ্ছে। একচেটিয়া পানি প্রত্যাহার করে নেয়ার পর তিস্তার অববাহিকার বিশাল জনপথ মরুকরণের কবলে পড়েছে। সেখানকার কৃষি ও মৎস্যজীবীদের বড় অংশ জীবিকা হারিয়েছে। চীনের তিস্তা প্রকল্পটি একটি ব্যাপকভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনা। এতে নদী খনন, নৌ চলাচল, পর্যটন, আবাসন ও শিল্প স্থাপনের প্রস্তাব রয়েছে। এটি হলে বিপুল পরিমাণ পানি সংরক্ষণ করা যাবে এবং কৃষক ও মৎস্যজীবীসহ দুই কোটির বেশি মানুষ উপকৃত হবে। এই তিস্তা নিয়ে চুক্তি করা বাংলাদেশের আগ্রহের ওপর নির্ভর করছে। চীন আমাদের পররাষ্ট্র উপদেষ্টাকে সে দেশে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার সে দেশ সফরের বিষয়েও আগ্রহ দেখাচ্ছে।
এ অবস্থায় চীনের সাথে তিস্তায় সমন্বিত প্রকল্প বাস্তবায়নে উদ্যোগী হওয়া উচিত। ভারতের পানি আগ্রাসন থেকে বাঁচার এটিই উপায়। দেশবাসী চায়, সরকার চীনের সাথেই তিস্তা চুক্তি সম্পাদন করুক।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা