১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৬
`
চাঁদা না পেয়ে ৪০০ দোকান দখল

প্রশাসনের ব্যর্থতা

-


গণ-অভ্যুত্থানে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতনের পর নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মিতালি মার্কেটের ৪০০ দোকান দখলের অভিযোগ উঠেছে সঙ্ঘবদ্ধ চাঁদাবাজ চক্রের বিরুদ্ধে। পাঁচ লাখ টাকা করে চাঁদা না পেয়ে এসব দোকান দখল করা হয়। দখলদারদের বিরুদ্ধে আদালতে পৃথকভাবে পাঁচটি চাঁদাবাজির মামলা এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক দফতরে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে; কিন্তু প্রতিকার না পাওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন দোকান মালিকরা।
একটি সহযোগী দৈনিকের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর মিতালি মার্কেটের ৮, ৯ ও ১৩ নম্বর ভবনের দোকানপ্রতি পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করেন কমর আলী, তার ছেলে মাসুদ ও বাদশা। চাঁদা দিতে অস্বীকার করায় তারা বিএনপি নামধারী কয়েক শ’ বহিরাগত লোক নিয়ে মার্কেটের তিনটি ভবন দখলে নেন। দোকান মালিকরা সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে অভিযোগ করেও আইনি সহায়তা পাননি। নিরুপায় হয়ে তারা নারায়ণগঞ্জ আদালতে পৃথক পাঁচটি চাঁদাবাজির মামলা করেন। মামলা করার পর থেকে দখলদাররা তাদের হুমকি-ধমকি দিয়ে যাচ্ছেন।
চাঁদাবাজদের বিচারের দাবিতে গত ৯ জানুয়ারি দুপুরে দোকান মালিকরা মার্কেটে বিক্ষোভ মিছিল করেন। এ সময় চাঁদাবাজরা তাদের ধাওয়া দিয়ে মার্কেটের সব প্রবেশপথ বন্ধ করে তালা লাগিয়ে দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। এ ঘটনায় দোকান মালিক আব্দুল মান্নান বাদি হয়ে মৃত আব্বাস আলীর ছেলে কমর আলী, তার ছেলে বাদশা, মাসুম ও ম্যানেজার রানার নাম উল্লেখ করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় লিখিত অভিযোগ করেন।

চাঁদা দাবির অভিযোগ যথারীতি অস্বীকার করেন সংশ্লিষ্টরা। অভিযুক্ত মাসুম বলেন, পেশিশক্তি খাটিয়ে রফিকুল ইসলাম আমাদের জমি দখল করে এসব ভবন নির্মাণ করেছেন। আমরা আমাদের জমি দখলে নিয়েছি। তাই আমাদের জমিতে নির্মিত মার্কেট ভবনও আমাদের। সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি শাহীনূর আলম বলেন, ‘আগে একপক্ষ মার্কেটের দখলে ছিল। ৫ আগস্টের পর আরেক পক্ষ দখল নিয়েছে। কমর আলীর পক্ষ জমির মালিক বলে দাবি করছে। আর আব্দুল মান্নানের পক্ষ সমিতির কাছ থেকে পজেশন কিনে দোকানের মালিক দাবি করছে। দু’পক্ষই পাল্টাপাল্টি অভিযোগ দিয়েছে।
দখলবাজি থেকে জনগণকে উদ্ধারে সরকারের ভূমিকাই মুখ্য। তার প্রশাসনিক ব্যর্থতায় জনগণ দখলবাজির শিকার হয়। নারায়ণগঞ্জের এ ঘটনাই প্রমাণ, প্রশাসন কত দুর্বল।
নতুন পরিস্থিতিতে চাঁদবাজির অভিযোগে রাজনৈতিক দলের সাথে সংশ্লিষ্টদের নাম এলে ওই দলেরও দায়িত্ব তার লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার। আমরা এ ব্যাপারে সরকার, প্রশাসন এবং সংশ্লিষ্ট রাজনৈতিক দলের দৃষ্টি কামনা করছি। এসব বিষয়ে দ্রুত ও কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া না হলে ভবিষ্যতেও স্বৈরাচারী সরকারের মতো একই পরিণতি হতে পারে দলগুলোর। তাই সময় থাকতে সাবধান হওয়া জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement