পুনর্বাসনের উদ্যোগ নিন
- ১২ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
কুমিল্লার তিতাসে বন্যার কারণে গোমতী নদীতে ভিটেমাটি হারিয়ে প্রায় পাঁচ মাস ধরে তাঁবুতে বসবাস করছে ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত বাদশা মিয়ার পরিবার। আপাতত ছিপ, বড়শি দিয়ে মাছ ধরে যা পান, তা দিয়ে কোনোভাবে স্ত্রী আর দুই মেয়ে নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। নয়া দিগন্তের তিতাস (কুমিল্লা) সংবাদদাতার প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
গত বছরের আগস্ট মাসে কয়েকদিনের টানা ভারী বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে কুমিল্লার তিতাস উপজেলার ভিটিমান্দি, কলাকান্দি ও নারান্দিয়া ইউনিয়নের গোমতীর তীরবর্তী এলাকা প্লাবিত হয়। গোমতীর প্রবল স্রোতে নারান্দিয়া পূর্ব ও পশ্চিম পাড়ের প্রায় ৬০টি পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে যায়। ঘরবাড়ি হারিয়ে বেশির ভাগ পরিবার অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছে। ভিটেমাটি হারিয়ে অনেকে ঘুরে দাঁড়াতে পারলেও এখনো অন্যের বাড়িতে তাঁবু টানিয়ে থাকেন বাদশা মিয়া। বাদশা মিয়া (৩৯) নারান্দিয়া ইউনিয়নের দক্ষিণ নারান্দিয়া পশ্চিম পাড়ের মরহুম আবদুল মতিনের ছেলে।
নয়া দিগন্তের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, নদীর পাড়ে মজিব নামে একজনের পরিত্যক্ত পাকা ভিটায় বাঁশ ও ত্রিপল টানিয়ে বসবাস করছেন বাদশা মিয়া। নদীর পাড়ে বেঁধে রাখা একটি ছোট কোষা নৌকার মাচায় ছিপ-বড়শি দিয়ে মাছ ধরে বিক্রি করে যে অর্থ পান, তা দিয়ে বাজার-সদাই করতে হয় বলে জানান বাদশা মিয়া। তিনি বলেন, আরেকজনের জায়গায় পাঁচ মাস ধরে তাঁবু টানিয়ে আছি। মাছ বিক্রি করে যা পাই তা দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। তাই মাঝে মধ্যে ডেকোরেটরের কাজসহ টুকটাক কাজ করি। এখন কোথায় থাকব, কী করব, সেই চিন্তায় আছি।
কয়েকটি বাঁশ, টিন আর গাছের ডালপালা দিয়ে তৈরি করা ডেরার ভেতর থেকে তসবিহ হাতে বেরিয়ে এসে বাদশা মিয়ার প্রতিবেশী নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত জোহরা আক্তার বলেন, ‘আমার বাড়িঘর নদীয়ে ভাইঙ্গা লইছে। নামাজ পড়ি, কুরআন তিলাওয়াত করি। বাড়িঘর ভাইঙ্গা তছনছ অইয়া গেছেগা।’
নারান্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আরিফুজ্জামান খোকা বলেন, বন্যার কবলে বাড়িঘর, কবরস্থান, বিভিন্ন স্থাপনাসহ নারান্দিয়া গ্রামের গোমতী নদীর দুই পাড়ের প্রায় ৬০টি পরিবারের বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। কয়েকটি পরিবার একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছে। পানি কমায় ঝুঁকিতে থাকা বাড়িঘরগুলো নদীভাঙনের কবলে পড়ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুমাইয়া মমিন বলেন, নদীভাঙনে ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা পাঠিয়েছি। এখনো বরাদ্দ আসেনি। বাদশা মিয়ার যদি কোনো আবাসস্থল না-ই থাকে, তাহলে তো উনি ভূমিহীন। আমাদের কাছে আবেদন করলে পরবর্তী সময়ে আমরা সুযোগ পেলে পুনর্বাসনের চেষ্টা করব।
মানুষের মাথা গেঁাজার ঠাঁই বা বাসস্থান একটি মৌলিক অধিকার। এ অধিকার পূরণ করা সরকারের দায়িত্ব। বন্যায় ভিটেমাটি হারানো আমাদের দেশে স্বাভাবিক। কারণ সাংবার্ষিক বন্যা হয়। সে জন্য এতদিন তাঁবুতে থাকতে হবে কেন? এটি সরকারের উদাসীনতার ফল। আমরা অবিলম্বে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। অন্যথায় এ সমস্যার সমাধান হবে না।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা