কিসের ইঙ্গিত বহন করে
- ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ০০:০০
আগুনে ভস্মীভূত হয়েছে পিলখানা হত্যার বিচারে স্থাপিত অস্থায়ী বিশেষ আদালতের এজলাস। পুড়ে গেছে আদালতের সব নথিপত্র। বৃহস্পতিবার সকালে এখানে পিলখানা হত্যাকাণ্ডে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলার শুনানির দিন ধার্য ছিল। ঘটনার পর বিচারপ্রক্রিয়া স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী শুনানির নতুন তারিখ ধার্য করা হয়েছে।
ঘটনার আগে আলিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থীরা অস্থায়ী এ আদালত সরিয়ে নেয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেন। তারা মাঠের সব প্রবেশপথে তালা ঝুলিয়ে দেন। শিক্ষার্থীদের দাবি, বিচারকাজ চলার সময় তাদের শিক্ষাকার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটে। এর আগেও তারা এ বিষয়ে মন্ত্রণালয়ে অভিযোগ দিয়েছেন কিন্তু সমাধান হয়নি। পরে ভোররাতে অস্থায়ী আদালতের এজলাস কক্ষে আগুন লাগে।
পিলখানা হত্যাকাণ্ড দেশের ইতিহাসে গুরুতর ঘটনা। ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার পিলখানায় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিডিআর) সদর দফতরে বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ সেনাকর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। বিদ্রোহের নামে চালানো হলেও এর পেছনে প্রতিরক্ষা বাহিনীকে দুর্বল করা এবং দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ধ্বংসের সুদূরপ্রসারী দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্র ছিল- এমন অভিযোগ রয়েছে। বিদেশী সংশ্লিষ্টতার প্রসঙ্গও উঠেছে। নারকীয় এ হত্যাযজ্ঞ দেশের গণ্ডি পেরিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। এ ঘটনায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দু’টি মামলা হয়। হত্যা মামলায় খালাস বা সাজাভোগ শেষে বিস্ফোরক মামলার কারণে মুক্তি পাননি ৪৬৮ জন। অথচ পুরো ঘটনার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত করেনি পতিত স্বৈরাচারী সরকার। বিদেশী সংশ্লিষ্টতার বিষয়েও অনুসন্ধান চালানো হয়নি। বিচারের নামে প্রহসন করেছে।
বর্তমান পরিবর্তিত প্রেক্ষাপটে এ নিয়ে পুনঃতদন্ত ও নতুন করে বিচারের প্রক্রিয়া চলছে। একটি কমিশন কাজ করছে। পাশাপাশি চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের কারামুক্তি, ন্যায়বিচার নিশ্চিত, চাকরিচ্যুতদের পুনর্বহাল ও পুনর্বাসনের দাবিতে ভুক্তভোগীরা আন্দোলন করছেন। শুক্র ও শনিবার গণসংযোগ এবং রোববার দেশের সব জেলায় মানববন্ধন করার কর্মসূচি দিয়েছেন তারা।
অগ্নিকাণ্ডের সময় এজলাসের আগুন নেভাতে ফায়ারসার্ভিসের কর্মীদের বাধা দেয়া হয়েছে। নথিপত্রসহ সবকিছু পুড়ে নিঃশেষ না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভকারীরা দমকলকর্মীদের ভেতরে ঢুকতে দেয়নি।
ভোর ৫টার পর দমকলকর্মীদের যখন ভেতরে যেতে দেয়া হয় তখন সব পুড়ে ছাই। বিষয়টি ভেবে দেখার মতো।
অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে শুধু বিডিআর হত্যার বিচার নয়, বহু গুরুত্বপূর্ণ বিচারকাজের দায়িত্ব। গত ১৫ বছরে অর্থ লুটপাট, বিদেশে পাচার, অনিয়ম-দুর্নীতি, গুম খুন, মানবাধিকার হরণ ও জুলাই গণহত্যাসহ বেশ কয়েকটি গণহত্যার বিচারও সরকারকে করতে হবে। কাজটি খুব সহজ নয়। জনগণ সর্বান্তকরণে এ বিচার চাইলেও রাজনৈতিক ঐক্যে শৈথিল্য স্পষ্ট।
স্বৈরাচারের সব দোসর এবং তাদের মিত্র প্রতিবেশী দেশটি চরম বৈরিতা অব্যাহত রেখেছে। সরকারকে অস্থিতিশীল করতে একের পর এক নাশকতা চলছে। এ পরিস্থিতিতে বিশেষ আদালতে আগুনের ঘটনাটি নিছক সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদের প্রকাশ হিসেবে দেখার সুযোগ নেই; বরং মনে প্রশ্ন জাগে এটি কিসের ইঙ্গিত বহন করে। সঙ্গত কারণে এ কথা বলা যায়, আমরা যদি আন্তরিকতা নিয়ে পতিত স্বৈরাচারের বিচার চাই তাহলে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে অতন্দ্র প্রহরীর ভূমিকা পালন করতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা