প্রকৃত কারণ শনাক্ত করুন
- ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
প্রতি বছরই গ্রীষ্মকালে দেশের বহু স্থানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে বিপুল সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়। তবে আগুনের ঘটনাগুলো পর্যবেক্ষণে দেখা যাবে, প্রায় সব সময় এগুলোর বেশির ভাগের বেলায় ব্যক্তিগত ঘরবাড়ি ও বেসরকারি স্থাপনা বিশেষ করে যেগুলো অরক্ষিত সেখানে আগুন লাগে। লক্ষণীয়, যেসব ভবনে অগ্নিনির্বাপণের আধুনিক সরঞ্জাম নেই; সেসব স্থাপনায় আগুন লাগলে তা নেভানো খুব দুরূহ হয়ে পড়ে।
এ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে গত বুধবার রাতে শীতের সময় দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে রহস্যজনক যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে, এটিকে কোনো গোষ্ঠীর ঠাণ্ডামাথার নাশকতা বলে মনে করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এমন বলতে হচ্ছে, কারণ পতিত স্বৈরাচারের দোসররা এখনো জনপ্রশাসনের সবখানে বহাল তবিয়তে রয়েছে। তারা চব্বিশের অভ্যুত্থানের ফসল বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে, ব্যর্থ করতে ও নিজেদের অপকর্মের নথি তথ্যপ্রমাণ বিনষ্ট করতে যেকোনো নাশকতা করতে তৎপর থাকবে, এটিই স্বাভাবিক।
৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদী শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে স্বৈরাচারের সহযোগী এবং যারা সুবিধাভোগীরা কোনোভাবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারকে মেনে নিতে পারছে না। একই সাথে প্রতিবেশী ভারতও তাদের তাঁবেদার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ায় বাংলাদেশবিরোধী প্রচারণায় মেতে ওঠে। দেশীয় অপশক্তি ও প্রতিবেশী দেশ মিলে অন্তর্বর্তী সরকারকে ব্যর্থ করতে বিপ্লবোত্তর একের পর এক অঘটন ঘটাতে সচেষ্ট রয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু নির্যাতনের কল্পিত কাহিনী ছড়িয়ে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির অপচেষ্টা, দাবি আদায়ের নামে আনসার সদস্যদের মাঠে নামানো, জনপ্রশাসন অকার্যকর করতে নানাভাবে আন্তঃক্যাডারে অসন্তোষ সৃষ্টি করা এবং বিভিন্ন গোষ্ঠীর দাবি-দাওয়ার বহর নিয়ে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকারকে ব্যতিব্যস্ত রাখার অপকৌশল। অযৌক্তিক নানা ইস্যুতে একের পর এক আন্দোলন গড়ার চেষ্টা চলছে।
বর্তমান সরকার সব অপকর্ম সামাল দিয়ে হাসিনার অপশাসনে প্রায় ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশকে আবার দাঁড় করাতে সাধ্যমতো কাজ করছে। ঠিক সেই সময় সচিবালয়ে আগুনের ঘটনা মোটেও সামান্য ঘটনা নয়। এ আগুন যে স্বাভাবিক কোনো ঘটনা নয়, তা সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়।
এ কথার প্রতিধ্বনি পাওয়া যায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর সিনিয়র চিফ পেটি অফিসার মো: আমিনুল ইসলামের গণমাধ্যমে দেয়া বক্তব্যে। গতকাল সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সচিবালয়ের আগুন শর্টসার্কিট থেকে নয়; বরং কেউ পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগিয়েছে বলে মনে হয়।
পারিপার্শ্বিক বিভিন্ন অনুষঙ্গ বিবেচনায় নিলে সন্দেহাতীতভাবে বলা যায়, সচিবালয়ে গত বুধবার রাতের অগ্নিকাণ্ড কোনো দুর্ঘটনা নয়। পতিত স্বৈরাচারের প্রেতাত্মাদেরই এ ঘটনার সাথে জড়িত থাকার সম্ভাবনা বেশি। সচিবালয়ে সংরক্ষিত গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিপত্র পুড়িয়ে ফেলা এর অন্যতম উদ্দেশ্য হতে পারে; যাতে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাসহ তার দোসরদের অপকর্মের তথ্যপ্রমাণ মুছে ফেলা যায়। আদালতে যাতে ফ্যাসিবাদের মূল হোতা এবং তার সঙ্গীদের অপরাধ প্রমাণ করার সুযোগ না থাকে।
আমরা বলতে চাই, সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা হালকাভাবে নেয়ার অবকাশ নেই। এর প্রকৃত কারণ উদঘাটনে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। জড়িতদের অবিলম্বে শনাক্ত ও গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক দিতে হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা