২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ৭ পৌষ ১৪৩১, ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
আন্দোলনকারী ছাত্রদের হত্যা

বিপ্লবের বিরুদ্ধে নতুন ষড়যন্ত্র

-

বিগত সাড়ে ১৫ বছরে হাসিনার ফ্যাসিবাদী শাসন জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথর হয়ে চেপে বসেছিল। আইন বিভাগ, বিচার বিভাগসহ রাষ্ট্রের সব অঙ্গ ও প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের একান্ত সেবায়েত বানিয়েছেন। দিন যত গেছে দেশের প্রতিটি বিভাগকে শেখ হাসিনা এমনভাবে কুক্ষিগত করেছেন, তার থেকে মুক্তি পাওয়ার কোনো দিশা পাওয়া যাচ্ছিল না। সব ধরনের বিরোধিতাকে সরকার অস্ত্রের ভাষায় মোকাবেলা করেছে। প্রচলিত রাজনৈতিক কর্মসূচি এ দানবকে হঠাতে এক ধরনের পরাজয় বরণ করে নিয়েছিল। সেই অবস্থায় আবির্ভাব ঘটে ছাত্রদের, তাদের অনমনীয় মনোভাব ও বিপুল রক্তের বিনিময়ে মূলত ফ্যাসিস্ট হাসিনার পতন হয়েছে। তাই হাসিনা ও তার দোসরদের প্রধান লক্ষ্য চব্বিশের বিপ্লবে নেতৃত্ব দেয়া ছাত্রসমাজ।
কয়েক দিন ধরে দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে খবর পাওয়া যাচ্ছে, ছাত্ররা টার্গেট হচ্ছে। এর মধ্যে কয়েকজন হত্যার শিকার হয়েছেন। কিছু হত্যার ঘটনা রহস্যের সৃষ্টি করেছে। কমপক্ষে এই ধরনের তিনটি হত্যার ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে। নৃশংসভাবে তাদের মেরে ফেলা হয়েছে। কয়েকজন আন্দোলনকারী জানিয়েছেন, তাদের ফোনে হত্যার হুমকি দেয়া হচ্ছে। আরো অনেকে জানাচ্ছেন, তাদের ফলো করা হচ্ছে। তাদের বসবাসের ঠিকানা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং চলাচলের পথ রেকি করছে কিছু লোক। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি শাবাব হোসেন মেহের নামের একজন সংবাদমাধ্যমকে জানান, তাকে ১৭ ডিসেম্বর রাত ৯টায় হোয়াটসঅ্যাপে কল করে হুমকি দেয়া হয়। তাকে বলা হয়, সে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতে পারবে না, শান্তিতে জীবনযাপন করতে দেয়া হবে না। এমনকি তার পরিবারের কোনো সদস্যকে ভালো থাকতে দেবে না দুর্বৃত্তরা। আশার বিষয় হচ্ছে, থানায় অভিযোগ দায়েরের পর এই দুর্বৃত্তকে ট্র্যাকিং করে পুলিশ আটক করেছে। তবে ছাত্রদের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হচ্ছে আন্দোলনকারী ছাত্রদের রক্ষায় দেশের সব জায়গায় পুলিশ সতর্ক ভূমিকা পালন করছে না। কিছু ক্ষেত্রে তাদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এসেছে। ছাত্র হত্যার কারণ হিসেবে তারা অপ্রাসঙ্গিক কিছু বিষয় সামনে আনছে। পারিবারিক শত্রুতা, রাজনৈতিক বিরোধ, এমনকি আরো কিছু ঠুনকো কারণ উল্লেখ করা হচ্ছে। এমনকি কিছু মিডিয়ায় এসব গুপ্তহত্যা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রিপোর্ট করছে। মনে রাখতে হবে, শেখ হাসিনা পালিয়ে গেছেন কিন্তু ফ্যাসিবাদের পুরো কাঠামো এখনো অনেকটাই অক্ষত। এর মধ্যে অন্যতম পুলিশ বাহিনী। তার প্রায় অর্ধেক হাসিনার সময়ে নিয়োগ পেয়েছে। অন্যদিকে রয়েছে ফ্যাসিবাদের সমর্থক মিডিয়া। রাজনৈতিক দলসহ সব বিরোধিতাকে পুলিশ ও মিডিয়ার সহায়তায় শেখ হাসিনা ধামাচাপা দিয়েছিলেন। ফ্যাসিবাদী চক্র যখন অনেকটাই নিশ্চিত তাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ী, তখন সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত এই ছাত্ররা তারুণ্যের শক্তি দিয়ে দেশের মাটি থেকে তাদের উৎখাত করেছেন। স্বাভাবিক কারণে সারা দেশে ছাত্র নেতৃত্ব তাদের প্রধান নিশানা। দেশের ভেতরে তাদের থাকা সমর্থকগোষ্ঠী ও অবৈধ অস্ত্র দিয়ে তারা ছাত্র নেতৃত্বকে গুপ্তহত্যার টার্গেট বানাতে পারে।
এখন বিপ্লব রক্ষার বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে। প্রশ্ন উঠেছে, এত প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত চব্বিশের এই স্বাধীনতা রক্ষা করা যাবে তো? এ অবস্থায় তরুণ ছাত্র নেতৃত্বকে নিঃশেষ করে দেয়া গেলে ফ্যাসিবাদের জন্য আবারো সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। এই প্রেক্ষাপটে সবাইকে সজাগ থাকা অত্যন্ত জরুরি।


আরো সংবাদ



premium cement
নিরাপদ বাংলাদেশ গঠনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ৪ দফা দাবি আর্থিক অনিয়মের অভিযোগে রাবি অধ্যাপক আতাউরকে সাময়িক অব্যাহতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব হলেন নাসিমুল গনি রাজশাহীতে রাজপাড়া থানার নতুন ভবন উদ্বোধন এনআইডির তথ্য বেহাত, কম্পিউটার কাউন্সিলের সাথে ইসির চুক্তি বাতিল সবার সহযোগিতায় দুর্নীতিমুক্ত ও ক্রিয়েটিভ বাংলাদেশ গড়তে চাই : শিশির মনির মিরসরাই পৌরসভার সাবেক মেয়রের ওপর হামলা ‘বিচারের পরেই আওয়ামী লীগ ফিরতে পারবে’ রাজশাহীতে তেলের ডিপোতে আগুন, পুড়ল ৪০০ ব্যারেল তেল বাংলাদেশে আবারো রোহিঙ্গা ঢলের শঙ্কা কতটা ‘প্রিয় মালতী' মুক্তির পর থেকেই প্রশংসায় ভাসছেন মেহজাবীন চৌধুরী

সকল