রেলপথ নিরাপদ হবে কবে
- ০৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ০০:০০
একটি সহযোগী দৈনিকের কুমিল্লা প্রতিনিধি জানান, কুমিল্লা জেলায় রয়েছে ১২০ কিলোমিটার রেলপথ। এখানে পাঁচ বছরে শুধু অরক্ষিত লেভেলক্রসিংয়ে ১৮টি দুর্ঘটনায় অন্তত ৩০ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। সর্বশেষ কয়েক দিন আগে বুড়িচং উপজেলার কালিকাপুর এলাকায় সড়ক পারাপারের সময় ট্রেনের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালকসহ সাতজন নিহত হয়েছেন। জেলার মধ্য দিয়ে যাওয়া ঢাকা-চট্টগ্রাম, লাকসাম-নোয়াখালী ও লাকসাম-চাঁদপুর তিনটি রেলপথের মধ্যে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে। মারা যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ নানা শ্রেণিপেশার মানুষ। স্থানীয়দের ভাষ্য, বছরের পর বছর ধরে দাবি জানিয়ে এলেও বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই গুরুত্বপূর্ণ স্থানে গেট নির্মাণ করা হয়নি। এ জন্য অরক্ষিত লেভেলক্রসিংয়ে চলাচলের সময় ট্রেন দুর্ঘটনা দিন দিন বাড়ছে। তবে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বল্প জনবল নিয়ে ১২০ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথে নজরদারি করা অত্যন্ত কঠিন। রেলওয়ে ও স্থানীয় সূত্রে পাওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কুমিল্লায় পাঁচ বছরে অবৈধ লেভেলক্রসিংয়ে ১৮টি দুর্ঘটনার মধ্যে চারটি বাদে সব দুর্ঘটনাই ঘটে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে। এর মধ্যে চলতি বছর ছয়টি দুর্ঘটনায় ১১ জন মারা গেছেন। এ ছাড়া ২০২০ সালে দু’জন, ২০২১ সালে পাঁচজন, ২০২২ সালে ছয়জন ও ২০২৩ সালে পাঁচজনের মৃত্যু হয়। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে দু’জন শিক্ষার্থী, দু’জন শিক্ষক, একজন করে ব্যবসায়ী ও এনজিও কর্মকর্তা, চারজন অটোরিকশাচালক, বাকিরা যাত্রী ও পথচারী। লাকসাম-চাঁদপুর রেলপথে কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। কুমিল্লার আট উপজেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশি ছয়বার দুর্ঘটনা ঘটেছে নাঙ্গলকোটে, মারা গেছেন ১০ জন। এ ছাড়া লাকসাম ও সদর দক্ষিণে তিনটি করে, লালমাইয়ে দু’টি, ব্রাহ্মণপাড়া, মনোহরগঞ্জ, আদর্শ সদর ও বুড়িচংয়ে একটি করে দুর্ঘটনা ঘটেছে। সর্বশেষ কয়েক দিন আগে বুড়িচংয়ের কালিকাপুর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের একটি অরক্ষিত লেভেলক্রসিংয়ে ট্রেনের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক, যাত্রীসহ সাতজন নিহত হন। বান্নঘর এলাকার জাহিদুল ইসলাম বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথে ওই ক্রসিংয়ে গেট লাগানোর দাবি জানিয়ে আসছেন এলাকাবাসী; কিন্তু আজও দাবি পূরণ হয়নি। ওসি মো: এমরান হোসেন বলেন, প্রায় ১২০ কিলোমিটার রেলপথে সব জায়গায় তদারক করা কঠিন। যেসব স্থানে রেলগেট নেই, সেখানে মানুষকে সচেতন হয়ে চলাচল করতে হবে। বিশেষ করে রেলপথ পারাপারের সময় যানচালকদের সতর্ক থাকতে হবে। তাহলে দুর্ঘটনা কমে আসবে। রেলওয়ে পুলিশ যতগুলো মৃত্যুর খবর পেয়েছে সবগুলোতেই রেলওয়ে থানায় অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে।
রেলপথে ট্রেনের উপযোগিতা খুব বেশি। এটি সস্তা ও নিরাপদ হওয়ায় মানুষ যাতায়াতের জন্য রেলের ওপর বেশি নির্ভরশীল। দেখা যাচ্ছে, রেলপথ আমাদের দেশে নিরাপদ হয়নি। রেলপথের রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম; কিন্তু এর নিরাপত্তাও দিন দিন যেন কমে যাচ্ছে। সড়কপথে উন্নত যানবাহন যুক্ত হওয়ায় সম্প্রতি রেলের ওপর মানুষের নির্ভরতাও কমতে শুরু করেছে। সাধারণ মানুষের সাশ্রয়ী যানবাহন হিসেবে রেলের এখনো কোনো বিকল্প নেই। আমরা আশা করি, সরকার অবিলম্বে নজর দেবে; রেলের নিরাপত্তা বাড়ানো এবং সুষ্ঠু পরিচালনার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা