জুলুমের অবসান হোক
- ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সমমানের ইবতেদায়ি মাদরাসা পরিচালিত হয়। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যেমন প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণী পর্যন্ত রয়েছে; তেমনি ইবতেদায়ি মাদরাসাতেও ওই সব শ্রেণীতে পাঠদান করানো হয়। কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয় আর ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রতি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি বিমাতাসুলভ। অবকাঠামো, শিক্ষকদের বেতনসহ অন্যান্য সব সুযোগ-সুবিধায় ব্যবধান আকাশ-পাতাল! ইতোমধ্যে দেশের অল্প কিছু ছাড়া সব প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ করা হয়েছে। এসব বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ১১তম এবং সহকারী শিক্ষকরা পান ১৩তম গ্রেড। অন্যদিকে প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণ দূরের কথা, বেশির ভাগ মাদরাসার শিক্ষক বেতন-ভাতা বা আর্থিক অনুদান কিছু পান না! এছাড়া এসব মাদরাসার শিক্ষকদের পেশাগত উৎকর্ষতায় প্রশিক্ষণে কোনো প্রতিষ্ঠান নেই। প্রশিক্ষণবিহীন শিক্ষকদের দিয়ে ইবতেদায়ি মাদরাসার শিক্ষাকার্যক্রম পরিচালিত হয়।
জাতীয় প্রেস ক্লাবে গত শনিবার ‘বৈষম্যের শিকার স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা : উত্তরণের পথ’ শীর্ষক এক আলোচনায় ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হাসান স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণের দাবিকে অত্যন্ত যৌক্তিক মনে করে বলেছেন, ‘আমরা যদি ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলোর দায়িত্ব নিতে না পারি তাহলে আগামী দিনে এ দেশে ইসলামী শিক্ষার ভবিষ্যৎ অন্ধকার।’ তিনি আরো বলেন, ‘দেশের পাঠ্যক্রমে আমাদের ইতিহাস, ঐতিহ্য, সব মানুষের ধর্মবিশ্বাস যথাযথভাবে অন্তর্ভুক্ত থাকা বাঞ্ছনীয়। এটা না হলে আমাদের শিক্ষাব্যবস্থা অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। কিন্তু পতিত হাসিনা সরকারের আমলে এ দেশে বারবার ধর্মীয় বিশেষ করে ইসলামী শিক্ষা সঙ্কুচিত করা হয়েছে।
ধর্ম উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হাসানের বক্তব্যকে আমরা সাধুবাদ জানাই। বাংলাদেশে ইসলামের অনুসারী সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ চান নিজেদের সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করতে। এ ক্ষেত্রে রাষ্ট্র সাধারণ শিক্ষার পৃষ্ঠপোষকতায় যত না তৎপর, ইসলামী শিক্ষার পৃষ্ঠপোষকতায় ততটাই গাফিল! শুধু গাফিল নয়, মাদরাসা শিক্ষাকে কৌশলে নিরুৎসাহিত করতে প্রয়োজনীয় পৃষ্ঠপোষকতা করা হয়নি। বিশেষ করে গত সাড়ে ১৫ বছরে দেশে ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি দেখানো হয়েছে চরম বৈরিতা। মাদরাসা শিক্ষার প্রতি চরম বিতৃষ্ণা সৃষ্টির অপপ্রয়াস চালানো হয়েছে। তার পরও এ দেশের ধর্মপ্রাণ মানুষ মাদরাসা শিক্ষা থেকে দূরে সরে যাননি।
দেশে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে সাড়ে ৬৫ হাজার। আর স্বতন্ত্র ইবতেদায়ি মাদরাসার সংখ্যা প্রায় ৯ হাজার। তিনটি সরকারি আলিয়া মাদরাসার ইবতেদায়ি শাখা ছাড়া দেশের আর কোনো ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণ করা হয়নি। অথচ দেশে রাষ্ট্রীয়ভাবে সাধারণ ও মাদরাসা শিক্ষা নামে আলাদা দু’টি শিক্ষাব্যবস্থা চালু রয়েছে। এক্ষেত্রে সাধারণ শিক্ষাকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে মাদরাসা শিক্ষাকে অবহেলা-অবজ্ঞার চোখে দেখা জুলুম ছাড়া আর কিছু নয়।
আমরা মনে করি, দেশের অসংখ্য সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপরীতে মাত্র ৯ হাজার ইবতেদায়ি মাদরাসা জাতীয়করণ করা সরকারের পক্ষে খুব বেশি কঠিন না। ন্যায্যতার দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে বলা যায়, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ইবতেদায়ি মাদরাসাগুলো জাতীয়করণ করা সময়ের অপরিহার্য দাবি। সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ইবতেদায়ি মাদরাসায় সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা না হলে তা হবে জুলুমের শামিল। আমরা চাই, দীর্ঘ সময় থেকে বৈষম্যের শিকার ইবতেদায়ি মাদরাসার প্রতি ইনসাফ করা হোক। এর মাধ্যমে জুলুমের অবসান হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা