কৃষকদের দিকে তাকান
- ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০০:০০
দুই মাসের টানা বর্ষণে ডুমুরিয়া উপজেলার বেশির ভাগ খাল-বিল-নদী, চিংড়ি ঘের, সবজিক্ষেত দীর্ঘদিন পানিতে তলিয়ে আছে। এতে প্রায় ৩৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। জলাবদ্ধ অবস্থায় পড়ে থাকার কারণে আসন্ন বোরো ধানের চাষাবাদেও অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। দুর্যোগের কারণে উপজেলার বেশির ভাগ মানুষের রোজগারের পথ বন্ধ হয়ে গেছে। দিনমজুর ও দরিদ্র কৃষকদের দিন কাটছে অর্ধাহারে-অনাহারে। বহু বছরের মধ্যে এবার এত বড় দুর্যোগে পড়ার পরও অনাহারে-অর্ধাহারে থাকা মানুষ তেমন খাদ্য সহায়তা পাচ্ছেন না। ‘চিংড়ি ঘেরে মাছ-সবজি-ধান চাষকেন্দ্রিক’ জীবন-জীবিকানির্ভর পুরো ডুমুরিয়া উপজেলার মধ্যবিত্ত-নিম্নবিত্তের মানুষের জীবনে নেমে এসেছে বিপর্যয়। নয়া দিগন্তের ডুমুরিয়া (খুলনা) প্রতিনিধির প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে এসব তথ্য জানা গেছে।
ডুমুরিয়া ত্রাণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নে ২৪১টি গ্রামের মধ্যে বেশির ভাগ গ্রামের চিংড়ি ঘের তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি গ্রামের বাড়িঘর-রাস্তাঘাটেও জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। ধামালিয়া ইউনিয়নের বরুনা, কাঠেঙ্গা ও চেচুড়িসহ আটটি গ্রাম, রঘুনাথপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণনগর ও মুজারঘুটোসহ ১০টি গ্রাম, রন্দাঘরা ইউনিয়নের খরসঙ্গ, মিকাশিমিল ও হাসানপুরসহ পাঁচটি গ্রাম, ঋর্ণিয়া ইউনিয়নের সিঙ্গা ও পাঁচপোতাসহ পাঁচটি গ্রাম, আটালিয়া ইউনিয়নের আধারমানিকসহ আটটি গ্রাম, শোভনা ইউনিয়নের বারইকাঠি ও বাগাছড়াসহ চারটি গ্রাম, শরাফপুর ইউনিয়নের আকড়াসহ পাঁচটি গ্রাম, সাহস ইউনিয়নের লতাবুনিয়াসহ চারটি গ্রাম, ভাণ্ডারপাড়া ইউনিয়নের তেলিখালি, পেড়িখালি ও ধানিবুনিয়াসহ পাঁচটি গ্রাম, ডুমুরিয়া সদর ইউনিয়নের মির্জাপুর, বিলপাটিয়ালা ও সাজিয়াড়াসহ পাঁচটি গ্রাম, রংপুর ইউনিয়নের রংপুর, সাড়াভিটা ও বটবেড়াসহ চারটি গ্রাম, গুটুদিয়া ইউনিয়নের লাইন বিলপাবলা, বিলপাবলা ও লতাসহ পাঁচটি গ্রাম এবং মাগুরখালি ইউনিয়নের কাঞ্চননগর এখনো প্লাবিত অবস্থায় রয়েছে।
এসব প্লাবিত এলাকার মধ্যে সাড়াভিটা, ঘোনা, বটবেড়া, ঘোষড়া, কাঞ্চনপুর, মির্জাপুর, বিলপাটিয়ালা, সিঙ্গা, কৃষ্ণনগর ও আধারমানিক গ্রামের অবস্থা খুব লাজুক। এসব গ্রামের কাঁচা ঘরবাড়ি পড়ে গেছে। মানুষগুলো খেয়ে না খেয়ে কোনোরকম দিনাতিপাত করছেন। ইউনিয়ন পরিষদ থেকে হাতেগোনা কিছু মানুষ নামমাত্র কিছু চাল পেলেও প্রয়োজনের তুলনায় তা খুব অপ্রতুল।
উপজেলা ত্রাণকর্মকর্তা আশরাফ হোসেন বলেন, গত দুই মাসে আমরা উপজেলার সব ইউপি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে তিন ধাপে মোট ৪৩ টন চাল ও দুই লাখ টাকা বিতরণ করেছি। তবে দুর্দশাগ্রস্ত মানুষের তুলনায় এসব সাহায্য নিতান্তই নগণ্য। ডুমুরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাসনিম জাহান বলেন, দুর্গত প্রান্তিক মানুষের জন্য আরো খাদ্য সহায়তা প্রয়োজন রয়েছে। এ জন্য জেলায় চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।
আমাদের দেশে অর্থনীতিতে কৃষির অবদান দিন দিন কমলেও এখনো জনজীবনের বিরাট অংশের জীবিকার উৎস কৃষি। অতএব, কৃষিজীবী বা কৃষকরা এ দেশের সমাজ-বাস্তবতায় এখনো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মাছচাষি বা সবজিচাষি বলে কথা নেই তারা সবাই সমান গুরুত্বের অধিকারী। আমরা আশা করি, অবিলম্বে সরকার স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে খুলনার ডুমুরিয়ার চাষিদের সমস্যার সমাধানে অগ্রণী হবে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা