৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫ কার্তিক ১৪৩১, ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
রাজধানীতে বেড়েছে অপরাধ

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সক্রিয় করুন

-

রাজধানীতে অপরাধ বেড়ে গেছে। ছিনতাই, ডাকাতিসহ বেড়েছে খুন, রাহাজানির মতো ঘটনাও। এ প্রবণতা নতুন নয়। এগুলো কখনো বাড়ে আবার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতা বৃদ্ধি পেলে কমে যায়। ৫ আগস্টের পট-পরিবর্তনের পরপরই রাজধানীতে ডাকাতির ঘটনা বেড়ে গিয়েছিল। মানুষের মধ্যে শঙ্কা ও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছিল। কিন্তু সেনাবাহিনীর কঠোর হস্তক্ষেপে সেগুলো থেমে যায়। মূলত রাজনৈতিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়ায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে কিছু সীমাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। তারই সুযোগ নিচ্ছে অপরাধী চক্র। সম্প্রতি রাজধানীর মোহাম্মদিয়া হাউজিং, বেড়িবাঁধ, বাঁশবাড়ি, চাঁদ উদ্যান, ঢাকা উদ্যান, রায়েরবাজার, বছিলা ও জেনেভা ক্যাম্পে অপরাধ বেড়েছে। এসব এলাকায় অবৈধ মাদক কারবার নিয়ন্ত্রণ, বাজারসহ নানা খাত দখলকে কেন্দ্র করে সৃষ্টি হচ্ছে দ্বন্দ্ব ও সঙ্ঘাত। হচ্ছে খুনও। ৫ আগস্টের পর থেকে মোহাম্মদপুর এলাকায় ১০টি খুনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটেছে বেশ ক’টি ডাকাতি।
জানা যাচ্ছে, মোহাম্মদপুর এলাকায় সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই ও ডাকাতি রোধে প্রতিটি হাউজিংয়ে অস্থায়ী ক্যাম্প বসাবে সেনাবাহিনী। এসব ক্যাম্প থেকে এলাকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় কাজ করবেন সেনাসদস্যরা। খবরটি স্বস্তিকর। রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের সুযোগে আগের অপরাধীদের জায়গায় নতুন কোনো অপরাধী যেন গজিয়ে উঠতে না পারে সেটি নিশ্চিত করতে হবে।
এ ছাড়াও রাজধানীর ভাটারা, বাড্ডা, শেরেবাংলা নগর, হাজারীবাগ, তেজগাঁও, হাতিরঝিল, শাহবাগ, মিরপুর, পল্লবী, বিমানবন্দর, খিলক্ষেত ও উত্তরা পশ্চিম থানা এলাকায় চুরি ও ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে বেশি। চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনাগুলো ঘটছে মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে চুরি-ছিনতাই বন্ধ করা খুব বেশি কঠিন না। এ ক্ষেত্রে ওই সময়গুলোতে তাদের টহল জোরদারসহ নানাবিধ উদ্যোগ গ্রহণের বিকল্প নেই।
একটি সহযোগী দৈনিকের খবর অনুযায়ী, ৫ আগস্ট বিভিন্ন থানা ও পুলিশের কাছ থেকে পাঁচ হাজার ৭৩২টি অস্ত্র খোয়া যায়। এখনো দেড় হাজার অস্ত্র উদ্ধার হয়নি। এ ছাড়াও অপরাধীদের হাতে রয়েছে অবৈধ অস্ত্র। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর খোয়া যাওয়া অস্ত্রসহ অপরাধীদের সব অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করতে হবে। অন্যথায় অপরাধ কমবে না।
ইতোমধ্যে আন্ডারওয়ার্ল্ডের শীর্ষ সন্ত্রাসী খ্যাত অনেকে জেল থেকে বেরিয়ে এসেছে। তারা রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে মরিয়া। আন্ডারওয়ার্ল্ডের এসব সন্ত্রাসীর ওপর পুলিশ নজরদারির কথা বললেও দেখা যাচ্ছে তারা আবারো অপরাধে জড়াচ্ছে। এসব বিষয়ে এখনই কঠোর ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
৫ আগস্টের পরাজিত শক্তি বরাবরই দেখাতে চাচ্ছে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ বিরাজ করছে। অন্তর্বর্তী সরকারের কোনো ক্ষেত্রেই নিয়ন্ত্রণ নেই। এ লক্ষ্যে তারা নানা ষড়যন্ত্র, চক্রান্তের জাল বিস্তার করছে। ঘটাচ্ছে নাশকতা। অপপ্রচারও চালিয়ে যাচ্ছে। রাজধানীর অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধিতে তাদের হাত আছে কি-না খতিয়ে দেখা দরকার।
পরিকল্পিতভাবে দেশকে অস্থিতিশীল করার যেসব অপতৎপরতা চালানো হয়েছিল সেগুলো সরকার সাফল্যের সাথে মোকাবেলা করেছে। রাজধানীর সাম্প্রতিক অপরাধপ্রবণতা রোধে এখন দরকার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সক্রিয় ভূমিকা। এটি যত দ্রুত করা যাবে ততই মঙ্গল। ১৫ বছরের স্বৈরাচারী শাসনের মতো শ্বাসরোধকর পরিস্থিতি মানুষ আর দেখতে চায় না। জনগণ এখন চায় শান্তি ও স্বস্তিÍ।


আরো সংবাদ



premium cement