২২ অক্টোবর ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩০, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬
`
দারিদ্র্যসীমার নিচে বিপুল সংখ্যক মানুষ

সামাজিক কর্মসূচি জোরদার করুন

-

পতিত শেখ হাসিনার আমলে গত দেড় দশকে দেশে অভূত উন্নয়ন হয়েছে, এমন একটি বয়ান প্রতিষ্ঠার চেষ্টা ছিল সরকারের শীর্ষমহল থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ে সব খানে। সে জন্য সদ্য ক্ষমতাচ্যুত মাফিয়া সরকার এই কথাও বলত যে, ‘আগে উন্নয়ন, পরে গণতন্ত্র’। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে, পতিত স্বৈরাচার উন্নয়নের যে গল্প দেশবাসীকে শুনিয়েছে; প্রকৃত বাস্তবতায় তা ছিল সর্বৈব মিথ্যা। তা না হলে দেশে কেন এত বিপুল সংখ্যক মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করবেন? উন্নয়নের গল্প শোনানো হয়েছে মূলত ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করতে।
আমাদের দেশে দারিদ্র্যবিমোচনে সরকারের নেয়া সামাজিক কর্মসূচি যে তেমন কার্যকর প্রভাব ফেলতে পারেনি তার প্রমাণ মেলে জাতিসঙ্ঘ উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত সর্বশেষ প্রতিবেদনে। তাতে দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে চার কোটি ১৭ লাখ মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের অবস্থা গুরুতর।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর ২০২২ সালের তথ্য, দেশের ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন। তাদের মধ্যে অতি দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছেন ৫ দশমিক ৬ শতাংশ মানুষ। সর্বশেষ জনশুমারি অনুসারে, দেশে বর্তমানে জনসংখ্যা আছে ১৬ কোটি ৯৮ লাখ ২৮ হাজার। সে হিসাবে, দেশে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা তিন কোটি ১৭ লাখ ৫৭ হাজার। বিশ্বব্যাংকের ২০১৯ সালের প্রকাশিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশে তখন দারিদ্র্যসীমার নিচে অর্থাৎ অতি গরিব মানুষ ছিলেন দুই কোটি ৪৩ লাখ।
‘বৈশ্বিক বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক-২০২৪ : সঙ্ঘাতের মধ্যে দারিদ্র্য’ শিরোনামে গত বৃহস্পতিবার ইউএনডিপির প্রকাশিত প্রতিবেদনের সূচক অনুযায়ী, বাংলাদেশে দারিদ্র্যে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রাখছে মানুষের জীবনযাত্রার মান (৪৫ দশমিক ১ শতাংশ), শিক্ষা (৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ) ও স্বাস্থ্য (১৭ দশমিক ৩ শতাংশ)। এ প্রতিবেদন তৈরি করতে ২০২২-২৩ বছর পর্যন্ত এক বছরের বেশি সময়ের তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এখানে মানুষের পর্যাপ্ত আবাসন, পয়োনিষ্কাশন, বিদ্যুৎ, ভোজ্যতেল ও পুষ্টির মতো অতি প্রয়োজনীয় সেবাগুলো পাওয়ায় কেমন ঘাটতি রয়েছে, তা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। শিশুরা কী হারে স্কুলে উপস্থিত হচ্ছে, তা-ও এখানে বিবেচনায় এসেছে।
উল্লিখিত প্রতিবেদনে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য পরিস্থিতি বুঝতে বিশ্বের ১১২টি দেশের ৬৩০ কোটি মানুষের ওপর গবেষণা করা হয়। সূচক অনুযায়ী, বিশ্বের ১১০ কোটি মানুষ চরম দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছেন। তাদের প্রায় অর্ধেক সঙ্ঘাতকবলিত দেশের বাসিন্দা। চরম দারিদ্র্যে থাকা জনগোষ্ঠীর ৮৩ শতাংশের বেশি বসবাস করেন আফ্রিকা ও দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। দক্ষিণ এশিয়ায় ২৭ কোটি ২০ লাখ দরিদ্র মানুষ এমন পরিবারে আছেন, যে পরিবারের অন্তত একজন অপুষ্টিতে ভুগছেন।
ইউএনডিপির এ সমীক্ষার মাধ্যমে আমাদের দারিদ্র্য পরিস্থিতি বৈশ্বিক তুলনায় কী অবস্থায় আছে, তার একটি চিত্র পাওয়া গেল। গত কয়েক বছরে দেশে ডলার সঙ্কট এবং নানা ধরনের আর্থিক সমস্যায় দারিদ্র্য পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। নানা সূচকে তা সমীক্ষার তথ্য-উপাত্ত থেকে বোঝা যায়। এখান থেকে বাংলাদেশের পরিস্থিতি অনুযায়ী কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের সুযোগ তৈরি হয়েছে। ইউএনডিপির এই প্রতিবেদন আমলে নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার সমাজের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি আরো জোরদার করে কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের পদক্ষেপ নিতে পারবে বলে আমাদের বিশ্বাস।


আরো সংবাদ



premium cement
সংস্কার ও নির্বাচন সমান্তরালভাবে এগিয়ে নিতে হবে : ড. মঈন খান আড়াই শ’র বেশি ক্যাডেট এসআইকে অব্যাহতি পুঠিয়ায় আ’লীগকর্মীদের হামলায় বিএনপির ৪ কর্মী আহত লিড বাড়িয়ে ছুটছে দক্ষিণ আফ্রিকা নিবন্ধন ফিরে পেতে জামায়াতের আইনি লড়াইয়ের পথ খুললো ধীর গতিতে যমুনার নদী ভাঙন প্রকল্প, নদীগর্ভে ২ শতাধিক বাড়ি যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে ‘ইলেক্টোরাল কলেজ’ কিভাবে কাজ করে ব্যারিস্টার সুমনের ১০ দিনের রিমান্ড চায় পুলিশ ডুয়েটের নতুন ভিসি হলেন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বকেয়া মজুরির দাবিতে চাশ্রমিকদের অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি আওয়ামী লীগ কি সত্যিই আগরতলায় সমাবেশের প্রস্তুতি নিচ্ছে?

সকল