নিরাপত্তা-অর্থনৈতিক স্বার্থ আগে
- ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০০:০০
ভূরাজনৈতিক কারণে বাংলাদেশের বৈশ্বিক পর্যায়ে গুরুত্ব বেড়েছে। পতিত ফ্যাসিবাদী সরকার এটিকে শুধু ক্ষমতায় থাকার কাজে লাগিয়েছে। ফলে দেশের স্বার্থ চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান সম্পূর্ণ এক নতুন সুযোগ নিয়ে হাজির হয়েছে। এ পরিবর্তনের পুরো কৃতিত্ব দেশবাসীর। বিদেশী কোনো শক্তির সাহায্যের প্রয়োজন হয়নি। এর ফলে নতুন বাংলাদেশকে বিদেশী কোনো দেশকে দায় শোধ করার প্রয়োজন হচ্ছে না। এ অবস্থায় আমাদের কাছে এক অভূতপূর্ব সুযোগ এসেছে। একে কাজে লাগিয়ে সম্পূর্ণ নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়ে বাকি বিশ্বের সাথে সম্পর্ক গড়ে নিতে পারব।
যুক্তরাষ্ট্র বরাবর বাংলাদেশে গণতন্ত্র মানবাধিকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে। ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশটি কিছু সমর্থন দিয়েছে। তবে পূর্ণ সমর্থন দিয়ে হাসিনাবিরোধী লড়াইকে জোরদার করেনি। বাংলাদেশের জনমানুষের মনে এটি রেখাপাত করেছে। অন্য দিকে ভারত অবিবেচকের মতো একপাক্ষিকভাবে আওয়ামী লীগ সরকারকে সমর্থন করেছে। এ সম্পর্ক শুধু স্বৈরাচারী হাসিনার সাথে সীমাবদ্ধ থেকেছে। হাসিনা ভারতের প্রতিটি চাওয়া পূর্ণ করেছে। অন্য দিকে গুম খুনসহ গণতন্ত্র ও মানবতাবিরোধী যত অপরাধ করেছে সব উপেক্ষা করে হাসিনা শাসনকে সমর্থন ও শক্তি জুগিয়েছে ভারত।
চীন এ অঞ্চলে বিপুল অর্থনৈতিক শক্তি নিয়ে আবির্ভূত। ইতোমধ্যে বাংলাদেশের সাথে বড় ধরনের উন্নয়ন প্রকল্পে অংশীদার হয়েছে। দেশটির সাথে সম্পর্ক আমাদের অর্থনীতি ও নিরাপত্তায় অনুকূল। ভারত ও চীনের তুলনা করলে দু’টি সম্পর্কে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। ভারত আমাদের বন্ধু হওয়ার পাশাপাশি শত্রুতাও করতে পারে। বন্ধু হিসেবে ভারত আমাদের টেকসই গণতন্ত্র ও মানবাধিকার সমুন্নত করতে চাইলে ১৫ বছর একটি দানবীয় মাফিয়া শাসন জেঁকে বসতে পারত না। একইভাবে নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা, সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও ভুটান নেপালের সাথে সম্পর্ক তৈরিতে আমরা বাধার মুখে পড়তাম না। মোট কথা ভারত প্রতিবেশী হওয়ায় বাংলাদেশের নিরাপত্তা সঙ্কট সহজে তৈরি করত। অন্য দিকে চীনের পক্ষ থেকে সরাসরি এ ধরনের সঙ্কট সৃষ্টির সুযোগ কম। কিন্তু দেশটির বন্ধুত্ব আমাদের অর্থনীতি বিকাশে সহায়ক। ইতোমধ্যে ড. ইউনূসের আরমযানে সাড়া দিয়ে দেশটি সোলার প্যানেল শিল্প স্থাপনে উৎসাহ দেখিয়েছে। আন্দোলনে আহতদের সেবায় একটি টিম পাঠিয়েছে। বন্দর নির্মাণ, যোগাযোগ অবকাঠামো উন্নয়ন এবং বহুমুখী অর্থনীতি বাণিজ্য বৃদ্ধিতে চীনের সক্ষমতা রয়েছে। তিস্তা প্রকল্প বাস্তবায়ন করে দেশটি আমাদের পানি আগ্রাসন থেকে বাঁচতে সহযোগিতা করতে পারে। এতে অর্থনৈতিকভাবে আমরা লাভবান হবো; আবার নিরাপত্তা ঝুঁকি কমাবে।
পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে স্বাধীনতার পর থেকে সমস্যা চলছে। বাইরে থেকে উসকানি না পেলে পাহাড়ে শান্তি ফেরানো সহজ। এ ধরনের ভূরাজনৈতিক হুমকি আমাদের দেশের চারপাশ থেকে রয়েছে। এগুলোর মোকাবেলায় আমাদের যুক্তরাষ্ট্রের টেকসই সমর্থন করা দুরূহ বৈকি। চীনের সাথে সম্পর্কের গভীরতা বৃদ্ধি প্রতিবেশীর শত্রুতা মোকাবেলায় আমাদের জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে।
জুলাই বিপ্লব আমাদের পররাষ্ট্র সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন যাত্রার পথ সুগম করেছে। অন্তর্বর্তী সরকার একে পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে এক দিকে ঝুঁকে পড়া পররাষ্ট্রনীতিকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে এবং দেশের নিরাপত্তা উদ্বেগ দূর করবে। একই সাথে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ত্বরান্বিত করবে বলে সবার প্রত্যাশা।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা