২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ১৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

পেঁয়াজের দাম কমে আসবে

পেঁয়াজ
পেঁয়াজ - ছবি : সংগৃহীত

পেঁয়াজের কেজি যখন ১০০ টাকা ছুঁই ছুঁই করছে তখনও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় বলছে পণ্যটির আমদানি ও সরবরাহ বেড়েছে। তাই মূল্যও কমে আসবে। গত মাসে আরো একবার পেঁয়াজের দাম কমবে বলে একই ধরনের আশাবাদ ব্যক্ত করেছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি। পণ্যটির দাম কমেতো নাই, উপরন্তু বেড়ে গেছে।

গতকাল বাণিজ্য মন্ত্রণালয় জনসংযোগ কর্মকর্তা আবদুল লতিফ বকশি স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে আমদানি করা পেঁয়াজ দেশে পৌঁছাতে শুরু করেছে। দেশীয় পেঁয়াজের পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে। কৃষকরা বাজারে পেঁয়াজ বিক্রয় বৃদ্ধি করেছেন। ফলে পেঁয়াজের আমদানি ও সরবরাহ বেড়েছে। দেশে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি নেই। আমদানিকৃত পেঁয়াজ পুরোপুরি বাজারে এলে মূল্য আরো কমে আসবে।

বলা হচ্ছে, ক্রেতাদের সাশ্রয়ীমূল্যে পেঁয়াজ সরবরাহের উদ্দেশ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) দেশব্যাপী ট্রাক সেলের পাশাপাশি ই-কমার্সের মাধ্যমেও পেঁয়াজ বিক্রয় করছে। এতে ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। ক্রেতাদের চাহিদা পূরণে প্রতি কেজি ৩০ টাকা মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রয়ের পরিধি আরো বৃদ্ধি করা হচ্ছে।

চাহিদা মোতাবেক বাজারে পেঁয়াজের মজুদ, সরবরাহ ও মূল্য স্বাভাবিক রাখতে গত বছরের অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরসহ দেশব্যাপী স্থানীয় প্রশাসনের নেতৃত্বে বাজার অভিযান জোরদার করা হয়েছে। সরকার পেঁয়াজ আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করেছে। আমদানিকারকদের চাহিদা মোতাবেক সবধরনের সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ, পরিবহনসহ সব ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে কাজ করা হচ্ছে। সরকারের নানামুখী পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে বাজারে এর ইতিবাচক প্রভাব পড়েছে। বিভিন্ন দেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি অব্যাহত রয়েছে। অল্প সময়ের মধ্যে বিপুল পরিমাণ পেঁয়াজ দেশে পৌঁছাবে।

পেঁয়াজ নিয়ে আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। পেঁয়াজের অবৈধ মজুদ বা কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে মূল্যবৃদ্ধির চেষ্টা করা হলে সরকার প্রচলিত আইনে দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এর আগে গত মাসে পেঁয়াজ আমদানির ওপর ধার্যকৃত ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার করে নেয়া হয়। সে সময়ে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, পেঁয়াজ আংশিক আমদানিনির্ভর একটি নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। নিকট অতীতে পেঁয়াজের বাজার অস্থিতিশীল হয়েছে এবং ২০১৯-২০ অর্থবছরে এই সঙ্কটটি কঠিন আকার ধারণ করে। পেঁয়াজের মূল্য সাম্প্রতিক সময়ে অনেকটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ছাড়া, সম্প্রতি ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি নিষিদ্ধের কারণে বাজারে পেঁয়াজের মূল্য ঊর্ধ্বমুখী।

পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, দেশীয় পেঁয়াজ চাষিদের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ, পেঁয়াজ চাষে উৎসাহ প্রদান এবং আমদানির ওপর নির্ভরশীলতা হ্রাসের লক্ষ্যে পেঁয়াজ আমদানিতে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে পেঁয়াজ আমদানিতে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপ করা হয়। বর্তমানে সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় পেঁয়াজের অনুৎপাদনকালীন সময় (লিন সিজন) হিসেবে পরিচিত মার্চ, ২০২১ পর্যন্ত সময়ে পেঁয়াজের ওপর আরোপিত ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক প্রত্যাহারের করা হয়েছে।

কিন্তু এত কিছুর পরও এখন পেঁয়াজের বাজার অস্থির অবস্থায় রয়েছে। আর এর কারণ গত মাসের শুরুর দিকে কোনোরূপ ঘোষণা ছাড়াই পেঁয়াজ রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। আর এর ফলেই এক লাফে পণ্যটির দাম ৩৫ টাকা থেকে বেড়ে ৮০ টাকা ছাড়িয়ে যায়।


আরো সংবাদ



premium cement