২৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৯ আশ্বিন ১৪৩১, ২০ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরি
`

পোশাক শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত

সভায় অন্তর্বর্তী সরকারের চার উপদেষ্টা উপস্থিত ছিলেন - ছবি : সংগৃহীত

পোশাক শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার ও মালিকপক্ষ। ফলে অসন্তোষ বাদ দিয়ে শ্রমিকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা।

মঙ্গলবার (২৪ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে এ মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, পোশাক কারখানায় শ্রমিকদের ১৮ দফা দাবি নিয়ে শ্রমিক-মালিক ঐক্যমতে পৌঁছেছে।
তিনি বলেন, বিগত সরকারের আমলে শ্রমিকদের দাবিকে দমিয়ে রাখা হয়েছিল। এখন ধীরে ধীরে তাদের সব ন্যায্য দাবি পূরণ করা হবে।

মজুরি এবং বছর শেষে ১০ শতাংশ হারে ‘ইনক্রিমেন্ট’ বাড়ানোসহ ১৮টি দাবি নিয়ে প্রায় এক মাস ধরে আন্দোলন করছেন পোশাক খাতের শ্রমিকরা। তাদের আন্দোলনের জেরে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ রয়েছে অধিকাংশ পোশাক কারখানা। এতে ভাটা পড়েছে দেশের রফতানি আয়ে। অবশেষে শ্রমিকদের সেই ১৮ দফা দাবি মেনে নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার ও মালিকপক্ষ।

মঙ্গলবার সচিবালয়ে সম্প্রতি দেশে চলমান শ্রমিক অসন্তোষের প্রেক্ষিতে শ্রমিকপক্ষ এবং মালিকপক্ষের যৌথ বিবৃতি প্রদান অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো: জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী (অব.), শিল্প মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

এদিকে, তৈরি পোশাক শিল্পে অসন্তোষ বাদ দিয়ে শ্রমিকদের কাজে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। তারা বলেন, শ্রমিকদের দাবি মেনে নেয়া হয়েছে। তাদের কাজে ফেরার আহ্বান জানানো হচ্ছে।

এর আগে পোশাক শিল্পে সাম্প্রতিক অস্থিরতা নিরসনের লক্ষ্যে চারজন উপদেষ্টার সমন্বয়ে সভা করা হয়। পরে শ্রমিক নেতা ও পোশাক শিল্পের মালিকপক্ষের সাথে একাধিক বৈঠক করা হয়। ফলে শ্রমিকদের নিম্নবর্ণিত দাবির বিষয়গুলোতে ঐক্যমত প্রতিষ্ঠিত হয়। আলোচনার মাধ্যমে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো হলো-

শ্রমিক ও মালিক পক্ষের তিনজন করে প্রতিনিধির সমন্বয়ে গঠিত অতিরিক্ত সচিবের (শ্রম) নেতৃত্বে একটি কমিটি নিম্নতম মজুরির বিধি-বিধান পর্যালোচনা করে নিম্নতম মজুরি বোর্ড বরাবর একটি সুপারিশ দেবে। অক্টোবর মাসের মধ্যে সব কারখানায় সরকারঘোষিত নিম্নতম মজুরি বাস্তবায়ন করতে হবে।

শ্রমিকের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬ (সংশোধিত ২০১৮) পুনরায় সংশোধনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে। সকল স্টেকহোল্ডারদের সাথে আলোচনা করে ডিসেম্বরের মধ্যে সংশোধন কার্যক্রম সম্পন্ন করা হবে।

শ্রম আইন অনুযায়ী শ্রমিকের সার্ভিস বেনিফিট দেয়া হবে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ শ্রম আইনের ২৭ ধারাসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হবে। আগামী অক্টোবরের মধ্যে শ্রমিকের সকল বকেয়া মজুরি বিনা ব্যর্থতায় দিতে হবে। অন্যথায় শ্রম আইন অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

বিজিএমইএভুক্ত সকল কারখানায় শ্রমিকের বিদ্যমান হাজিরা বোনাস হিসেবে অতিরিক্ত ২২৫ টাকা ও রাত ৮টার পর বিদ্যমান টিফিন বিলের সাথে ১০ টাকা এবং বিদ্যমান নাইট বিলের সাথে ১০ টাকা বাড়ানো হবে।

কন্ট্রিবিউটরি প্রভিডেন্ট ফান্ডের বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরের মাধ্যমে শ্রমিক ও মালিক উভয়পক্ষের সাথে আলোচনা করে বাংলাদেশের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপট সম্পন্ন অন্যান্য দেশের উত্তম চর্চার আদলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। নিম্নতম মজুরি পুনঃনির্ধারণ কমিটি বর্তমান মূল্যস্ফীতি বিবেচনা করে শ্রম আইনের সাথে সামঞ্জস্য রেখে করণীয় বিষয়ে নভেম্বরের মধ্যে একটি সুপারিশ প্রদান করবে।


আরো সংবাদ



premium cement