২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

শেখ হাসিনার সরকারের সঙ্গে কাজ করবে ভারত : মোদি

পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বৈঠক - ছবি : বাসস

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নতুন মেয়াদে বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে ভারতের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।
বাংলাদেশের সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন দিল্লিতে বৃহস্পতিবার সকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলে নরেন্দ্র মোদি বলেন, বিগত কয়েক বছর থেকে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে নিযুক্ত হওয়ার ড. মোমেনকে অভিনন্দন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং প্রথম বিদেশ সফরের জন্য ভারতকে বেছে নেয়ার প্রশংসা করেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের সাম্প্রতিক অগ্রগতির বিষয় অবহিত করেন।
আবদুল মোমেন আগামীকাল অনুষ্ঠিতব্য ভারত-বাংলাদেশ জয়েন্ট কনসালটেটিভ কমিশনের (জেসিসি) ৫ম বৈঠকে যোগ দিতে গতরাতে নয়াদিল্লী পৌঁছেছেন।

এ সফরে তিনি উচ্চ পর্যায়ের এক প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
জেসিসি বৈঠকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল মোমেন ও ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ নিজ নিজ দেশের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেবেন। এরআগে আগামীকাল সকালে ড. মোমেন সুষমা স্বরাজের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এই সফরে দুদেশের মধ্যে দুর্নীতির তদন্ত, টেলিভিশন সম্প্রচার ও ওষুধ স্থাপনাসহ ৫টি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে একথ জানা যায়।
এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল ঢাকায় বাসসকে বলেছেন, রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ ভারতের কাছে আরো সহায়তা চাইবে।

সরকারি কর্মসূচি ছাড়াও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী নয়াদিল্লীতে ভারতের সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন।
সূত্র : বাসস

শেখ হাসিনা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী নেতা : জোলি
ইউএনএইচসিআর-এর সফররত বিশেষ দূত এঞ্জেলিনা জোলি বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গাকে বাংলাদেশে আশ্রয় দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভূয়সী প্রশংসা করে বলেছেন, শেখ হাসিনা বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপনকারী নেতা।

জাতিসংঘের বিশেষ দূত বুধবার সন্ধ্যায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎকালে এ মন্তব্য করেন। সাক্ষাৎ শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।
এঞ্জেলিনা জোলি বলেন, এ মুহূর্তে বিশ্বে শেখ হাসিনার মতো নেতা খুব কমই রয়েছে।
জাতিসংঘ দূত বলেন, বিপুলসংখ্যক রোহিঙ্গা বাংলাদেশের ওপর বিশাল বোঝা সৃষ্টি করেছে। আশ্রয় শিবিরগুলোতে এতো বিপুল সংখ্যক মানুষের দেখভাল করা খুবই কঠিন কাজ।

এ প্রসঙ্গে তিনি আশ্বাস দেন যে, জাতিসংঘ, ইউএনসিএইচআর ও বিশ্ব ব্যাংক বাংলাদেশের বোঝা লাঘবে একযোগ কাজ করবে। এঞ্জেলিনা জোলি বর্তমানে কক্সবাজারে অবস্থানরত মিয়ানমারের নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে একটি অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টির ওপর জোর দেন।
তিনি বিশেষ করে রোহিঙ্গা শিশুদের ভবিষ্যতের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, বাংলাদেশ তাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও অন্যান্য ইস্যুতে সহযোগিতার চেষ্টা করার সত্ত্বেও তাদের ভবিষ্যৎ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে।
জোলি উল্লেখ করেন যে, তিনি মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গা নারীদের ওপর নির্যাতন ও তাদের হত্যার সাম্প্রতিক ঘটনা সম্পর্কে শুনেছেন।
সাক্ষাৎকালে প্রধানমন্ত্রী জাতিসঙ্ঘ বিশেষ দূতকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, রোহিঙ্গা সংকট অবশ্যই সমাধান করতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমার বাংলাদেশের নিকট প্রতিবেশী এবং তাদের নাগরিকদের প্রত্যাবাসনে দেশটির সঙ্গে একটি চুক্তি ও স্বাক্ষরিত হয়েছে।
তবে শেখ হাসিনা সেই চুক্তি বাস্তবায়নে বিলম্বে হতাশা প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে প্রায় ১১ লাখ রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে এবং ইতোমধ্যে আশ্রয় শিবিরগুলোতে এ পর্যন্ত ৪০ হাজার মতো নতুন শিশুর জন্ম হয়েছে।
রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে তাঁর সরকারের গৃহীত উদ্যোগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক লাখের বেশি শরণার্থী সেখানে অপেক্ষাকৃত উন্নত পরিবেশে সাময়িক আশ্রয় পাবে।

এ প্রসঙ্গে তিনি ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের এক কোটির বেশি লোক পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে আশ্রয় নেয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতার বিবরণ দেন।

শেখ হাসিনা ১৯৭১ সালে তাঁর মাসহ তিনি ও বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যদের গৃহবন্দী থাকার এবং ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুর নৃশংস হত্যাকান্ডের পর ৬ বছর ধরে তাঁর নির্বাসনে থাকার মুহূর্তগুলোর বর্ণনা দেন।
জাতিসংঘের বিশেষ দূত এঞ্জেলিনা জোলি প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সেই বেদনাময় কাহিনী শুনে দুঃখ প্রকাশ করেন।
প্রধানমন্ত্রীর ভগ্নিপুত্র রেদোয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি ও প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব নজিবুর রহমান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।


আরো সংবাদ



premium cement