ব্রাজিলের বাংলাদেশ দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন

ব্রাজিলের রাজধানী ব্রাসিলিয়াতে গতকাল মঙ্গলবার দক্ষিণ আমেরিকায় বাংলাদেশের একমাত্র দূতাবাসে ‘ই-পাসপোর্ট’ কার্যক্রমের উদ্বোধন করা হয়েছে।

দূতাবাসে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন ব্রাসিলিয়াতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা। বিশেষ অতিথি ছিলেন- স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের যুগ্ম-সচিব নাসরিন জাহান এবং ই-পাসপোর্ট ও স্বয়ংক্রিয় বর্ডার নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের অতিরিক্ত প্রকল্প পরিচালক কর্নেল মো: আনোয়ার-উল-আলম। এছাড়া ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের সাথে সম্পৃক্ত ঢাকা থেকে ব্রাজিল সফরে যাওয়া প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার, সেদেশে কর্মরত দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ ও ব্রাসিলিয়ায় বসবাসরত বাংলাদেশ কমিউনিটির সদস্যবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

তথ্য অধিদফতরের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, অনুষ্ঠানে কর্নেল মো: আনোয়ার-উল-আলম ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম ও প্রকল্প সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করেন এবং ‘ই-পাসপোর্ট’ আবেদনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে উপস্থিত বাংলাদেশীদের বিস্তারিত ব্যাখ্যা উপস্থাপন করেন।

উদ্বোধনের আগে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদফতরের টেকনিক্যাল টিম দূতাবাসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করেন।

যুগ্ম-সচিব নাসরিন জাহান তার বক্তব্যে সঠিক তথ্যসমৃদ্ধ পাসপোর্ট ইস্যুর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করেন এবং এ বিষয়ে প্রবাসী বাংলাদেশীদের সহযোগিতা কামনা করেন।

ব্রাসিলিয়াতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত সাদিয়া ফয়জুননেসা ২০২৪ -এর জুলাই-আগস্ট ছাত্রজনতার গণঅভ্যুত্থানে নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন এবং গৌরবান্বিত মুক্তিযুদ্ধের বীর মুক্তিযোদ্ধাদের শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন।

তিনি গণঅভ্যুত্থানে আহত ছাত্রজনতার দ্রুত সুস্থতা কামনা করেন। রাষ্ট্রদূত ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম উদ্বোধনের এই দিনটিকে দক্ষিণ আমেরিকায় বসবাসরত বাংলাদেশীদের জন্য আনন্দের ও তাৎপর্যপূর্ণ দিন হিসেবে উল্লেখ করেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও কর্মের মাধ্যমে বাংলাদেশের সুনাম ও সম্মান বৃদ্ধির জন্য তিনি আহ্বান জানান।

বাংলাদেশ ও বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাসসমূহে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম চালু হওয়ার ফলে দক্ষিণ আমেরিকার ব্রাজিল, আর্জেন্টিনা, চিলি, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে, বলিভিয়া ও ভেনেজুয়েলায় বসবাসরত কয়েক হাজার প্রবাসী বাংলাদেশীর জন্য ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট সংক্রান্ত প্রক্রিয়াসমূহ সহজতর ও নিরাপদ হবে।

রাষ্ট্রদূত বলেন, ই-পাসপোর্ট প্রক্রিয়ায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহৃত হওয়ায় এর বিশ্বাসযোগ্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা বহুগুণে বৃদ্ধি পাবে এবং বিশ্বের অনেক দেশ বাংলাদেশের সাথে ভিসা অব্যাহতি চুক্তি স্বাক্ষরে আগ্রহী হবে, যা বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের পাসপোর্টের মান ও মর্যাদা বৃদ্ধি করবে। তিনি বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাসিলিয়ায় ই-পাসপোর্ট কার্যক্রম বাস্তবায়নে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ ও পাসপোর্ট অধিদফতরের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

এই সেবা কার্যক্রম চালু করার ফলে এখন থেকে দক্ষিণ আমেরিকার উল্লিখিত দেশসমূহে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীরা দূতাবাসে এসে ই-পাসপোর্ট সেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এছাড়াও দূতাবাস বিভিন্ন শহরে কনস্যুলার পরিষেবার মাধ্যমে ই-পাসপোর্টর আবেদন গ্রহণ করতে পারবেন। আবেদনকারীরা পাঁচ বছর বা ১০ বছর মেয়াদি পাসপোর্টের জন্য আবেদন করতে পারবেন। রাষ্ট্রদূত বাংলাদেশ দূতাবাস, ব্রাসিলিয়াতে ই-পাসপোর্ট কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে আবেদনকারীদের ই-পাসপোর্ট এনরোলমেন্ট স্লিপ হস্তান্তর করেন।
সূত্র : বাসস