১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

ফুলের ঘ্রাণ পেতে চাই ফুলের সান্নিধ্য

-

বাংলায় প্রবাদ আছে- ‘সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ’। সৎ সঙ্গের মাধ্যমে স্বর্গ তথা জান্নাত লাভ হয়। আর অসৎ সঙ্গের প্রভাবে অনেকের জীবন মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়ে নষ্ট হয়ে যায়। একজন নষ্ট মানুষের দরুন শুধু একটি পরিবার নয়, সমাজ ও রাষ্ট্রও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সূরা তাওবার ১১৯ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন- ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সৎ লোকের সঙ্গী হও। আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সৎ ব্যক্তিদের সাহচর্যে থাকার নির্দেশ দিয়েছেন। সৎ লোক কারা? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে হয় না। কষ্ট করে খুঁজতে হয় না। কারণ আমাদের চলাফেরার সময় নানা রকম ব্যক্তির সাথে ওঠাবসা করতে হয়। সমাজে বাস করতে হলে সঙ্ঘবদ্ধভাবে থাকতে হলে মানুষের সাথে মিশতে হয় এবং মিশতে হবেই। একটি সমাজের সব মানুষ যেমন খারাপ হয় না, তেমনি প্রত্যেক লোকই ভালো হয় না। কেউ সত্য ও ন্যায়ের পথে চলে, কেউ প্রবৃত্তির তাড়নায় অসৎ পথ অবলম্বন করে। আমাদের ভেতরে অনেক ভালো মানুষ থাকে যারা সহজেই প্রভাবিত হয়। পাশাপাশি দু’জন লোক থাকলে একজন আরেকজনের দ্বারা প্রভাবিত হবে, এটিই স্বাভাবিক। আমরা যখন আতরের দোকানে যাই, আতর কেনার জন্য হোক বা অন্য কোনো মাকসাদে। সেখানে কিন্তু আতরের ঘ্রাণ অবশ্যই পাব। এই ঘ্রাণ পাওয়া আমার ইচ্ছের বাইরে। অনুরূপভাবে আমরা যদি কামারের দোকানে যাই তাহলে যে কাজে যাবো সেটির পাশাপাশি তাপ পেতেই হবে। এই সুঘ্রাণ বা তাপ আমরা না চাইলেও পেতে হবে। কারণ আমি এরকম পরিবেশে গেছি।
আমরা যদি মাদরাসার নূরানী পরিবেশে বা ভালো পরিবেশে থাকি তাহলে পরিবেশই আমাকে নামাজ, কুরআন তিলাওয়াত করা সহজ করে দেয়। এসব কিছু পরিবেশগত কারণে। আল্লামা তকি উসমানি দা. বা. বলেন, মানুষের এমন পরিবেশে থাকা চাই যেখানে নামাজের গুরুত্ব দেয়া হয়। তাহলে দুর্বল আমলদার ব্যক্তিদের জন্য ইবাদত করা সহজ হবে।
ভালো মানুষের সহবত আর মন্দ লোকের সহবতের চমৎকার দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হয়েছে। হজরত আবু বুরদা, তিনি তার বাবা থেকে বর্ণনা করেন যে, রাসূল সা: বলেন, ‘সৎ বন্ধু আর অসৎ বন্ধুর উপমা হলো- আতর বিক্রেতা ও কামারের হাঁপরের মতো। হয়তো আতর কিনবেন অথবা আতরের সুঘ্রাণ পাবেন। আর অপর দিকে কামারের হাঁপর তোমার বাড়ি-ঘর জ্বালিয়ে দেবে, তোমার কাপড় পুড়িয়ে দেবে। অথবা অন্তত এক প্রকার গন্ধ পাবেন।’ (বুখারি-২১০১)
একজন ভালো বন্ধু জীবন সঠিকভাবে চালানোর জন্য খুবই দরকার। বন্ধু হবে দ্বীনের জন্য, দ্বীন চর্চার জন্য একে অপরকে মুহাব্বত করবে। দ্বীনের কাজ করার জন্য একে অপরের বন্ধু হবে। যেমনটি পরিস্ফুটিত হয়েছে হাদিস শরিফে। হজরত আবু উমামা রা: রাসূল সা: থেকে বর্ণনা করেন- তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর জন্য অপর ভাইকে মুহাব্বত করবে, আল্লাহর জন্যই ঘৃণা করবে, এসব থেকে আল্লাহর জন্যই বিরত থাকবে, তাহলে সে ব্যক্তি তার ঈমান পূর্ণ করে ফেলল।’ (আবু দাউদ-৪৬৮১)
বন্ধুত্বের চমৎকার এক দৃষ্টান্ত আল্লাহ তায়ালা স্বয়ং কুরআনে বর্ণনা করেছেন। আসহাবে কাহাফের ঘটনা নামেই প্রসিদ্ধ। অতীতকালে কিছু যুবক জালিম শাসক, মূর্তিপূজক, দাকিয়ানুসের করতল থেকে ঈমান ও সততা রক্ষার জন্য দলবদ্ধ হয়ে গুহায় আশ্রয় নেয়। যাদের উদ্দেশ্য ছিল আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন। দলবদ্ধভাবে পালনের এ প্রচেষ্টা আল্লাহর বড় পছন্দ হয়েছে, এজন্য তাদের পুরো ঘটনা কুরআনের সূরা কাহাফে বর্ণনা করা হয়েছে।
লেখক : শিক্ষক, উম্মুল কোরা মাদরাসা, মোহাম্মাদবাগ, রায়েরবাগ, ঢাকা


আরো সংবাদ



premium cement
আবু সাঈদ হত্যা মামলার আসামিদের গ্রেফতারের দাবি এক দিনে দেড় হাজার মার্কিনির সাজা মাফ করলেন বাইডেন ‘দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কোনো বিকল্প নেই’ পাটখাতে সংকট সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে : পাট উপদেষ্টা তিউনিসিয়ায় নৌকাডুবি : ৩ দিন সাগরে ভেসে ছিল শিশুটি বিএসএমএমইউ’র ভিসিকে অবরুদ্ধ করে স্নাতকোত্তর কোর্সে ঢোকার চেষ্টা ১৩ চিকিৎসকের অস্ট্রেলিয়ায় সড়ক দুর্ঘটনায় বাংলাদেশী শিক্ষক নিহত ডিজিটাল যুগে ইসলামিক শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা ও চ্যালেঞ্জ থার্টি ফার্স্ট নাইটে আতশবাজি ও ফানুস নিষিদ্ধ রিজার্ভ বেড়ে এক হাজার ৯০০ কোটির ঘরে এবার শীত কম হবে, নাকি বেশি

সকল