রমজান ইসালে সওয়াবের মৌসুম
- শরিফ আহমাদ
- ০২ এপ্রিল ২০২৪, ০০:০৫
রমজান রহমত বরকত আর মাগফিরাতের মহিমায় সমুজ্জ্বল। রমজানে প্রত্যেকটি আমলের প্রতিদান বৃদ্ধি করা হয়। এ জন্য জীবিত আত্মীয়স্বজনের কর্তব্য হলো মৃতদের উদ্দেশে বিভিন্ন আমলের মাধ্যমে ঈসালে সওয়াব করা। এর ফলে আল্লাহ পাক তাদের গুনাহ মাফ করে দেবেন। মর্যাদা উঁচু করে দেবেন এবং মাটির বাড়ি শান্তি-সুখের সৌরভে ভরে তুলবেন। এ সংক্রান্ত কয়েকটি বিষয় উল্লেখ করা হলো:
ঈসালে সাওয়াবের গুরুত্ব : ঈসালে সাওয়াব কুরআন-হাদিস থেকে প্রমাণিত। এর দ্বারা কবরবাসীর হক আদায় করা যায়। ঈসালে সাওয়াব দ্বারা আমলকারীর সাওয়াব কমে না; বরং আল্লাহ পাক নিজ অনুগ্রহে আমলকারী ও কবরবাসীদের সবাইকেই পরিপূর্ণ সাওয়াব দান করেন। রমজানে কবরের আজাব বন্ধ থাকে এই ধারণা থেকে ঈসালে সাওয়াব বা কবর জিয়ারত করা থেকে দূরে থাকা অনুচিত। কেননা, রমজানে সবার কবরের আজাব মাফ হওয়ার বিষয়ে কুরআন-হাদিসের কোনো স্পষ্ট বক্তব্য নেই। তবে রোজা অবস্থায় ইন্তেকাল হওয়া সৌভাগ্যের আলামত। হজরত হুজাইফা রা: থেকে বর্ণিত- রাসূল সা: ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশে একদিন রোজা রাখে এবং রোজা হয় তার জীবনের শেষ আমল (অর্থাৎ রোজাদার অবস্থায় তার ইন্তেকাল হয়) সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।’ (মুসনাদে আহমাদ-২৩৩২৪, মাজমাউজ জাওয়ায়েদ, হাদিস-১১৯৩৫)
ঈসালে সওয়াবের পদ্ধতি : দান-সদকার মাধ্যমে ঈসালে সাওয়াব করা উত্তম। এটি অনেক ফজিলত ও সাওয়াবের কাজ। গরিব দুঃখীদের খাদ্যসামগ্রী কিনে দেয়া কিংবা রান্না করে খাওয়ানো জায়েজ। এর জন্য বিশেষ কোনো দিন তারিখ নির্ধারণ করা ঠিক নয়। হজরত আয়েশা রা: থেকে বর্ণিত-এক ব্যক্তি রাসূল সা:-এর কাছে এসে বলল, আমার আম্মা হঠাৎ ইন্তেকাল করেছেন (কিছু বলে যেতে পারেননি)। আমার ধারণা, তিনি যদি কিছু বলার সুযোগ পেতেন, তাহলে আমাকে তার নামে সদকা করতে বলতেন। তো আমি যদি তার নামে সদকা করি তাহলে কি এর সাওয়াব তিনি পাবেন? রাসূল সা: বললেন, হ্যাঁ। (বুখারি-১৩০৫, মুসলিম-২১৯৮) রমজানে আত্মীয়স্বজনদের দানের হাত প্রসারিত করার মাধ্যমে কবরবাসীদের আজাব মাফ হয়। হজরত ওকবা ইবনে আমির রা: থেকে বর্ণিত- নবী করিম সা: বর্ণনা করেন, দান-সদকা কবরের বাসিন্দাদের থেকে গরমের প্রচণ্ডতাকে দূর করে। আর মুমিন ব্যক্তি কিয়ামতের দিন স্বীয় দানের ছায়ায় আশ্রয় নেবে। (শুআবুল ঈমান, হাদিস-৩৩৪৭)
ঈসালে সওয়াবের আদব : যেকোনো নেককাজের ঈসালে সাওয়াব করা জায়েজ। এ ক্ষেত্রে আদব হলো প্রথমে কুরআনের ফজিলতপূর্ণ সূরাগুলো পাঠ করা। দরুদ শরিফ পাঠ করে এরপর দোয়া করা। আরো বিশেষ তিনটি ইবাদতের মাধ্যমে ঈসালে সাওয়াব করা যায়। ১. হজের মাধ্যমে ঈসালে সাওয়াব করা। বুরায়দা রা: থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি রাসূল সা:-এর কাছে উপস্থিত ছিলাম। এক মহিলা এসে জিজ্ঞেস করল আমার মা হজ না করে ইন্তেকাল করেছেন। আমি কি তার পক্ষ থেকে হজ করতে পারব? তিনি বললেন, হ্যাঁ। তুমি তার পক্ষ থেকে হজ করো। (মুসলিম-১১৪৯)
২. কোরবানির মাধ্যমে ঈসালে সাওয়াব করা। আবু সাঈদ খুদরি রা: থেকে বর্ণিত- রাসূল সা: একটি শিংবিশিষ্ট দুম্বা কোরবানি করেছেন এবং বলেছেন, এটি আমার পক্ষ থেকে এবং আমার যে সব উম্মত কোরবানি করতে অক্ষম তাদের পক্ষ থেকে। (মুসনাদে আহমাদ-১১০৫১)
৩. নফল বা কাজা রোজার মাধ্যমে ঈসালে সাওয়াব করা যায় : ইবনে আব্বাস রা: থেকে বর্ণিত- এক ব্যক্তি নবী করিম সা:-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, আমার মা মারা গেছেন কিন্তু তার জিম্মায় এক মাসের রোজা ছিল। আমি কি তার পক্ষ থেকে কাজা করতে পারব? তিনি বললেন, হ্যাঁ। আল্লাহর ঋণই অধিকতর পরিশোধযোগ্য। (বুখারি-১৯৫৩)
লেখক : প্রবন্ধকার
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা