ছোট ভাইকে বাঁচাতে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে প্রাণ গেল বড় ভাইয়ের
- তুহিন আহামেদ, আশুলিয়া (ঢাকা) সংবাদদাতা
- ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৭:১১
বেশ কিছুদিন নীরব থাকার পর আবারো শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় কিশোর গ্যাং সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এরই ধারাবাহিকতায় কিশোর গ্যাংয়ের সদস্যরা ছোট ভাইকে আটকে রেখেছে শুনে বড় ভাই তাকে ছাড়াতে যান। আর ছাড়াতে গিয়ে কিশোর গ্যাংয়ের হাতে প্রাণ দিত হলো বড় ভাইকে।
তবে ঘটনার সাথে জড়িত কাউকে এখন পর্যন্ত আটক করতে পারেনি পুলিশ।
শনিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক গিয়াস উদ্দিন বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে, শুক্রবার রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার ডেন্ডাবর কাঁঠালবাগান বালুর মাঠ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত সুলাইমান (১৮) নীলফামারীর ডিমলা থানার দক্ষিণ সুন্দরখাতা গ্রামের আব্দুল লতিফের ছেলে। তিনি আশুলিয়ার ডেন্ডাবর কাঁঠালবাগান কামালের ভাড়া বাসায় তার পরিবারের সাথে থেকে আব্দুল্লাহ আল রাহাত ফেব্রিক্স নামের একটি কারখানায় কাজ করতেন।
স্থানীয়রা জানায়, শুক্রবার বিকেলে কয়েকজন মিলে কাঁঠালবাগাম এলাকার বালুর মাঠে খেলা করছিল। সেখানে সেলিম নামেরও একজন ছিল। তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয় এবং একপর্যায়ে সেলিমকে মারধর করে আটকে রাখে কয়েকজন। বিষয়টি জানতে পেরে সেলিমের বড় ভাই সুলাইমান কয়েকজনকে সাথে নিয়ে সেখানে যান। এ সময় বাকবিতণ্ডার একপর্যায়ে উভয়পক্ষের মধ্যে মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে সুলাইমানকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে ফেলে রাখে। পরে তাকে উদ্ধার করে ধামরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের বাবা আব্দুল লতিফ বলেন, ‘সন্ধ্যা বেলা ছোট ছেলে সেলিমকে মারধর করেছে এলাকার কিশোর গ্যাং সদস্য আরিফ, রিয়ান, সজীব, জীবন, সুহান, রাজন, জিতু পারভেজ, ইয়াছিন, তামিম, কাউছার, আমিন ও অপূর্বসহ আরো বেশ কয়েজন। খবর পেয়ে বড় ছেলে সুলাইমান সেখানে যায়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে বড় ছেলে সুলাইমানের ওপরও হামলা চালায়। হামলায় সে মারা যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমার ছেলে বাসার পাশে একটি কারখানায় কাজ করতো। কোনো ধরনের আড্ডা ও গ্যাং-এর সাথে জড়িত ছিল না। তারা কোনো কারণ ছাড়াই সুলাইমানকে পিটিয়ে মেরেছে। তাদেরকে এখনো পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি।’
এলাকাবাসী অভিযোগ, বেশ কিছুদিন ধরে এলাকায় কিশোর গ্যাং ছিল না বললেই চলে। কিছু বেশ কিছুদিন ধরে আবার তাদের দৌরাত্ম্য বেড়েছে।
এসব নিয়ন্ত্রণের দাবি জানায় তারা।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) গিয়াস উদ্দিন জানান, হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
তিনি আরো জানান, জড়িতদের কয়েকজনের নাম পাওয়া গেছে এবং পরিচয় ও ঠিকানা যাচাই-বাছাই চলছে। খুব দ্রুতই তাদের গ্রেফতার করা হবে।
এছাড়া এ ঘটনায় হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা