১৯ জানুয়ারি ২০২৫, ০৫ মাঘ ১৪৩১, ১৮ রজব ১৪৪৬
`

বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস শিল্প সরিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে : বিকেএমইএ সভাপতি

বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস শিল্প সরিয়ে নিতে ষড়যন্ত্র হচ্ছে : বিকেএমইএ সভাপতি - নয়া দিগন্ত

দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে গার্মেন্টস শিল্প সরিয়ে নিতে চেষ্টা চালানো হচ্ছে। এমনটাই ইঙ্গিত দিয়েছেন বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

শনিবার নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সংবাদ সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।

বিকেএমইএর সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শ্রীলঙ্কায় যখন অস্থিতিশীল পরিস্থিতি তৈরি হলো তখন সেখান থেকে গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশে চলে আসে। বাংলাদেশে অস্থিরতা তৈরি করে কেউ তার দেশে হয়ত এটা নিয়ে যেত চাইছে। আমি দেশের নাম উল্লেখ করলাম না।

তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার ইন্ডিয়ার একটি পত্রিকায় এ ব্যাপারে নিউজ ছাপা হয়েছে। তাদের দেশে অনেক অর্ডার যাচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, তারা মরিয়া হয়ে চেষ্টা করছে। তাই আমাদের সতর্ক হতে হবে। বিভিন্ন এলাকায় গার্মেন্টসে অরাজকতা করা হচ্ছে। ওই সমস্ত এলাকার রাজনৈতিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দদের এই ক্রান্তিলগ্নে ভূমিকা পালন করতে হবে।

হাতেম বলেন, শ্রমিক ভাইদের বলব কারো উস্কানিতে পা দেবেন না। এর ফলে আপনারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন, দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে। যারা বিদেশীদের দ্বারা লালিত-পালিত হয়ে কাজ করছে তাদের বিরুদ্ধে সতর্ক থাকতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে নারায়ণগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মাসুদুজ্জামান বলেন, কেন্দ্র থেকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা বলছেন, কোনোভাবেই চাঁদাবাজি করা যাবে না, দখল করা যাবে না। তারা বহু চেষ্টা করছে। স্থানীয় নেতারা মঞ্চে উঠে বলছে, কোনোভাবে চাঁদা দেবেন না। আমাদের বলবেন, আমরা ব্যবস্থা নেব। এসব রাজনৈতিক বক্তব্য শেষ করেই মঞ্চ থেকে নেমেই ফোন করে বলেন, ভাই ঝুটটা দিলেন না? এমন শত শত ফোন আমি পেয়েছি।

তিনি বলেন, গত এক মাস যাবৎ চাঁদাবাজি, দখল, মামলা চলছে। আমরা ব্যাবসায়ীরা কখনো রাজনীতির সাথে জড়িত না। আমরা কখনো কখনো পরিস্থিতির শিকার। ব্যাবসায়ীরা স্বাধীনতার পর থেকে নির্যাতিত হওয়ার ভয়ে থাকি কিন্তু বলতে পারি না। দিন শেষে পরিবর্তন হলে আমাদের ওপর দিয়েই ঝড়-ঝাপটা যায়।

তিনি আরো বলেন, আপনারা জানেন গত কয়েক দিন কিভাবে চাঁদাবাজি হয়েছে। কিভাবে হুমকি-ধমকি দেয়া হচ্ছে। আমার চেম্বারও আক্রান্ত। দশ লাখ টাকার দাবি ছিল, তিন লাখ টাকায় মিটিয়েছি। সাত লাখ টাকার জন্য চাপ আছে। আমাদের প্রাণপ্রিয় প্রতিষ্ঠান বিকেএমইএ- ও চাঁদা দিয়েছে বাধ্য হয়ে। আমি বলতে চাই, টাকা ফেরত দিতে হবে। আমি নাম উল্লেখ করলাম না, সময় দিলাম। প্রয়োজনে শহীদ মিনারে গিয়ে লাল কার্ড দেখাবো, প্রয়োজনে শহর থেকে বের করে দেব। দলীয় প্রধানদের লিখিত অভিযোগ দেব।

তিনি বলেন, আমরা ব্যবসায়ী। আমরা ঝামেলামুক্ত ব্যাবসা করতে চাই। পরিস্থিতি যেহেতু স্বাভাবিক হচ্ছে না। আমার নিজেকেই নিজের রক্ষার জন্য সচেষ্ট হতে হবে। ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানে লাঠি রাখবেন। আমরা একসাথে এদের একত্রিত হয়ে প্রতিহত করবো। কোনো ব্যাবসায়ী কোনো ভুল অভিযোগ করবেন না। এটা কারো বিরুদ্ধে প্রমাণিত হলে চেম্বারের সদস্য পদ খারিজসহ আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে। পুলিশ ভাইদের বলতে চাই, একটু এক্টিভ হোন। আমরা সহায্যের হাত বাড়িয়ে দেব।

চেম্বার সভাপতি বলেন, শহরের ট্রাফিক ব্যাবস্থা ভেঙে পড়েছে। নারায়ণগঞ্জ শহরে চলা যাচ্ছে না। নারায়ণগঞ্জের মানুষের দাবি চেম্বার আর কোনোদিন রাজনৈতিক ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত হবে না। এটা ব্যবসায়ীদের কার্যক্রমের জন্যই ব্যবহৃত হবে।


আরো সংবাদ



premium cement