১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

বাংলাদেশের জনগণ কোনো বিদেশী প্রভূত্ব মেনে নিবে না : মির্জা আব্বাস

বক্তব্য রাখছেন মির্জা আব্বাস - ছবি : নয়া দিগন্ত

বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘বাংলাদেশের জনগণ কোনো বিদেশী প্রভূত্ব মেনে নিবে না। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্যে দেশপ্রেমিকদের শহীদ হতে প্রস্তুত থাকতে হবে।’

শনিবার (৬ জুলাই) বিকেলে মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে শহরের ল’ কলেজ মাঠে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা ১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতার জন্যে যুদ্ধ করেছি আর এখন সেই স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে যুদ্ধ করতে হবে। এ দেশকে স্বাধীন করতে ৩০ লাখ শহীদের রক্ত দিতে হয়েছে। এখন দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্যে ৬০ লাখ দেশপ্রেমিককে শহীদ হতে প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা এ দেশের স্বাধীনতা রক্ষার জন্যে শহীদ হবো। দেশকে দাসত্ববাদী-গোলামী সেবাদাস তাঁবেদারদের হাত থেকে মুক্ত করতে হবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘ভোটবিহীন এই দাসত্ববাদী সরকার বিনা অপরাধে এ দেশের ১৮ কোটি মানুষের প্রাণের নেত্রী, গণতন্ত্রের মা, সাবেক সফল প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে আটকে রেখেছে। তারা বিনা চিকিৎসায় তাকে হত্যা করতে চায়। তারা জানে বেগম খালেদা জিয়া মুক্ত থাকলে এই জালিম সরকার একতরফাভাবে লুটপাট, হত্যা-গুম, খুন, দুর্নীতি, অর্থ পাচার করতে পারবে না। বেগম খালেদা জিয়া ডাক দিলে এ দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে এই চোর সরকারের অপকর্মের প্রতিবাদ করবে। তাই বেগম খালেদা জিয়ার জনপ্রিয়তাকে ভয় পেয়ে তাকে বিনা অপরাধে বন্দী করে রেখেছে।’

‘বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে না পারলে এ দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, মানবাধিকার, গণতন্ত্র রক্ষা করা যাবে না। তাই জীবন দিলে হলেও আমরা বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো।’

বিএনপির সিনিয়র এ নেতা বলেন, ‘আপনারা যারা মুক্তিযুদ্ধের পরের প্রজন্ম বা মুক্তিযুদ্ধের সময় ছোট ছিলেন, তারা যুদ্ধ করতে পারেন নাই বলে আফসোস করেন। তাদের এবার একটা সুযোগ এসেছে, স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশ নিতে না পারলেও স্বাধীনতা রক্ষার যুদ্ধে অংশ নেয়ার সুযোগ।’

তিনি বলেন, ‘বিদেশের ইশারায় চলা এ অবৈধ প্রধানমন্ত্রী ও তার সরকার প্রভূদের স্বার্থরক্ষায় তৎপর। দেশের কোনো স্বার্থেরই তাদের কাছে মূল্য নেই। লুটপাট করে সব অর্থ পাচার করে কোষাগার খালি হয়ে গেছে তাই ধান্ধাবাজির সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালু করেছে।’

সরকারি চাকরিতে কোটাপ্রথা নিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রকৃত মুক্তিযোদ্ধাদের আরো সম্মান ও সুযোগ দেয়া হোক। কিন্তু মেধাশূন্যদের কোটায় চাকরি দেয়া হলে কি প্রশাসন চলবে? জাতি মেধাশূন্য হয়ে যাবে। ভুয়া মুক্তিযোদ্ধাদের সুযোগ দেয়া হচ্ছে।’

মির্জা আব্বাস বলেন, ‘বাংলাদেশে আর বাকশালী রাষ্ট্র কায়েম হবে না।’

তিনি দ্রুত বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে বলেন, ‘তাকে মুক্তি দিন, নয়তো গণআন্দোলনে আমরা তাকে মুক্ত করবো।’

সভাপতির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য ও মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি আফরোজা খানম রিতা বলেন, ‘রাষ্ট্রের মূল চারটি ভিত্তি এই সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। গণতন্ত্রের মা বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরে যাবো না। জীবন দিয়ে হলেও আমার বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করবো। জেল-জুলুম, হত্যা-গুম করে আর ভয় দেখিয়ে এবার দেশপ্রেমিক জনতাকে দমিয়ে রাখা যাবে না।’

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এস এ জিন্নাহ কবিরের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা বিভাগ) কাজী সায়্যেদুল আলম বাবুল, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজীর আহমেদ টিটো, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ।

আরো বক্তব্য রাখেন, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আজাদ হোসেন খান, সাংগঠনিক সম্পাদক আ. ফ. ম. নূরতাজ আলম বাহার, জেলা বিএনপির নেতা গোলাম কিবরিয়া সাঈদ, জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কাজী মোস্তাক আহমেদ দিপু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মো: জিন্নাহ খান জিন্না, জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক রেজাউর রহমান সজিব প্রমুখ।

এদিকে, দুপুর ১২ থেকেই বৃষ্টি উপেক্ষা করে জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দলে দলে সমাবেশস্থলে আসতে থাকেন। সভাবেশ শুরু হতেই ল’ কলেজের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। মাঠে জায়গা না হওয়াতে শত শত নেতা-কর্মী পাশের রাস্তায় ও বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নেন।


আরো সংবাদ



premium cement