হোসেনপুরে চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে মাঝারি ও ছোট গরু
- হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ১৫ জুন ২০২৪, ১১:৪৯, আপডেট: ১৫ জুন ২০২৪, ১১:৫০
কোরবানির ঈদের বাকি আর মাত্র এক দিন। শেষ দিকে এসে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে জমে উঠেছে পশুর হাট। লাখ লাখ ক্রেতা সমাগমে গরম হয়ে উঠেছে গ্রামীণ হাট-বাজারগুলো। চলছে হাঁকডাক, দরদামও। নতুন ট্রেন্ড হিসেবে যোগ হয়েছে সেলফি উৎসব। বড় গরুর আশপাশে ভিড় বেশি হলেও কেনার ক্ষেত্রে চাহিদা বেশি ছোট ও মাঝারি গরুর। এর জন্য গো-খাদ্য ও নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধিকেই মূলত দায়ী করছেন ক্রেতা-বিক্রেতা ও হাট ইজারাদাররা।
শনিবার কোরবানি ঈদ সামনে রেখে হোসেনপুরে উপজেলার সিদলা ইউনিয়নের পিতলগঞ্জ ও চরপুমদী বাজারে সকাল থেকেই জমে উঠেছে পশুর হাট।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন পশুর হাটে দেখা গেছে, ছোট-মাঝারি-বড় আকৃতির বাহারি গরু আসতে শুরু করেছে উপজেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে। পিতলগঞ্জ বাজার সাপ্তাহিক হাটের দিন হওয়ায় সকাল থেকেই গরুতে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে গেছে। ঈদ সন্নিকটে হওয়ায় গরু-ছাগলের সরবরাহ বেড়েছে উপজেলার অনন্যা হাটগুলোতেও।
এ দিকে, পশুর হাটগুলো ঘিরে নিরাপত্তাব্যবস্থা, নির্বিঘ্ন যাতায়াত ব্যবস্থা, জালনোট শনাক্তকরণ মেশিনসহ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ ও সংশ্লিষ্ট বাজার কর্তৃপক্ষ।
এ সময় ক্রেতা-বিক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, হোসেনপুর আদু মাষ্টারের বাজার, চরপুমদী বাজার শুরুর দিকে ক্রেতারা হাটে এসে ব্যাপক দামাদামি করলেও গরু না কিনে ফিরে গেছেন বেশি মানুষ। তবে ঈদ কাছাকাছি চলে আসায় এবং ঈদের আগে শেষ সাপ্তাহিক হাট হওয়ায় আজ পিতলগঞ্জ বাজারে বিক্রি বেড়েছে বহুগুণ। বাইরের বড় বড় ব্যবসায়ীরা না আসায় স্থানীয়রাই পশু কিনছেন বেশি। কিন্তু পশুর দাম বেশি বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা। এছাড়া বাজারে নানা আকারের গরু থাকলেও মাঝারি ও ছোট গরুর চাহিদা সবচেয়ে বেশি বলে জানান বিক্রেতারা।
গফরগাঁও থেকে চারটি গরু নিয়ে চরপুমদী বাজারের হাটে এসেছেন আব্দুল আলী।
তিনি বলেন, ‘মাঝারি আকারের তিনটি গরুই ভালো দামে বিক্রি হয়েছে। বড় গরুটি তুলনামূলক দাম কম বলায় এখনো বিক্রি হয়নি।
অন্য এক বিক্রেতা শমশের আলী গোবিন্দপুর থেকে দু’টি গরু নিয়ে হাটে এসেছেন। তিনি বলেন, হাটে আসা মাত্রই মাঝারি আকারের গরুটির প্রত্যাশিত দাম পেয়ে বিক্রি করে দিয়েছি। তবে বড় গরুটা এখনো বিক্রি করতে পারিনি। হাতেগোনা কিছু ক্রেতা বড় গরু কিনছেন। মানুষ এসে দামাদামি করছেন ঠিকই কিন্তু নিচ্ছেন মাঝারি গরু।’
এবার পশুর দাম অনেক বেশি বলে অভিযোগ করছেন ক্রেতারা।
হোসেনপুর উপজেলার জগদল গ্রামের বাসিন্দা রাসেল মিয়া বলেন, ‘দাম কমবে এই আশায় গত কয়েকদিন ধরে হাটে হাটে ঘুরলেও পশু কিনিনি। তবে দাম আরো বেড়ে যাচ্ছে। তাই সাধ্যের মধ্যেও একটি ছোট গরু কিনতে পারলাম।’
শুধু রাসেলই নয়, বেশিভাগ ক্রেতাই এমন অভিযোগ করছেন।
অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে আলামিন নামে এক গরু খামারি বলেন, ‘নিত্যপ্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম ও উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় গতবারের চেয়ে এবার গরুর দাম একটু বেশি। কিন্তু সাধ্যের মধ্যেই রয়েছে।’
উপজেলার হারেঞ্জা বাজার হাটের ইজারাদার মো: কামাল উদ্দিন বলেন, ‘ঈদের আগে আজ শেষ সাপ্তাহিক হাট হওয়ায় পিতলগঞ্জসহ বিভিন্ন বাজারে পশুর আমদানি অনেক বেশি। কিন্তু নানা সঙ্কটের কারণে বড় বড় ব্যবসায়ীরা এসব বাজারে আসেননি। ফলে স্থানীয় পর্যায়ের ক্রেতারাই শুধু পশু কিনছেন। এতে বেচাকেনা কম, তবে দামটা কিছুটা বেশি।’
এ দিকে, অসুস্থ ও অস্বাস্থ্যকর পন্থায় মোটাতাজা করা গরু বিক্রি রোধে তৎপরতা চালাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: উজ্জল হোসাইন বলেন, ‘আগে অসাধু খামারিরা ওষুধ সেবন করিয়ে অথবা ইনজেকশন দিয়ে গরুকে মোটাতাজা করলেও এখন সেই পদ্ধতি আর নেই। এছাড়া হরমোন প্রয়োগ থেকেও তারা ফিরে এসেছেন। খামারিরা বর্তমানে সঠিক নির্দেশনা পেয়ে প্রাকৃতিকভাবেই গরু হৃষ্টপুষ্ট করছেন। এতে অল্প খরচে বেশি লাভবান হচ্ছেন তারা।’
তিনি আরো বলেন, ‘তবুও কেউ যাতে অসুস্থ ও ক্ষতিকর গরু বিক্রি করতে না পারে সেজন্য উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতরের পক্ষ থেকে মেডিক্যাল টিম গঠনসহ নানা তৎপরতা চালানো হচ্ছে বাজারগুলোতে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা