নিজ জন্মস্থানে চালকবিহীন বিমানের আবিষ্কারক
- ফখর উদ্দিন ইমরান, কটিয়াদী (কিশোরগঞ্জ)
- ২৫ মে ২০২৪, ১৭:০৪
রাস্তার পাশে অপেক্ষমাণ শত শত মানুষ। ছেলে-বুড়ো সকলের অপেক্ষা গ্রামের গর্বিত সন্তান বিজ্ঞানী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. হুমায়ুন কবিরের জন্য। তিনি চালকবিহীন হেলিকপ্টারের আবিষ্কারক। ২০ বছর পর দেশের মাটিতে পা রেখেছেন আমেরিকার বোয়িং কোম্পানিতে কর্মরত পৃথিবীর ইতিহাসে বিখ্যাত চালকবিহীন বিমানের আবিষ্কারক ড. হুমায়ূন কবির। সাথে নিয়ে এসেছেন তার সহধর্মিণী ফরিদা কবিরকে।
শুক্রবার (২৪ মে) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে হেলিকপ্টারে করে নিজ জন্মভূমি কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়া উপজেলার চন্ডিপাশা বড় আজলদি গ্রামে এসে পৌঁছান তিনি। এর আগে, গত ২২ মে সুদূর আমেরিকা থেকে ঢাকায় আসেন এই আবিষ্কারক। দু’দিন ঢাকায় অবস্থান করার পর গতকাল হেলিকপ্টার যোগে নিজ জন্মস্থান কিশোরগঞ্জের বড় আজলদি গ্রামের তার নানার বাড়িতে আসেন এ খ্যাতনামা বিজ্ঞানী ও বীর মুক্তিযোদ্ধা। দীর্ঘদিন পর তার নানার বাড়িতে গেলে ওই গ্রামের সাধারণ মানুষসহ বিশিষ্ট ব্যক্তিরা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
এ সময় পাকুন্দিয়া উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রেণু, চন্ডিপাশা ইউনিয়নের বর্তমান চেয়ারম্যান মো: শামসুদ্দিনসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন।
তার নিজ জেলায় প্রথমে বরণ করেন বৃটিশ সরকারের ভাতাপ্রাপ্ত শতবর্ষী আব্দুল মান্নান। পরে তিনি এলাকার মানুষদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় যুক্ত হন।
মতবিনিময় সভায় এই বিজ্ঞানী বলেন,‘অনেক দিন পর আমার নিজ জেলায় আসতে পেরে নিজেকে সৌভাগ্যবান এবং আনন্দিত অনুভব করছি।’
মতবিনিময় সভায় শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আমি যদি চালকবিহীন বিমানের আবিষ্কারক হতে পারি, তাহলে ঠিক তেমনিভাবে তোমরাও ভবিষ্যতে এমন বিমান ও হেলিক্প্টারের আবিষ্কারক হতে পারবে। তবে তোমাদেরকে এখন থেকে মেধা মননশীল হয়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।
জানা যায়, এ খ্যাতনামা বিজ্ঞানী শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে পাকুন্দিয়া উপজেলার বড় আজলদী গ্রামে আসেন। সেখানে সকাল থেকে ভীড় করা উৎসুক জনতা তাকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। সর্বশেষ তিনি ২০০৪ সালে নিজ দেশে এসেছিলেন।
চন্ডিপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো: শামসুদ্দিন বলেন,‘বিজ্ঞানী হুমায়ুন কবির আমাদের শুধু কিশোরগঞ্জের গর্ব নয় তিনি সারা বাংলাদেশের গর্ব। তাকে দেখতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত।
বিখ্যাত চালকবিহীন বিমানের আবিষ্কারক আরো বলেন,‘দীর্ঘ ২০ বছর পর দেশে এসে মানুষের যে ভালবাসা পেয়িছি তা ভোলার মতো নয়। বস্তুত আমার এলাকার মানুষ আমাকে নিয়ে গর্ব করছেন সেটায় আমার পরম পাওয়া। আমি কিশোরগঞ্জের সার্কিট হাউজে সাত দিন অবস্থান করে নিজ এলাকা কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের নাগের গাঁও গ্রামে সবার সাথে মতবিনিময় করবো।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি তিনি আরো একটি বিশেষ ও আধুনিক হেলিকপ্টার আবিস্কার করেছেন। বাংলাদেশী এই বিশিষ্ট রকেট বিজ্ঞানী, উদ্ভাবক, অ্যারোস্পেস ইঞ্জিনিয়ারিং-এ পিএইচডি, অস্টিনের ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসে গত ২৬ বছর ধরে বোয়িং বিজ্ঞানী হিসেবে কাজ করছেন। ডক্টর কবিরকে মার্কিন সরকারের জন্য এই বিশেষ হেলিকপ্টারটি তৈরি করতে কয়েক শত সেরা এবং উজ্জ্বলতম মহাকাশ প্রকৌশলী সাহায্য করেছেন। এর আগে বীর মুক্তিযোদ্ধা বিজ্ঞানী হুমায়ুন কবির আবিষ্কার করেছেন ১৯৮৬ সালে রিমোট নিয়ন্ত্রিত এইচ-৫ হায়েন্স হেলিকপ্টার। বর্তমানে হুমায়ুন কবির যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত বোয়িং কোম্পানিতে ঊর্ধ্বতন বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত আছেন।