১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

আড়াইহাজারে ডাকাতি করতে গিয়ে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৪

আড়াইহাজারে ডাকাতি করতে গিয়ে গণধর্ষণ, গ্রেফতার ৪ - ছবি : নয়া দিগন্ত

ডাকাতি করতে গিয়ে কাঙ্খিত মালামাল ঘরে না থাকায় ক্ষোভের বশবতী হয়ে যুবতীকে ধর্ষণ করেছে ডাকাত দল। ১৫ মে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে চামুরকান্দী এলাকায় এ গণধর্ষণের ঘটনায় গ্রেফতার চারজনের জবানবন্দীর ভিত্তিতে এ কথা বলেন র‌্যাব ১১, আদমজী, নারায়ণগঞ্জের অধিনায়ক কর্নেল তানভীর মাহমুদ পাশা।

সোমবার (২০ মে) এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে সংবাদ মাধ্যমকে এ কথা জানান তিনি। এর আগে রোববার পর্যন্ত এ ঘটনার সাথে জড়িত চারজনকে আড়াইহাজার থানার পৃথক পৃথক স্থান থেকে গ্রেফতার ও তাদের জিম্মায় থাকা ডাকাতির কাজে ব্যবহৃত একটি দেশীয় তৈরী ওয়ান সুটার গান, একটি শাবল, একটি দা, দুটি রামদা এবং একটি সিএনজি উদ্ধার করে করে র‌্যাব-১১।

গ্রেফতাররা হলেন আড়াইহাজার এলাকার দেলোয়ার হোসেনের ছেলে আব্দুল্লাহ (২৪), আ: রহিমের ছেলে চানমিয়া (২৮), মফিজউদ্দিনের ছেলে আয়নাল (২৫) এবং নরসিংদীর মাধাবদী এলাকার মরহুম মুনসুর আলীর ছেলে মো: মতিন।

র‌্যাব জানায়, তারা দিনের বেলায় সিএনজি চালায়, বাস চালায় এবং বাসের হেলপারি করে থাকে। এসব কাজের আড়ালে রাতের বেলা বিভিন্ন বাড়িতে ডাকাতি করে থাকে। গ্রেফতার আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে গত এক বছর ধরে তারা আড়াইহাজারের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতির ঘটনা ঘটিয়ে আসছে। তাদের নামে আড়াইহাজার, মাধবদী এবং চট্টগ্রাম থানায় একাধিক ডাকাতি, অস্ত্র ও নাশকতার মামলা রয়েছে।

র‌্যাব আরো জানায়, গত ১৫ মে আড়াইটায় নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকায় ১৭ বছরের এক কিশোরীকে ঘর থেকে তুলে নিয়ে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় ভিকটিম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আড়াইহাজার থানায় অজ্ঞাতনামা পাঁচ-সাতজনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা করেন। গণধর্ষণের ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হলে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়। বর্ণিত গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িতদের আইনের আওতায় নিয়ে আসতে গোয়েন্দা নজরদারী বৃদ্ধি করে র‌্যাব।

এরই ধারাবাহিকতায় র‌্যাব সদর দফতরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-১১-এর একটি অভিযানিক দল নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে চাঞ্চল্যকর গণধর্ষণের মূলপরিকল্পনাকারসহ চারজনকে গ্রেফতার করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃতরা ওই গণধর্ষণের সাথে তাদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদান করে।

র‌্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃতরা সংঘবদ্ধ একটি ডাকাত চক্র এবং চক্রের মূলহোতা গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ। এই চক্রে ১০-১২ জন সদস্য রয়েছে। গ্রেফতার আব্দুল্লাহ’র নের্তৃত্বে তারা এক-দুই বছর ধরে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন এলাকায় ডাকাতি করে আসছিল বলে জানা যায়। গ্রেফতারকৃতরা গত ১৫ মে ২০২৪ তারিখ রাত আনুমানিক আড়াইটার দিকে ডাকাতির উদ্দেশ্যে ভিকটিমের বাড়িতে যায়। সে সময় গ্রেফতারকৃত আব্দুল্লাহ ও গ্রেফতারকৃত মতিন ঘরের জানালা ভেঙে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে। এ সময় ভিকটিম ও তার মায়ের ঘুম ভেঙে গেলে তারা ভয়ে চিৎকার করলে গ্রেফতাররা তাদেরকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে রাখে।

পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতরা ঘরের দরজা খুলে দিলে গ্রেফতারকৃত চান মিয়া ও গ্রেফতারকৃত আয়নালসহ অন্য সহযোগীরা দেশিয় অস্ত্রসহ ঘরে প্রবেশ করে ভয়ভীতি দেখিয়ে ভিকটিমের মাসহ ঘরে উপস্থিত সকলের হাত, পা ও মুখ বেধে ফেলে। পরবর্তীতে গ্রেফতারকৃতরা ঘরের ভেতর মূল্যবান জিনিসপত্র না পেয়ে ক্ষোভে গ্রেফতাররা ভিকটিমকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাদের বাড়ির পাশে একটি ফাঁকা ঘরে নিয়ে যায়। সেখানে গ্রেফতাররা ভিকটিমের মুখ ওড়না দিয়ে পেচিয়ে জোরপূর্বক পালাক্রমে গণধর্ষণ করে ভিকটিমকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় রেখে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। এ সময় গ্রেফতাররা এই ঘটনা সম্পর্কে কাউকে জানালে ভিকটিম ও তার পরিবারকে হত্যা করবে বলে হুমকি প্রদান করে। পরবর্তীতে ভিকটিম ওই ঘটনায় মামলা করলে গ্রেফতাররা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর গ্রেফতার এড়াতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন স্থানে আত্মগোপন করে।


আরো সংবাদ



premium cement