কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর উদ্ধার যুবকের লাশ উদ্ধার
- কিশোরগঞ্জ প্রতিনিধি
- ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ২২:২০
কিশোরগঞ্জে নিখোঁজের ২৫ দিন পর মুখলেছ উদ্দিন ভূঁইয়া (২৫) নামে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে স্থানীয়দের সহযোগিতায় নরসুন্দা নদী থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
মুখলেছ উদ্দিন ভূঁইয়া জেলার মিঠামইন উপজেলার কেওয়ারজোড় ইউনিয়নের ফুলপুর গ্রামের কৃষক মকবুল হোসেনের ছেলে। তিনি ইউনিয়নে ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। তিনি কিশোরগঞ্জের গুরুদয়াল সরকারি কলেজ থেকে সম্প্রতি বাংলায় স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন এবং জেলা জজ আদালতে এক আইনজীবীর সহকারী ছিলেন।
পুলিশ জানায়, মুখলেছ ও তার ছেলে বেলার বন্ধু মিজান শেখ (২৮) গত ২৯ মার্চ রমজানে এক সাথে পাগলা মসজিদে তারাবি নামাজ পড়েন। এরপর মুখলেছ তার বাসায় বন্ধুকে নিয়ে রাতের খাবার খান। মধ্যরাতে কৌশলে মুখলেছকে নিয়ে শহরে ঘুরতে বের হয় মিজান। পরে কিশোরগঞ্জ শহরের গুরুদয়াল কলেজ-সংলগ্ন মুক্ত মঞ্চের কাছে নিয়ে যান তাকে। সেখানে অপেক্ষমান সাঙ্গোপাঙ্গদের নিয়ে গলা কেটে জবাই করা হয় মুখলেছকে। হত্যাকারীরা তার লাশ সিমেন্টের ব্লকে বেঁধে নরসুন্দা নদীতে ডুবিয়ে দেয়।
জানা গেছে, মুখলেছ নিখোঁজের পর গ্রেফতার প্রধান সন্দেহভাজন তারই বন্ধু মিজান শেখের স্বীকারোক্তির ভিত্তিতে সোমবার থেকে নরসুন্দা নদীতে লাশ উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল পুলিশ। প্রথম দিনে তারা নদীতে লাশ পায়নি। মঙ্গলবার বেলা ৩টার দিকে মুখলেছের লুঙ্গি, লঙ্গিতে বাঁধা ভাড়া বাসার চাবি ও একটি ছুরি উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর অভিযান বেগবান করা হলে ঘণ্টাখানিক পর মুখলেছের গলিত দেহ উদ্ধার করা হয়।
সূত্রে জানা গেছে, মুখলেছ শহরের হারুয়া বউবাজার এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। অন্যদিকে মিজান শেখ মিঠামইনের ফুলপুর গ্রামের সেফুল শেখের ছেলে। এই ঘটনায় পুলিশ মিজান শেখের বাবাসহ তার ছোট দু’ভাই মারজান শেখ (২৬) ও রায়হান শেখকেও (২১) আটক করে। তাদের হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তগঞ্জ থেকে আটক হয়।
পারিবারিক ও জমি-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
লাশ উদ্ধারের পর বিকেলে নিহত মুখলেছের ভাই মিজানুর রহমান অভিযোগ করেন, ভাইকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা হয়েছে।
কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা জানান, নিখোঁজের পর ৩১ মার্চ একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন মিজানুর রহমান। এরপর নিখোঁজ যুবকের পরিবারের পক্ষ থেকে ওইদিন রাতের হারুয়া এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সরবরাহ করা হয়। ওই সিসিটিভি ফুটেজে মুখলেছের সাথে মিজান শেখকেও দেখা যায়। বিষয়টি আমলে নিয়ে তদন্ত জোরদার করে পুলিশ। এর ধারাবাহিকতায় থানায় একটি অপহরণ ও গুমের মামলা দায়ের করা হয়। শনিবার হবিগঞ্জ জেলার শায়েস্তাগঞ্জ থেকে মিজান শেখকে গ্রেফতার করে পুলিশ। সাথে আটক করা হয় তার বাবা ও ছোট দুই ভাইকে।
মিজান শেখের বরাত দিয়ে পুলিশ জানায়, পরিকল্পিতভাবে তাকে হত্যা করা হয়েছে। মুখলেছকে গলা কেটে শরীর থেকে মাথা আলাদা করার পর পেট ছিঁড়ে ফেলা হয় যেন লাশ ভেসে না ওঠে। তাছাড়া লাশের সাথে ইট-সিমেন্টের সিসি ব্লক বেঁধে দেয়া হয়।
কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, গ্রেফতার মিজান হত্যাকাণ্ডে জড়িত বেশ কয়েকজনের নাম বলেছেন। তবে পুলিশ এগুলো যাচাই-বাছাই ও তদন্ত করে দেখছে। মিজান শেখের পরিবারের অন্য আটকদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা