২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ন ১৪৩০, ২০ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

খামারে মারা গেল ৩০০ টন মাছ

খামারে মারা গেল ৩০০ টন মাছ - ছবি : নয়া দিগন্ত

আশুলিয়ায় একটি মাছের খামারে বিপুল সংখ্যক মাছের মৃত্যু বা মড়ক দেখা দিয়েছে। এতে ওই খামারের প্রায় তিন শ' টন মাছ মারা গেছে। এই ঘটনায় খামারের মালিকের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন খামার মালিক। তবে খামার মালিকের অভিযোগ দুর্বৃত্তরা পানিতে কীটনাশক প্রয়োগ করে মাছগুলো মেরে ফেলেছে।

সাভার উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা বলেছেন, পানিতে এ্যামোনিয়া গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় মাছের মৃত্যু হয়েছে। শুক্রবার সকালে আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার দেওয়ান ইদ্রিস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজ সংলগ্ন প্রাণ প্রকৃতি এগ্রো নামক খামারে মাছের মৃত্যুর এ ঘটনা ঘটে।

সরেজমিনে শুক্রবার সকালে ওই খামারে গিয়ে দেখা যায়, প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে জালের বেড়া দিয়ে মাছের খামার করেছেন আশুলিয়ার জিরাবো এলাকার সাইফুল ইসলাম হিকু, তার ভাই আবু সাঈদ বেপারী, শরিফুল ইসলাম আলমাস, আরিফুল ইসলাম ও শাহিদুল ইসলাম। পাশেই রয়েছে আমজাদ হোসেন মাষ্টার, পারভেজ ও জিল্লুর রহমান দিলারের খামার।

কিন্তু ওই খামারে হঠাৎ রুই, কাতল, তেলাপিয়া, সিলভার কার্প, বাটা, টেংড়া, পুটিসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মারা যেতে শুরু করে। সেগুলো মরে পানিতে ভেসে ওঠে ও চারপাশে মৃত মাছের দুর্গন্ধ ছড়ায়।
ক্ষতিগ্রস্ত মৎস্য খামারি শহিদুল ইসলাম জানান, তারা পাঁচ ভাই যৌথভাবে প্রায় ৪০ বিঘা জমিতে দীর্ঘ ২২ বছর ধরে মাছের চাষ করছেন। বৃহস্পতিবার ভোরে খামারে মাছের খাবার দিতে গিয়ে দেখেন মাছগুলো মরে পানিতে ভেসে উঠেছে। পরে শুক্রবার সকাল থেকে খামারের সমস্ত মাছ মরে ভেসে উঠে। এতে তাদের কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ।

শহিদুলের বড় ভাই শরিফুল ইসলাম আলমাস জানান, বিগত বছরগুলোতে এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি। খামারে ১০ বছরের বেশি বয়সের বড় মাছ ছিল। তার দাবি, কেউ পূর্বশত্রুতার জেরে কিংবা ঈর্ষান্বিত হয়ে কীটনাশক প্রয়োগ করে মাছগুলো মেরে ফেলেছে।

তিনি আরো জানান, তারা সাভার উপজেলা মৎস্য অধিদপ্তরের নথিভুক্ত চাষী। ২০১৬ সালে সাভার উপজেলার সেরা মৎস্য উদ্যোক্তা হিসেবেও নির্বাচিত হয়েছেন।

সাভার উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা হারুন-অর-রশিদ বলেন, বিষয়টি জানার পর ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছে। তারা ওই খামারের পানি পরীক্ষা করে দেখেছেন। পরীক্ষায় পানিতে রাসায়নিক পদার্থের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে পাওয়া গেছে। এছাড়া পানিতে এ্যামোনিয়া গ্যাসের পরিমাণ যা থাকার কথা তার থেকে ১০ গুণ বেশি পাওয়া গেছে। যা মাছ চাষের উপযোগী নয়। সাধারণত দেখা যায়, এ্যামোনিয়া গ্যাসের পরিমাণ বেড়ে গেলে একটি মাছ আড়াই পাক ঘূর্ণন দিয়েই মারা যায়।

কীটনাশক প্রয়োগে মাছ মারা গেছে কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, তাদের পরীক্ষায় কীটনাশক প্রয়োগে মাছ মরে যাওয়ার বিষয় স্পষ্ট নয়।


আরো সংবাদ



premium cement