পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে হুমকির মুখে মাওয়া ১ ও ২ নম্বর ফেরীঘাট
- মুন্সীগঞ্জ সংবাদদাতা
- ০৮ আগস্ট ২০২০, ১৯:২৮
মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় শিমুলিয়া ফেরীঘাট এলাকায় পদ্মার ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। গত এক সপ্তাহের অব্যাহত ভাঙনে ও তীব্র স্রোতে শিমুলিয়ার ২টি ফেরী ঘাট ও কুমারভোগে পদ্মাসেতুর ইয়ার্ডে দ্বিতীয়বারের মতো ব্যাপক এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। বাঁশ, জিউ ব্যাগ ফেলে ভাঙন রোধের চেষ্টা করা হচ্ছে।
একদিকে ভাঙন রোধের শত শ্রমিক রাত-দিন চেষ্টা চালাচ্ছে অপরদিকে ভাঙন অব্যাহত রয়েছে। এমতাবস্থায় দ্রুত স্থায়ীভাবে নদী শাসন না করলে আগামীতে পদ্মা সেতুর পার্শ্ববর্তী এলাকা ও নদী ভাঙনের হুমকিতে থাকা ১ নম্বর ও ২ নম্বর ফেরী ঘাটসহ বিআইডব্লিউটিসি ও পদ্মা সেতু প্রকল্পের স্থাপনা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবার আশঙ্কা রয়েছে। এতে দক্ষিণাঞ্চলের যাতায়াতে ব্যস্ততম এ নৌ-রুট বন্ধ হয়ে যেতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
জানা গেছে, প্রমোত্ত পদ্মার করাল গ্রাসে শিমুলিয়ায় কাঠালবাড়ী-শিমুলিয়া নৌরুটের ৩ নম্বর ফেরীঘাট ৩১ জুলাই নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। গত ৪ আগস্ট আবারো আকস্মিক ভাংগনে ৪ নম্বর ফেরীঘাট ও কুমারভোগের পদ্মাসেতুর ডকইয়ার্ডও প্রায় ১০০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। এতে পদ্মাসেতুর মালামালের ব্যাপক ক্ষতি হয়। পদ্মার অব্যাহত ভাঙনে ফেরীঘাট এলাকায় পদ্মানদী প্রায় ৬শ’ ফুট ভিতরে ঢুকে পড়েছে।
শুক্রবার সরেজমিনে দেখা যায় ২ নম্বর ঘাট থেকে ২ শত মিটার দূরে নদী ১ হাজার মিটার ভিতরে ঢুকে পড়েছে। যে কোনো সময় নদীর তীব্র স্রোতে সোজা প্রবাহিত হয়ে বিসৃত এলাকা বিলীন হবে। এর আগে ২০১৫ সালের এ সময় পদ্মার ব্যাপক ভাঙনে কুমারভোগের ডকইয়ার্ডে আকস্মিক ব্যাপক ভাঙন দেখা দিয়েছিল।
সংইশ্লষ্টদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, পদ্মার প্রচণ্ড ঘূর্ণিস্রোতের তাণ্ডবে পদ্মাসেতু নির্মাণ কাজের মালামাল উঠা-নামার জন্য নির্মিত ৪টি জেটির মধ্যে ৩টি জেটি নদী গর্ভে ভেঙে পড়েছে। প্রবল ঘূর্ণিতে ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে মিক্সার প্লান এলাকাটি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়। নদী প্রায় ৩০/৪০ মিটার ভিতরে ঢুকে পড়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআইডব্লিউটিসির এক প্রকৌশলী বলেন, সর্বনাশা পদ্মার চরিত্র ভিন্ন প্রকৃতির। নদীর স্রোত বাধা পেলে পার্শ্ববর্তী এলাকায় তীব্র ভাঙন দেখা দেয়। বিচিত্র চরিত্রের পদ্মা নদীর পাড় নীচ থেকে তলদেশের মাটি মূহুর্তের মধ্যে ৫০ মিটার পর্যন্ত সরে যায় এবং ধসে পড়ে। ফেরী ঘাট এলাকা থেকে প্রায় ১৫শ’ মিটার দূরে নদীর মাঝে নির্মিত বিদ্যুতের প্রায় ১৬টি পিলার স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এতে স্রোত বাধা পেয়ে ভিতরে ঢুকে পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। গত বৃহস্পতিবার বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান ও এর প্রধান প্রকৌশলী ভাঙন এলাকা পরিদর্শন করেছেন।