২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৩ শাবান ১৪৪৬
`

পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৪.৬৩ পাওয়া হাবিবের দায়িত্ব নিলেন কৃষকলীগ নেতা

পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৪.৬৩ পাওয়া হাবিবের দায়িত্ব নিলেন কৃষকলীগ নেতা -

রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার হিমায়েতখালি গ্রামের হাবিবুর রহমান। অভাব ও প্রতিবন্ধতাকে হার মানিয়ে দাখিল (এসএসসি সমমান) পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে জিপিএ-৪.৬৩ (এ গ্রেড) পেয়েছে।

এদিকে হাবিবের এমন সাফল্য দেখে বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় কৃষকলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিকী হক আগামী দুই বছর হাবিবের পড়ালেখার যাবতীয় খরচ বহন করবেন বলে জানিয়েছেন।

বাবা আব্দুস সামাদ, মা হেলেনা খাতুনের আপ্রাণ চেষ্টা, শিক্ষক-সহপাঠীদের অনুপ্রেরণায় এমন সাফল্য বলছে হাবিব। যদিও জিপিএ-৫ না পাওয়াতে খুশি হতে পারেনি সে।

দরিদ্র কৃষক পরিবারের সন্তান হাবিবুর রহমান। পরিবারের সামান্য জমিতে চাষাবাদ ও অন্যের জমিতে কাজ করে চলে তাদের সংসার। চার ভাই বোনের মধ্যে তৃতীয় হাবিব। জন্ম থেকেই হাবিবের দুই হাত নেই। ছোট বেলায় বাবা-মা, চাচা ও পরিবারের অন্যান্যদের অনুপ্রেরণায় পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করে হাবিব। কালুখালী উপজেলার মৃগী ইউনিয়নের হিমায়েতখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পা দিয়ে লিখে প্রাথমিক সমাপনীতে ৪.৬৭ পেয়েছিল সে।

পরে বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরের পাংশা উপজেলার পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদরাসা থেকে জেডিসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ৪.৬১ পেয়ে পাস করে। পরবর্তীতে একই মাদরাসা থেকে ২০২০ সালে দাখিল (এসএসসি সমমান) পরীক্ষায় নিয়ে পায় জিপিএ-৪.৬৩। তবে প্রত্যাশিত ফলাফল না হওয়ায় খুশি হতে পারেনি হাবিব। কিন্তু হাবিবের এই সাফল্যে খুশি শিক্ষক, অভিভাবক ও সহপাঠীরা।

হাবিবের মা হেলেনা খাতুন বলেন, অনেক কষ্ট করে ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শেখানোর চেষ্টা করছি। হাবিবের দুই হাত নেই। কিন্তু পড়াশোনা করার অনেক ইচ্ছা তার। তাই ছোটবেলা থেকে পা দিয়ে লেখার অভ্যাস করিয়েছেন পরিবারের সবাই। ছোট থেকেই ভালো রেজাল্ট করে আসছে সে। কিন্তু এখন তো অনেক খরচ। আর পারছি না। হাবিবের পড়ালেখায় কেউ একটু সহযোগিতা করলে ওর আলেম হওয়ার ইচ্ছা পূরণ হত।

হাবিবের চাচা মো: আব্দুল খালেক জানান, তার ভাই আব্দুস সামাদ বৃদ্ধ। চোখে কম দেখেন। নিজের বলতে সামন্য একটু জমি আছে, যা চাষাবাদ ও অন্যের জমিতে শ্রম দিয়ে তার সংসার চালান। সংসারে অভাব অনটন লেগেই থাকে। তারপরও তিনি তার তিন মেয়ে ও এক প্রতিবন্ধী ছেলেকে লেখাপড়া শেখানোর চেষ্টা করেছেন। হাবিবের জন্ম থেকে দুই হাত নেই। কিন্তু ছোট বেলা থেকে হাবিব মেধাবী। পিএসসি, জেডিসি, সবশেষ দাখিল পরীক্ষায় পা দিয়ে লিখে ভালো রেজাল্ট করেছে। এখন তার উচ্চশিক্ষা লাভে প্রধান বাধা অভাব।

তিনি বলেন, এতদিন তিনি তার নিজের পড়াশুনার পাশাপাশি হাবিবকে সহযোগিতা করেছেন। এখন মাস্টার্স শেষ করে চাকরির জন্য চেষ্টা করছেন। তাই আগের মতো আর সহযোগিতা করতে পারছেন না। হাবিবের ইচ্ছা সে বড় আলেম হবে।

হাবিবুর রহমান বলেন, দাখিল পরীক্ষায় সে যে রেজাল্ট করেছে তাতে খুশি না। তার আশা ছিল জিপিএ-৫ প্রাপ্তি। মূলত অভাবই তার লেখাপড়ার উপর প্রভাবে ফেলেছে। তারপরও সে পড়াশুনা চালিয়ে যেতে চায়। কিন্তু পড়ালেখায় যে খরচ তাতে কী হবে বলতে পারছে না। তবে সে বড় আলেম হতে চায়।

সে বলেন, পরীক্ষার সময় পা দিয়ে লিখতে একটু সমস্যা হত। ওই সময় সংসাদের অভাব ও লেখাপড়া করে বড় কিছু হবে ভেবে পরীক্ষা দিত।

পুঁইজোর সিদ্দিকিয়া ফাজিল (ডিগ্রী) মাদরাসার অধ্যক্ষ সাঈদ আহমেদ বলেন, এ বছর তার মাদরাসায় দাখিল পরীক্ষায় পাসের হার শতভাগ। এরমধ্যে হাবিব ছেলেটার দুই হাত না থাকার পরও পা দিয়ে লিখে ভালো রেজাল্ট করেছে। অতীতে মাদরাসা থেকে ওকে সহযোগিতা করা হয়েছে এবং ভবিষ্যতেও করা হবে।


আরো সংবাদ



premium cement
ন্যাটো সদস্যপদ দিলে প্রেসিডেন্ট পদ থেকে পদত্যাগে রাজি জেলেনস্কি গফরগাঁওয়ে রাস্তা পারাপারের সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধা নিহত বাস্তবতা বুঝতে বললেন কোচ বাটলার কটিয়াদীরের স্বাধীন মিয়া দেশ সেরা দ্রুততম মানব সিলেটে পৃথক বজ্রপাতে নিহত ২ ববি থেকে মুছে গেলো শেখ পরিবারের সব নাম উজিরপুরে ডা: শাহজাহান স্মৃতি ক্রিকেট টুর্নামেন্টের ফাইনাল অনুষ্ঠিত জাতিসঙ্ঘ মহাসচিব মার্চের মাঝামাঝি ঢাকা সফর করবেন অভয়নগরে হাসপাতালে এক দিনের ব্যবধানে দুই প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ সারাদেশে সহকারী জজ পরীক্ষায় প্রথম হলেন ববির সাদিয়া রমজানে নিত্য পণ্যের দাম বাড়বে না : অর্থ উপদেষ্টা

সকল