এসপি হারুনকে প্রত্যাহারের পর নেতাকর্মীদের নিয়ে শামীম ওসমানের রুদ্ধদ্বার বৈঠক
- নারায়ণগঞ্জ সংবাদদাতা
- ০৫ নভেম্বর ২০১৯, ১২:১৯
সাংগঠনিক ও নানা ইস্যুতে বিভিন্ন সময় দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে শামীম ওসমানের রুদ্ধদ্বার বৈঠক হলেও পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদের বদলীর আদেশের পরের দিন সোমবার সন্ধায় বৈঠক ছিল সবার কাছে আলোচনার বিষয়। তবে এ বৈঠকে শামীম ওসমান পুলিশ সুপার হারুন অর রশিদ সম্পর্কে নেতিবাচক কিছু না বললেও নেতাকর্মীদের কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছেন।
সোমবার সন্ধ্যায় নগরীর চাষাঢ়ার রাইফেলস ক্লাবে দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আলোচনায় বসেন সংসদ সদস্য শামীম ওসমান। প্রায় দেড় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠক শেষে একে একে নেতাকর্মীরা বেরিয়ে আসেন। ওই আলোচনায় গণমাধ্যমকর্মীদের প্রবেশ নিষেধ রাখা হয়।
বৈঠক উপস্থিত নেতাকর্মীদের সূত্র মতে, সাম্প্রতিক বিভিন্ন ইস্যুকে কেন্দ্র করে জরুরী ভিত্তিতে নেতাকর্মীদের বৈঠকে ডাকেন আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সংসদ সদস্য একেএম শামীম ওসমান। পরে তাদের নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেন। এ সময় নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দেন শামীম ওসমান।
বৈঠকের বিষয়ে জানতে চাইলে ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল বলেন, এটা নিজেদের মধ্যে বৈঠক। নিজেদের মধ্যেই আলাপ-আলোচনা হয়েছে। এর বেশি কিছু নয়। বৈঠকে উপস্থিত নেতাকর্মীরা শামীম ওসমানের কাছে অভিযোগ করেন, গত ১১ মাস ধরে এসপি হারুনের কারণে তারা বেশ চাপে ছিলেন। কোন কারণ ছাড়াই তাদের নামে মামলা দেয়া হয়েছে। কোন কাজে নেতাকর্মীরা থানায় যেতে পারেননি। থানার ওসিরাও নেতাকর্মীদের সাথে খারাপ আচরণ করেছেন। ক্ষমতায় থাকার পরও নেতাকর্মীরা নির্যাতনের শিকার হয়েছে।
পরে শামীম ওসমান নেতাকর্মীদের বলেন, এসপি-ডিসি কোনো জেলাতেই স্থায়ী নয়। তারা চাকরি করতে আসেন, আবার চাকরির প্রয়োজনে চলে যান। সরকার তাকে (এসপি হারুন) মনে করেছিল নারায়ণগঞ্জ দিতে, দিয়েছে। আবার বদলি করতে চেয়েছে, করেছে। এটা নিয়ে মাতামাতির কিছু নেই। পাশাপাশি এসপি হারুনকে নিয়ে ফেসবুকে কিংবা গণমাধ্যমে কথা বলতে নিষেধ করেন শামীম ওসমান।
তিনি আরো বলেন, দেশে বড় ধরণের ষড়যন্ত্র চলছে। আমাদের সজাগ থাকতে হবে। পুলিশের কিছু কারণে আমাদের নেতাকর্মীরা হয়রানির শিকার হয়েছে। সেটা নিয়ে এখনই ক্ষোভ জানাতে গেলে আমাদের দলের সুনাম নষ্ট হবে। আওয়ামী লীগকে দুর্বল করতে পর্দার আড়ালে ষড়যন্ত্রকারীরা লুকিয়ে আছে বলেও শামীম ওসমান মন্তব্য করেন বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক সূত্র জানায়।
বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি চন্দন শীল, এড. ওয়াজেদ আলী খোকন, ফতুল্লা থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এম সাইফউল্লাহ বাদল, সাধারণ সম্পাদক শওকত আলী, বন্দর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এমএ রশীদ, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াছিন মিয়া, মহানগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক শাহ্ নিজাম, সাংগঠনিক সম্পাদক জাকিরুল আলম হেলাল, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মীর সোহেল আলী, নাসিক ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নাজমুল আলম সজল, নাসিক ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আব্দুল করিম বাবু, নাসিক ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মতিউর রহমান মতি, নাসিক ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শাহজালাল বাদল, মহানগর মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইসরাত জাহান স্মৃতি, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি এহসানুল হাসান নিপু, সাফায়েত আলম সানি, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আজিজুর রহমান আজিজ, সাধারণ সম্পাদক আশরাফুল ইসমাঈল রাফেল প্রধান, মহানগর ছাত্রলীগের সভাপতি হাবিবুর রহমান রিয়াদ, সাধারণ সম্পাদক হাসনাত রহমান বিন্দু প্রমুখ।