দগ্ধ শিশু গৃহপরিচারিকা মিনার শরীরে পঁচন ধরেছে
- মো: হুমায়ূন কবীর, নাগরপুর (টাঙ্গাইল)
- ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:৫৩, আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৯, ১৫:৫৭
টাঙ্গাইল জেলার নাগরপুর উপজেলায় অগ্নিদগ্ধ শিশু গৃহপরিচারিকা মিনার (১২) শরীরে পঁচন ধরেছে। শিশুটি উপজেলার নন্দপাড়া গ্রামের কাজী আব্দুল হকের মেয়ে।
জানা যায়, গত বছরের ১২ই ডিসেম্বর টাঙ্গাইল সদর থানা পাড়ায় প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলামের বাসায় গৃহপরিচারিকা হিসেবে কাজের সময় গ্যাসের চুলায় চা বানাতে গিয়ে মিনা অগ্নিদগ্ধ হয়। কিন্তু শফিকুল ইসলাম ও তার স্ত্রী আগুনে দগ্ধ মিনাকে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তার দরিদ্র বাবার বাড়িতে রেখে চলে যান। এরপর থেকে বাবা কাজী আব্দুল হক মেয়েকে নিয়ে মানবেতর জীবন-যাপন করছেন।
মেয়ের জীবন বাঁচাতে হতদরিদ্র পরিবারটি নিজের সহায়সম্বল হারিয়েছে এবং ধার দেনা করেও অগ্নিদগ্ধ মিনার সু-চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারছে না। ঘটনার কয়েক মাস অতিবাহিত হলেও সুচিকিৎসার অভাবে মিনার পুড়ে যাওয়া শরীরের বিভিন্ন স্থানে পঁচন ধরে ধীরে ধীরে মৃত্যুর মুখে ঢলে পড়ছে।
অগ্নিদগ্ধ মিনার বাবা কাজী আব্দুল হক অভিযোগরূপে বলেন, ‘আমি দিনমজুরের কাজ করে পরিবার-পরিজন নিয়ে জীবন-যাপন করে আসছিলাম। আমার সংসারের অভাবের দূর্বলতার সুযোগে পার্শ্ববর্তী সলিল গ্রামের সাধু মিয়া আমার মেয়েকে তার আত্মীয় প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলামের বাসায় গৃহপরিচারিকার (ছেলে-মেয়ে দেখাশুনার) কাজে নিয়ে দেয়। কিন্তু ওই পরিবার আমার নাবালিকা মেয়েকে দিয়ে রান্না-বান্নার সকল প্রকার কাজ করাতো।
‘এক সময় সংবাদ পাই আমার মেয়ে মিনা হঠাৎ অসুস্থ হয়েছে। সে সময় আমি এবং আমার স্ত্রী মিনাকে দেখতে টাঙ্গাইলে শফিকুল ইসলামের বাসায় গেলে জানতে পারি আমার মেয়ে মিনা অগ্নিদগ্ধ হওয়ায় তাকে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হাসপাতালে গিয়ে দেখি আমার মেয়ে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় পড়ে আছে।
সেখানে কয়েক দিন চিকিৎসার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক মিনাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করেন। পরে শফিকুল ইসলাম কৌশলে আমার মেয়েকে সদর হাসপাতাল থেকে রিলিজ করে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় না নিয়ে আমার বাড়িতে রেখে যান। এরপর থেকে ওই প্রকৌশলীর পরিবার আজ পর্যন্ত আমার মেয়ের চিকিৎসার কোনো প্রকার খোঁজখবর নেয়নি।
মেয়েকে সুস্থ করতে প্রথমে আমার সহায়সম্বল বিক্রি করি। তাতেও ওষুধপত্র কেনার টাকা না হলে ধার-দেনা করে মেয়েকে চিকিৎসা করালেও বর্তমানে অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছি না। আমি সমাজের বিত্তবান লোকদের কাছে আমার মেয়ের সুচিকিৎসায় সাহায্য কামনা করছি পাশাপাশি যে পরিবারের কারণে আজকে আমার মেয়ে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে তাদের শাস্তি দাবি করছি।’
সহবতপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: তোফায়েল মোল¬া বলেন, ‘মিনার অগ্নিদগ্ধ হওয়ার মর্মান্তিক ঘটনার সংবাদ পেয়ে আমি আব্দুল হকের বাড়ি গিয়ে মিনার খোঁজখবর নেই এবং তার শরীরের পঁচন এবং শারীরিক অবস্থা গুরুতর বিধায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করি। বর্তমানে সে বার্ন ইউনিটের ৩নং বেডে চিকিৎসাধীন রয়েছে। আমি প্রকৌশলী মো: শফিকুলের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি মিনার চিকিৎসা করানোর ব্যবস্থার কথা স্বীকার করলেও এখন ওই প্রকৌশলীর কোনো সাহায্য, এমনকি কোনো খোঁজখবর পাওয়া যাচ্ছে না।’
এ বিষয়ে প্রকৌশলী মো: শফিকুল ইসলামের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলে তিনি মিনার সকল প্রকার চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন বলে দাবি করেন।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা