স্থানীয় সরকার নয় জাতীয় নির্বাচনের জন্য লড়াই করেছি : মির্জা আব্বাস
- নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি
- ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২১:৪৮

স্থানীয় সরকার নয় জাতীয় নির্বাচনের জন্য লড়াই করেছি মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা গত পনেরো বছর ক্ষমতায় ছিল ভোট ছাড়া। আপনারাও থাকুন, আমরা নিষেধ করব না। কিন্তু মানুষ আপনাদের ছাড় দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা গণতন্ত্র চাই, আমরা কথা বলতে চাই। দরকার হলে বলে দেন, বাংলাদেশে আর নির্বাচনের প্রয়োজন নেই। আপনারা সংস্কারের কথা বলে কান ঝালাপালা করে ফেললেন। কী সংস্কার করেছেন জানি না।’
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে শহরের মেট্রোহল মোড়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সমাবেশে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে কথা হচ্ছে। অনেকে বলে অমুক ভাইকে সেখানে দেখতে চাই, ওখানে দেখতে চাই৷ বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী যেন এমন কথা না বলে। আমরা জেল খেটেছি, মামলা খেয়েছি এ নির্বাচনের জন্য নয়, জাতীয় নির্বাচনের জন্য। আমরা লড়াই করেছি গণতন্ত্রের জন্য। আমরা স্থানীয় সরকার নির্বাচনের জন্য লড়াই করিনি।’
তিনি বলেন, ‘এখন স্থানীয় সরকার নির্বাচনের কথা বলছে এর পেছনে বিশাল ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তার একটাই কারণ, স্থানীয় সরকার নির্বাচন। এটা হয়ে গেলে তাদের অনেক সুবিধা হয়। কারণ গ্রামেগঞ্জে অনেকের পায়ের তলায় মাটি নেই। তারা স্থানীয় সরকার নির্বাচন করে পায়ের তলায় মাটি আনতে চান।’
তিনি আরো বলেন, ‘আমরা জেনেছি, বিডিআর হত্যা হয়েছিল বাইরের একদল প্রশিক্ষিত ও প্রাতিষ্ঠানিক লোকদের দিয়ে। তারা এদেশে থাকে না। তারা বিদেশ থেকে এসে আমার দেশের ৫৭ জন সেনা সদস্যকে হত্যা করেছে। তাদের বিচার হয়নি। যাদের বিচার হয়েছে তারা আসলে নির্দোষ। জেলে তাদের দেখে আমরা আমাদের অশ্রু ধরে রাখতে পারিনি। আমি তাদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি সমবেদনা জানাই।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যারা জেলে আছে তাদের ব্যাপারে কোনো কথা শুনতে চাই না। তারা বিগত পনেরো বছর ধরে জেলে পচে মরছে। তাদের কেনো ছাড়া হচ্ছে না আমরা জানি না। আমরা চাই তাদের অবিলম্বে মুক্তি দেয়া হোক।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের অবস্থা খুব খারাপ। ডাকাতি, ছিনতাই বেড়ে গেছে। কারা করছে আপনারা জানেন। যারা বলে দিনের বেলায় আমরা হাঁটতে না পারলেও রাতে ওদের ঘুমোতে দেব না। কারা বলে এ কথা দিল্লী বসে। যারা এদেশের সর্বনাশ করে ভারতে বসে আছে তারাই চক্রান্ত করছে কীভাবে এ দেশকে অশান্ত করা যায়।’
তিনি আরো বলেন, ‘এদেশের মানুষের ঐক্যকে আপনারা ভাঙতে পারবেন না। এদেশের মানুষ শান্তি চায়। মানুষ বাঁচতে চায়। আপনারা আমাদের রাতে শান্তিতে ঘুমোতে দেবেন না, লুটপাট করবেন, আগুন দেবেন? চেষ্টা করে দেখুন, মানুষ আপনাদের এত সহজে ছেড়ে দেবে না।’
তিনি বলেন, ‘এদেশের মানুষ এ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমরা সবাই তাদের সমর্থন দিয়েছি। আমরা বলেছি, এ সরকার ব্যর্থ হলে দেশ ব্যর্থ হয়ে যাবে। সুতরাং এ সরকারকে ব্যর্থ হতে দেয়া যাবে না। আমরা নির্বাচনের জন্য অপেক্ষা করব, কিন্তু আজীবন অপেক্ষা করব না।’
বিএনপিতে অসৎ লোকের কোনো জায়গা নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘ফতুল্লায় স্বেচ্ছাসেবক নেতা মামুনকে কয়েকদিন আগে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। আমি এ ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানাচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের আমলে নারায়ণগঞ্জে এসেছিলাম একটা মিটিংয়ে। সেদিন ভয়ে ভয়ে এসেছিলাম। তখন কারো জীবনের নিরাপত্তা ছিল না। আজ আমাকে সার্কিট হাউজে রেস্ট নিতে দিয়েছে। গত সতেরো বছর হোটেলে থাকতাম, ভয়ে ভয়ে থাকতাম। ওই বার শহীদ মিনারে কর্মসূচি পালন করেছিলাম। আজ মুক্ত অবস্থায় লাখো মানুষের সামনে মিটিং করতে পেরেছি।’