০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ৭ শাবান ১৪৪৬
`

কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগের কার্যালয়কে ‘পাবলিক টয়লেট’ ঘোষণা

আওয়ামী লীগ কার্যালয়কে পাবলিক টয়লেট ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা - ছবি : নয়া দিগন্ত

কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়কে পাবলিক টয়লেট ঘোষণা করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা।

বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) রাত পৌনে ১১টার দিকে জেলা শহরের স্টেশন রোড এলাকায় দলটির পরিত্যক্ত ভবনে আগুন দেয় ছাত্র জনতা। পরে কার্যালয়ের ভাঙা দেয়ালের সামনের অংশে লাল রঙ দিয়ে বড় করে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দেন তারা।

এছাড়াও আওয়ামী লীগ কার্যালয়টি যেখানে অবস্থিত সেই স্থানটিকে ‘পাবলিক টয়লেটের মোড়’ নাম দেন ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীরা। এরপর শহরের খরমপট্টি এলাকায় গিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদ কার্যালয়ের সামনে থাকা শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙে দেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শেখ হাসিনা ভারত থেকে আওয়ামী লীগের পেইজে ভাষণ দেবেন-এমন খবর শুনে বিক্ষুব্ধ শত শত ছাত্র-জনতা হাতুড়ি শাবল নিয়ে আওয়ামী লীগ কার্যলের সামনে জড়ো হন। ভাষণ শুরুর খবরে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের পরিত্যক্ত ভবনের দেয়াল ভাঙচুর শুরু করেন তারা। পরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। ভবনটির ভাঙা ও ঝুলে থাকা দেয়ালের অংশে রাতেই ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দেয়া হয়। এরপর খড়মপট্টি এলাকায় জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের দেয়ালে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল ভেঙে দেয়া হয়।

এর আগে, গত বছরের ৪ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনের সময় ও ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিক্ষোভের মুখে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বিক্ষুব্ধ জনতা কিশোরগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে দু’ দফা হামলা-ভাঙচুর করে আগুন দিয়েছিলেন।

ছয় মাস পর বুধবার রাতে আবারো আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে পরিত্যক্ত ভবনের ভেতর আগুন দিয়ে দেয়ালে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দেয়া হয়। পাশাপাশি মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে শেখ মুজিবুরের ম্যুরাল ভাঙচুর করা হয়।

এদিকে, বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজিতপুর ও পাকুন্দিয়া উপজেলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙে দেয়া হয়। বুধবার রাতে কিশোরগঞ্জের ভৈরব উপজেলায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর এবং উপজেলা পরিষদের নির্মিত শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙে দেযন বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা। বৃহস্পতিবার সকালে পাকুন্দিয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্স প্রাঙ্গণে থাকা শেখ মুজিবের ম্যুরাল, দুপুরে বাজিতপুরে এমপি মার্কেটের শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভেঙে দেয়া হয়। শত শত মানুষ এসব ম্যুরাল ভাঙচুরে অংশ নেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে কিশোরগঞ্জ সদরের বিন্নাটি মোড়ে থাকা সাবেক তিন রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান ও আবদুল হামিদের ম্যুরাল বুলডোজার দিয়ে ভেঙে দেন বিক্ষুব্ধ-জনতা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিশোরগঞ্জ জেলা শাখার অন্যতম সংগঠক আশরাফ আলী সোহান জানান, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে গিয়ে বাংলাদেশে আবার বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে পাঁয়তারা করছেন। নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণ করছে। হাসিনা ভারত থেকে বক্তব্য দেয়ার প্রতিবাদে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর বাড়ি ভেঙে দেয়া হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় কিশোরগঞ্জের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা জেলা আওয়ামী কার্যালয়ে ‘পাবলিক টয়লেট’ লিখে দিয়েছেন এবং শেখ মুজিবুরের ম্যুরালও ভাঙচুর করেছেন।


আরো সংবাদ



premium cement