সাভারে ছাত্র আন্দোলনে নিহত ইয়ামিনের লাশ উত্তোলনে পরিবারের আপত্তি
- আমান উল্লাহ পাটওয়ারী, সাভার (ঢাকা)
- ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৮:০২
সাভারে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে নিহত প্রথম শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিনের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কবর থেকে তুলতে গেলে তার পরিবার আপত্তি জানায়। এ সময় লাশ উত্তোলন না করে ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আলী হাসানসহ কর্মকর্তারা ফিরে যান।
মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) আদালতের নির্দেশে দুপুরে সাভারের ব্যাংক টাউন এলাকায় লাশ উত্তোলন করতে গেলে মামলার বাদি এবং শহীদ ইয়ামিনের পরিবার আপত্তি জানায়।
শহীদ শাইখ আশহাবুল ইয়ামিন মিরপুরের মিলিটারি ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) কম্পিউটারবিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।
স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীসহ বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকে কেন্দ্র করে সাভারের পাকিজা মডেল মসজিদের কাছে গত বছরের ১৮ জুলাই ঘটনাটি ঘটে। পুলিশের গুলিতে শহীদ হন তিনি। এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগসহ নেট দুনিয়া ভাইরাল হয়। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে ইয়ামিনকে পুলিশের একটি সাঁজোয়া যানের ওপর থেকে একজনকে টেনে নিচে ফেলা হচ্ছে দেখা গেছে। তিনি সাঁজোয়া যানের চাকার কাছে সড়কে পড়ে থাকেন। এরপর পুলিশের এক সদস্য সাঁজোয়া যান থেকে নিচে নামেন। এক হাত ধরে তাকে টেনে আরেকটু দূরে সড়কে ফেলে রাখেন। পরে কয়েকজন পুলিশ মিলে তাকে টেনে সড়ক বিভাজকের ওপর দিয়ে ঠেলে অপর পাশে ফেলে দেন।
শহীদ ইয়ামিনের বাবা মহিউদ্দিন জানান, ‘আমার ছেলেকে দিনের আলোতে প্রকাশ্য দিবালোকে শত শত মানুষের সামনে যে ঘটনা ঘটছে এখন লাশ তুলতে হবে কেন?। এমন না যে, রাতের বেলায় কেউ মেরেছে বা আত্মহত্যা করছে এটা তদন্ত করা প্রয়োজন।’
তিনি জানান, ‘পুলিশ তাদের শর্টগান দিয়ে গুলি করে মেরেছে। এটা বাংলাদেশসহ বিশ্ব মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে। এটা আমরা কোনো ভিউিও বানিয়ে দেইনি। এটা আবার ময়নাতদন্তের কিছু নেই। আমার ছেলে গেছে, আমার মেয়ের ভাই গেছে, আমরা আর তাকে অসম্মান করতে চাই না।’
ঢাকা জেলার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো: আলী হাসান নয়া দিগন্তকে জানান, ‘মামলার বাদি শহীদ ইয়ামিনের মা, বোনসহ অন্য আত্মীয়স্বজন আপত্তি জানিয়েছেন এবং লিখিত দিয়েছেন, সেজন্য আমরা লাশ উত্তোলন কার্যক্রম স্থগিত রেখেছি। আমরা তাদের আবেদনসহ অন্য বিষয় আদালতকে অবহিত করব। পরবর্তীতে আদালত যে নির্দেশনা দিবে যে অনুযায়ী আমরা কাজ করব।’