ভাঙারি কুড়িয়ে চলছে ৬৫ বছর বয়সী বৃদ্ধের সংসার
- মো: হুমায়ূন কবীর, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ)
- ১৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১২:৩৫
মানিকগঞ্জ উপজেলার সাটুরিয়া গ্রামের বাসস্ট্যান্ডের কাছে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন ৬৫ বছর বয়সী মো: শামীম মিয়া ও তার স্ত্রী। সন্তানেরা তাদের খোঁজ-খবর না রাখায় বৃদ্ধা স্ত্রীকে নিয়ে ভিন্ন জেলা থেকে জীবিকার তাগিদে ছুটে এসেছেন সাটুরিয়ায়।
তিনি ও তার স্ত্রী ব্যাগ ও লোহা খোঁজার চৌম্বক নিয়ে ভাঙারি কুড়ান। ভোর থেকেই জীবিকা অর্জন করতে বিভিন্ন জায়গায় বস্তা নিয়ে ছুটে চলেন স্বামী-স্ত্রী দু’জনেই।
জানা গেছে, শামীম মিয়া টাঙ্গাইল জেলার মির্জাপুর উপজেলার ভাদগ্রাম এলাকার সন্তান। তাদের সংসারে রয়েছে দু’ছেলে ও এক মেয়ে। পরিবার নিয়ে বেশ ভালোই চলছিল তাদের সংসার। কিন্তু ছেলে-মেয়ে বিয়ে হওয়ার পর থেকেই সংসারে নামে কালো ছায়া। গ্রামের বাড়িতে থাকতে মানুষের জমিতে দিনমজুর খেটে সংসার চালিয়ে এলেও সন্তানদের সাথে বনিবনা না হওয়ায় প্রায় পাঁচ বছর আগে স্ত্রীকে নিয়ে চলে আসেন দিনমজুরি করে জীবিকা নির্বাহ করতে। ওই রকম কাজ না থাকায় বেছে নেন ভাঙারি কুড়ানোর কাজ।
বাজার, রাস্তাঘাট, ডাস্টবিন, ফাঁকা জায়গা থেকে তারা বস্তা ভরে পুরোনো প্লাস্টিক, লোহা, বোতল, কার্টুনসহ বিক্রি করা যায় এমন জিনিস সংগ্রহ করে পরিবেশ রক্ষায় কাজ করছেন। এগুলো স্থানীয় মহাজনদের কাছে বিক্রি করে দিনে প্রায় পাঁচ শ’ টাকা আয় করেন। দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে কষ্ট হলেও স্বল্প আয় দিয়েই কোনো রকম জোড়াতালি দিয়ে চালাচ্ছেন তার সংসার।
সন্তানদের কথা জিজ্ঞেস করতেই আক্ষেপ করে তারা বলেন, বড় ছেলে গার্মেন্টসে চাকরি করে। একমাত্র মেয়ের বিয়ে হয়েছে। ছোট ছেলেও নিজের মতো জীবনযাপন করছে। কিন্তু কেউই আমাদের খোঁজ-খবর রাখে না। রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে কাজ করতে হয়। আমাদের বয়স হয়েছে। আমরা কষ্ট করে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছি অথচ সন্তানেরা আমাদের চিনতেও চায় না।
এ বিষয়ে সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শিউলী আক্তার বলেন, ’সংগ্রামী ওই দম্পত্তিকে তার নিজ উপজেলা থেকে সরকারিভাবে সহযোগিতা করা উচিৎ।’
এ দম্পতির ছেলে-মেয়েদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবাকে কষ্ট না দিয়ে তাদের দেখাশোনার জন্য ফিরিয়ে নেয়া উচিৎ।’