ফরিদপুরে যুবককে ওঠিয়ে নিয়ে চোখ তুলে হত্যা
- ফরিদপুর প্রতিনিধি
- ১১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮:৪৮
ফরিদপুরের কানাইপুরে প্রকাশ্য দিবালোকে ওবায়দুর খান (২৮) নামে এক যুবককে ওঠিয়ে নিয়ে বেদম মারধর করে দু’চোখ তুলে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) বিকেল ৩টার দিকে এ ঘটনার প্রতিবাদে ঘণ্টাব্যাপী ঢাকা-খুলনা মহাসড়কের কানাইপুর বাজার এলাকায় বিক্ষোভ করে ঘটনার সাথে জড়িত দ্রুততম সময়ে গ্রেফতারের দাবি জানান স্থানীয়রা। এর আগে শুক্রবার রাত ৯টার দিকে মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকায় নেয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত ওবায়দুর কানাইপুর ইউনিয়নের ঝাউখোলা গ্রামের বিল্লাল খানের ছেলে। তিনি কাঠমিস্ত্রির সহকারী হিসেবে কাজ করতেন বলে জানা গেছে।
নিহতের ভাই রাজিব খান বলেন, ‘শুক্রবার বিকেলে সন্ত্রাসীরা তাকে তুলে নিয়ে গুরুতর আহত করে। তার দু’চোখে লোহার পেরেক দিয়ে খুঁচিয়ে নষ্ট করে এবং বাম পা ভেঙে দেয়। এ সময় তাকে উদ্ধার করে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ট্রমা সেন্টারে নিলে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালে পাঠানো হয়।’
চিকিৎসকরা জানায়, দু’চোখ ও মাথায় আঘাতের ফলে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে।
নিহত ওবায়দুরের বাবা বিল্লাল খান অভিযোগ করেন, ‘আওয়ামী লীগের সাবেক এক মন্ত্রীর ভাগ্নে পরিচয়দাতা খায়রুজ্জামান খাজার নেতৃত্বে সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালায়। সম্প্রতি একটি মামলায় খাজার দু’বছরের সাজা হয়েছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করতে চাইলেও বিএনপির এক নেতার প্রশ্রয়ে সে বেপরোয়া হয়ে ওঠে।’
পুলিশ জানিয়েছে, ‘স্থানীয় সন্ত্রাসী ও মাদককারবারীদের গ্রেফতারে পুলিশের সোর্স হয়ে কাজ করছিল ওবায়দুর। এ বিষয়টি জেনে যাওয়ার পরে তার উপর দলবল নিয়ে সন্ত্রাসীরা এ হামলা চালায়। অবশ্য ওবায়দুরের বিরুদ্ধেও মাদক আইনে মামলা রয়েছে।’
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) শৈলেন চাকমা শত্রুতার জের ধরে হামলায় ওবায়দুর নামে এক যুবক নিহত হওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘এ বিষয়ে থানায় একটি হত্যা মামলা করা হবে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনিব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এদিকে নিহত ওবায়দুরের ময়নাতদন্তের পর শনিবার বিকেলে তার লাশ এলাকায় পৌঁছালে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয়রা। এ সময় বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে সড়কে বসে অবস্থান নেন। এ সময় দু’পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এ সময় বিক্ষোভকারীরা অভিযোগ করেন, ‘স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে খাজা বাহিনী সন্ত্রাসীরা ওবায়দুরকে হত্যা করেছে। তাদেরকে দ্রুততম সময়ে আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে। পরে থানা পুলিশের আশ্বাসে অবরোধ তুলে নেয়া হয়। বিক্ষোভ শেষে ওবায়দুরের লাশ দাফন করা হয়েছে।’