নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ডুয়েটে বিজয় দিবস উদযাপন

ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (ডুয়েট), গাজীপুর-এ বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্য দিয়ে যথাযোগ্য মর্যাদায় মহান বিজয় দিবস উদযাপিত হয়েছে।

সোমবার এ উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মহোদয়ের বাসভবন, প্রশাসনিক ভবন ও হলসমূহে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়।

পরে সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীনের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। একইসাথে ভিসির নেতৃত্বে একটি বিজয় র‌্যালি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে। এরপর শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আরেফিন কাওসার।

এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো: নজরুল ইসলাম এবং বিভিন্ন অনুষদের ডীন, বিভাগীয় প্রধান, পরিচালক, হল প্রভোস্ট, অফিস প্রধান এবং শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা উপস্থিত ছিলেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে ভিসি অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ জয়নাল আবেদীন সকলকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘১৯৭১ সালের এ দিনটি একটি ঐতিহাসিক দিন। জাতীয় ঐক্য ও দীর্ঘ নয় মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমাদের মুক্তিযোদ্ধারা বিজয় অর্জন করে আমাদেরকে এ দেশ উপহার দিয়েছিল। এটা পৃথিবীর বুকে একটি উদাহরণ সৃষ্টি করেছিল। আমরা দেখেছি, দেশের ছাত্র-জনতা জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে ঐতিহাসিক ঐক্যের মাধ্যমে আবারো উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আমরা বিশ্ববাসীকে দেখিয়ে দিয়েছি ঐক্যবদ্ধ থাকলে আমাদের কেউ হারাতে পারবে না।’

তিনি আরো বলেন, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সকল শহীদ ও আহত ছাত্র-জনতার ত্যাগের বিনিময়ে আমাদের ওপর যে গুরুদায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, আমরা প্রত্যেকের অবস্থান থেকে সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে আমরা তা পালন করব এবং আমাদের দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে পৃথিবীর বুকে বাংলাদেশকে একটি বৈষম্যমুক্ত, উন্নত, কল্যাণকর ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করব।’

এ সময় তিনি সকল শহীদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত এবং আহতদের পূর্ণ সুস্থতা কামনা করেন। এছাড়া তিনি একতাবদ্ধ হয়ে মেধাভিত্তিক, ন্যায় ও বৈষম্যহীন দেশ গড়ে তোলার শপথ নেয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রকৌশল ও প্রযুক্তিগত শিক্ষা, গবেষণা ও প্রকাশনাসহ সকল ক্ষেত্রে প্রাণের বিশ্ববিদ্যালয় ডুয়েটকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সকলের ভূমিকার প্রতি সর্বোচ্চ গুরুত্বারোপ করেন।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-ভিসি অধ্যাপক ড. মো: আরেফিন কাওসার বলেন, ‘১৯৭১ সালে মার্চ থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে আমাদের এ বিজয় অর্জিত হয়েছে। মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সকল বীর মুক্তিযোদ্ধা ও শহীদ এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানে সকল শহীদ ও আহত ছাত্র-জনতার ত্যাগের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বৈষম্যহীন সমাজ কায়েমের লক্ষ্যে আমাদের নিঃস্বার্থভাবে কাজ করে যেতে হবে। সকল ভেদাভেদ ভুলে দেশের ভেতর ও বাইরের সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার জন্য আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’

তিনি সকলকে মহান বিজয় দিবসের রক্তিম শুভেচ্ছা জানিয়ে সমৃদ্ধ ও বৈষম্যহীন বাংলাদেশ গড়ে তোলার আহ্বান জানান।

মহান বিজয় দিবসের অন্যান্য কর্মসূচির মধ্যে ছিল বা’দ যোহর জাতির শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মসজিদে বিশেষ মোনাজাত, মন্দির ও অন্যান্য উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা, প্রীতি ভলিবল প্রতিযোগিতা ও ঢাকা ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল কর্তৃক শিশুদের নিয়ে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।

উল্লেখ্য, বিজয় দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস সেজেছে বর্ণিল আলোকসজ্জায়।