১৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১ পৌষ ১৪৩০, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

হাসিনার রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে, ফিরে আসার সুযোগ নেই : সোহেল

সমাবেশে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল - ছবি : নয়া দিগন্ত

হাসিনার রাজনৈতিক মৃত্যু হয়েছে, আর ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই মন্তব্য করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেছেন, ‘শেখ হাসিনা ক্ষমতার নেশায় হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছেন। অবশেষে ছাত্র-আন্দোলনের মুখে পড়ে চোরের মতো পালিয়ে গেছেন। এখন আবার অনেকেই লেখে, আপা আসছে। আমি বলছি, শহীদদের রক্ত এখনো শুকিয়ে যায়নি। আসবেন যখন সব রক্তের হিসাব নিয়ে আসেন।’

রোববার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে জেলা শহরের কিশোরগঞ্জ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির দ্বি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় সম্মেলন উদ্বোধন করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি মো: শরীফুল আলম। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন কমিটির আহ্বায়ক খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেল।

অনুষ্ঠানে সদস্যসচিব হাজী ইসরাইল মিয়ার সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ময়মনসিংহ বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য লায়লা বেগম। সম্মেলনে প্রধান বক্তা ছিলেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম। এতে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম মোল্লা, রুহুল হোসাইন, অ্যাডভোকেট জালাল মোহাম্মদ গাউস, অ্যাডভোকেট মো: জালাল উদ্দিন, অ্যাডভোকেট শরীফুল ইসলাম, রুহুল আমিন আকিল ও ইসমাইল হোসেন মধু, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম রতন ও অ্যাডভোকেট বদরুল মোমেন মিঠু, সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আশফাক, জেলা যুবদলের সভাপতি খসরুজ্জামান শরীফ, সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ সুমন, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক আবু নাসের সুমন, সদস্যসচিব শহীদুল্লাহ কায়সার শহীদ, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো: মারুফ মিয়া, সাধারণ সম্পাদক ফেরদৌস আহমেদ নেভিন প্রমুখ।

হাবিব উন নবী খান বলেন, ‘শেখ হাসিনা শুধু গুম, খুন করে যাননি। আমাদের নির্বাচনী ব্যবস্থাকেও উনি ধ্বংস করে দিয়ে গেছেন। শুধু এই কারণেই তার হাজার বছর জেল হওয়া উচিত।’

ভারতের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দিলো কে? ১৬ বছর পুতুলকে নাচিয়েছেন। সেই পুতুলের নেশা আর কাটে না। একজন খুনিকে আশ্রয় দিয়েছেন। গণতন্ত্র হত্যাকারীকে আশ্রয় দিয়েছেন আপনাদের দেশে। আমরা যদি আপনার দেশের খুনিদের আশ্রয় দেই বিষয়টা কি দাঁড়াবে? বড় বড় ডায়ালগ দিচ্ছেন বাংলাদেশকে কেন্দ্র করে। দোষ দিচ্ছেন আমরা নাকি এখানে সংখ্যালঘুদের নির্যাতন করি। অথচ আমাদের দেশে হিন্দু ভাইদের যে পূজাপার্বণ হয় সেখানে দেখা যায় মুসলমান ভাইরা বেশি। আমরা দেখেছি এ দেশে হুজুররা টুপি পড়ে মন্দির পাহারা দিয়েছে। কিন্তু ওই দেশেতো আমরা পুরোহিতদের মন্দির পাহারা দিতে দেখি না।’

যুগ্ম মহাসচিব আরো বলেন, ‘আমাদের দিকে আঙুল তুলে বলেন, আমাদের দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নাই। আমরা তো এ দেশে থাকি। আমরা তো এমন কিছু দেখি না। কিছু হিন্দু ভাই আছেন যারা আওয়ামী লীগ করেন আবার কিছু হিন্দু ভাই আছেন যারা বিএনপি করেন। আওয়ামী লীগের দুষ্কর্মের জন্য যদি কারো সমস্যা হয় এর দায়দায়িত্ব কিন্তু আমাদের নয়। সারা বাংলাদেশের জনগণ আওয়ামী লীগের ওপর ক্ষ্যাপা। সাধারণ কোনো হিন্দু কিন্তু কখনোই বাংলাদেশে আক্রমণের শিকার হয় নাই। আপনারা যে আমাদের দিকে আঙুল তুলছেন আপনাদের দেশের কি অবস্থা ওই দিকে তাকান। আমরা দেখেছি, হরিয়ানায় ৩০০ মুসলমানদের বাড়ি-ঘর বুলডোজার দিয়ে মাটির সাথে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে। একজন ইমামসহ ছয়জন মুসলমানকে হত্যা করা হয়েছে। সুতরাং অন্যের দিকে আঙুল তোলার আগে আয়নায় নিজের চেহারা দেখুন।’

সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্বে কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। এতে খালেদ সাইফুল্লাহ সোহেলকে সভাপতি ও হাজী ইসরাইল মিয়াকে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির নতুন কমিটি গঠন করা হয়। নির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল তাদেরকে দ্রুততম সময়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের নির্দেশ দেন।


আরো সংবাদ



premium cement