বিদেশী কম্বলের ভিড়ে কমেনি লেপ-তোষকের কদর
- মো: হুমায়ূন কবীর, সাটুরিয়া (মানিকগঞ্জ)
- ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ১০:৪৪
চলছে অগ্রহায়ণ মাস। বইছে শীতের হিমেল বাতাস। ভোর হলেই দেখা মেলে কুয়াশার। সন্ধ্যায় অনুভূত হয় শীত। রাতের ঠান্ডায় পাতলা কাঁথায় না মানাতে পেরে মনে করিয়ে দিচ্ছে লেপ-তোষকের কথা। শীতের তীব্রতা বাড়ায় উষ্ণ গরম পেতে লেপ-তোষকের অভাব মনে করছেন আরামপ্রিয় মানুষ। চাহিদা মতো লেপ-তোষকের জন্য ক্রেতারা ভীড় জমাচ্ছে দোকানে। বিদেশী কম্বল না কিনে পুরাতন লেপ-তোষক মেশিনে ভেঙে নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছে অনেকেই।
সরেজমিনে মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজারে ঘুরে দেখা যায় লেপ-তোষকের দোকানের ব্যস্ততা। সকাল থেকে মধ্য রাত পর্যন্ত বাহারি ডিজাইনের সেলাইয়ে ফুটিয়ে তোলা লেপ-তোষক, জাজিম তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। কেউ ভ্রাম্যমাণ দোকান-ভ্যানে ফেরি করে হাক-ডাক দিয়ে লেপ-তোষক বিক্রি করে যাচ্ছে। প্রতিটি লেপ ৬০০ থেকে দেড় হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে বিদেশী কম্বল কম দামে পাওয়া গেলেও তাদের ব্যবসায় কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি বলে মনে করছে লেপ-তোষক ব্যবসায়ীরা।
উপজেলার সাভার বাজারের বিস্মিল্লাহ বেডিং স্টোরের ব্যবসায়ী মো: রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কার্তিক থেকে পৌষ পর্যন্ত তিন মাস লেপ-তোষক তৈরির ব্যস্ততা বেশি থাকে। ১০ বছর ধরে লেপ-তোষক তৈরির ব্যবসা করছি। চলতি সপ্তাহে আটটি লেপ-তোষক ডেলিভারি দিয়েছি এবং হাতে আরো ১০-১২টি অর্ডার আছে। এগুলো ডেলিভারির আগেই আরো কাজ জমা হবে। অনেক ব্যস্ত সময় পার করছি।’
ক্রেতা স্বপন আহমেদ বলেন, ‘গত কয়েক দিন ধরে শীত বেড়েছে। চার হাত প্রস্থ আর পাঁচ হাত লম্বা একটি লেপ বানাতে দিয়েছি, এক হাজার ৪০০ টাকা খরচ হয়েছে। তীব্র শীত আসার আগেই লেপ বানাতে দিলাম।’
উপজেলার ছনকা বাজারের বেডিং স্টোরের ব্যবসায়ী মো: নাজিম উদ্দিন বলেন, ‘শীতে লেপ-তোষকের অর্ডার বাড়ায় কারিগর দিয়ে লেপ-তোষক বানাই। একজন কারিগর প্রতিদিন দু’তিনটি লেপ-তোষক বানাতে পারে। প্রতি লেপে ২৫০ টাকা করে তাদের মজুরি দেয়া হয়।’
উপজেলার দরগ্রাম বাজারের বেডিং স্টোরের ব্যবসায়ী মো: বাবুল হোসেন বলেন, ‘২০০৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত লেপ-তোষকের ব্যবসা করছি। গার্মেন্টস থেকে আসা তুলার মান ভেদে ৭০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত কেজি দরে বিক্রি করি এবং লেপ-তোষকের কাপড়ের মান ভেদে ৫০ থেকে ৭০ টাকা গজের কাপড় দিয়ে প্রতিদিন তিন থেকে চারটি করে তৈরি করি।’
সাভার বাজার কমিটির সভাপতি কামরুজ্জামান বাবু বলেন, ‘বিদেশী কম্বলের তুলনায় লেপ-তোষক আরামদায়ক। লেপ-তোষকে ব্যবহারের জন্য উন্নতমানের তুলা, কাপড় ও সুতা ব্যবহার করলে সহজে নষ্ট হয় না।’
স্বল্প মূল্যে সরবরাহ করলে সকল পেশার মানুষ শীত নিবারণে কাঁথার পাশাপাশি লেপ-তোষক ব্যবহার করবে বলেও জানান তিনি।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা