আশুলিয়ায় শ্রমিক-আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংঘর্ষ, গুলিবিদ্ধসহ আহত ৫

ঢাকার শিল্পাঞ্চল আশুলিয়ায় শ্রমিক ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় তিনজন গুলিবিদ্ধসহ আহত হয়েছে অন্তত পাঁচ শ্রমিক।

আহতদের নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। শ্রমিক অসন্তোষের বিষয়টি স্বীকার করলেও গুলিবিদ্ধের কথা অস্বীকার করেছে পুলিশ।

বুধবার (২৩ অক্টোবর) বেলা ১১টার দিকে আশুলিয়ার নরসিংহপুর-কাশিমপুর সড়কের বাংলাবাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ শ্রমিকরা হলেন সুসুকা গার্মেন্টেসের শ্রমিক হালিমা খাতুন এবং জেনারেশন নেক্সট গার্মেন্টসের শ্রমিক ববিতা আক্তার, মোর্শেদা খাতুন ও চম্পা খাতুন।

শ্রমিকরা জানায়, জেনারেশন নেক্সট পোশাক-কারখানার শ্রমিকদের তিন মাসের বেতন বকেয়া রয়েছে। বুধবার সকালে বকেয়া বেতন ও বন্ধ কারখানা খুলে দেয়ার দাবিতে শ্রমিকরা কারখানাটির সামনে একত্রিত হয়। পরে জেনারেশন নেক্সটের শ্রমিকরা পার্শ্ববর্তী সিগমা অ্যাপারেলস, ডি-সান, সুসুকা, জি-ম্যাক্স ও শিনশিন পোশাক কারখানায় গিয়ে শ্রমিকদের বের করে তাদের আন্দোলনে একত্রিত করে। এ সময় তারা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা বাধা দেয়। এতে শ্রমিকরা ক্ষিপ্ত হয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। পরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গুলি ছুড়লে তিন শ্রমিক গুলিবিদ্ধ হয় এবং আহত হয় আরো দু’জন।

নারী ও শিশু হাসপাতালের সহকারী ব্যবস্থাপক এইচ এম আসাফ উদ্দৌলা রিজভী বলেন, ‘মোট চারজনকে আহত অবস্থায় আমাদের হাসপাতালে আনা হয়েছে। এদের মধ্যে তিনজন গুলিবিদ্ধ বলে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। বাকি একজনের তলপেটে ইনজুরি রয়েছে। তা গুলির ইনজুরি কিনা, আমরা নিশ্চিত না।’

শিল্প পুলিশ-১ এর পুলিশ সুপার মো: সারোয়ার আলম বলেন, ‘গুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। শ্রমিকরা যখন পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে, তখন সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়া হয়।’

পুলিশ গুলি করেনি এমনটি দাবি করে তিনি আরো বলেন, ‘সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করা হলে এটা যেখানে পড়ে সেখানে ইটের কণা বা টুকরা থাকলে তা ছিটে গিয়ে স্প্লিন্টারের মতো আঘাত করতে পারে। তেমন হয়তো কারো হাতে বা কোথাও লেগেছে, যেটাকে গুলি বলা হচ্ছে। নিশ্চিতভাবে পুলিশ কোনো গুলি করেনি।’

এর আগে সোমবার সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত জেনারেশন নেক্সট পোশাক-কারখানার শ্রমিকরা নবীনগর-চন্দ্রা মহাসড়কের বাইপাইল মোড় এলাকা অবরোধ করে রাখে। পরে জলকামানের মুখে সড়ক ছাড়তে বাধ্য হয় তারা। সড়ক ছেড়ে যাওয়ার সময় সড়কে অর্ধশতাধিক গাড়ি ভাঙচুর করে শ্রমিকরা।