সাবেক দুই সংসদ সদস্যসহ ৬২ জনকে আসামি
- সোনারগাঁও (নারায়ণগঞ্জ) সংবাদদাতা
- ০২ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:৩৮
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে হেফাজতে ইসলামের নেতা মাওলানা ইকবাল হোসেনকে হত্যার ঘটনায় সোনারগাঁও থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।
বুধবার সকালে সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারী মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। এর আগে, গতকাল মঙ্গলবার রাতে হেফাজত ইসলামের সমর্থক ফয়সাল মাহমুদ হাবিবী এ মামলা দায়ের করেন।
তবে মাওলানা ইকবাল হোসেনের পরিবারকে না জানিয়ে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তার ছেলে এনামুল হক ইমরান। মঙ্গলবার রাতে তিনি তার ব্যক্তিগত ফেসবুকে স্ট্যাটাসে এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি জানান, এ মামলায় অনেক নির্দোষ ও নিরপরাধ মানুষকে আসামি করা হয়েছে। তাদের নাম বাদ দেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছেন। ঘটনার সাথে জড়িতদের আসামি করার দাবি করেন।
মামলায় নারায়ণগঞ্জোর সাবেক সাংসদ নজরুল ইসলাম বাবু ও আবদুল্লাহ আল কায়সার, সাবেক পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম, সাবেক অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান, মো: জাবেদ পারভেজ, নারায়ণগঞ্জের ডিবির সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: এনামুল কবির ও সোনারগাঁও থানার সাবেক ওসি মো: হাফিজুর রহমানসহ ৬২ জনকে আসামি করা হয়। এছাড়া আরো ১০০ থেকে ১৫০ জন অজ্ঞাত আসামি করা হয়।
মামলায় হেফাজত ইসলামের সমর্থক ফয়সাল মাহমুদ হাবিবী উল্লেখ করেন, ‘কেন্দ্রীয় ইসলামের সাধারণ সম্পাদক মাওলানা মামুনুল হক তার স্ত্রীসহ গত ২০২১ সালের ৩ এপ্রিল রাতে সোনারগাঁওয়ের রয়েল রিসোর্ট হোটেলে অবকাশ যাপনের জন্য আসেন। ওই সময় দুই সাবেক সাংসদের ষড়যন্ত্রে পুলিশ প্রশাসনের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে এজহার নামীয় আসামিরাসহ এক শ’ থেকে দেড় শ’ আসামি মামুনুল হককে স্ত্রীসহ হেনস্তা করে রিসোর্ট থেকে বের করে দেয়। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে সোনারগাঁওয়ের হেফাজতকর্মী মাওলানা ইকবাল হোসেন ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কের মোগরাপাড়া চৌরাস্তা এলাকায় মামুনুল হককে স্ত্রীসহ হেনস্তার জোরালো প্রতিবাদ করেন। এ সময় আজহার নামীয় আসামিরা তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে কিল, ঘুষিসহ লোহার রড দিয়ে মাথা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত করে। আহত অবস্থায় তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে আদালতে পাঠায়। ওই সময় পুলিশ তাকে রিমান্ডের নামে পুলিশ নির্যাতন করে। নির্যাতনে মাওলানা ইকবাল হোসেন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করে। তিনি ২০২১ সালের ২১ এপ্রিল রাত ১২টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
তিনি এজহারে আরো উল্লেখ করেন, ওই সময় বিরূপ পরিস্থিতির কারণে মাওলানা ইকবাল হোসেনের পরিবার মামলা করতে সাহস পাননি। বর্তমানে পরিস্থিতি অনুকূলে থাকায় তার পরিবারের পক্ষে মামলা দায়ের করেন।
এদিকে মামলার ঘটনায় নিহত ইকবাল হোসেনের ছেলে এনামুল হক ইমরান বলেন, ‘আমি প্রশাসন ও সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। আমি বর্তমানে সৌদি আরব অবস্থান করছি। আমার বাবাকে হত্যার ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে জানতে পেরেছি। তবে কে বা কারা এটা করেছে আমি জানি না। তারা আমার কিংবা আমার পরিবারের সাথে কোনো পরামর্শ না করেই মামলাটি দায়ের করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখানে অনেক নির্দোষ মানুষের নাম রয়েছে। এগুলো তারা ষড়যন্ত্রমূলকভাবে দিয়েছে। আমি এটার তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই এবং এ মামলা প্রত্যাহার করার জোর দাবি জানাই। আপনারা প্রকৃত দোষীদের শাস্তি দেন আমাদের কোনো আপত্তি নাই। যারা নির্দোষ তাদের নাম বাদ দেন।’
সোনারগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আবদুল বারী বলেন, ‘হেফাজত ইসলামের সমর্থক ফয়সাল মাহমুদ হাবিবী মামলা দায়ের করেন। তদন্তে মামলার কোনো আসামির সম্পৃক্ততা না পেলে তাকে অব্যাহতি দেয়া হবে।’
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা