২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ন ১৪৩১, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬
`

রাজধানীতে চীনা নাগরিকের মাটিচাপা দেয়া লাশ উদ্ধার

-

রাজধানীর বনানীতে এক চীনা নাগরিক খুন হয়েছেন। গতকাল দুপুরে বনানীর ২৩ নম্বর রোডের ৮২ নম্বর বাড়ির পাশে মাটিতে পুঁতে রাখা জে জিয়াং ফি ওরফে গাওর (৪৭) লাশ উদ্ধার করে বনানী থানা পুলিশ। পুলিশ জানায়, তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। পরে দুষ্কৃতকারীরা গুম করার জন্য তার লাশ মাটি চাপা দিয়ে রাখে।
নিহত জে জিয়াং একজন ব্যবসায়ী ছিলেন। তিনি পদ্মা সেতুতে পাথর সরবরাহসহ সরকারের কয়েকটি মেগা প্রকল্পে কাজ করতেন। তিনি পরিবার নিয়ে বনানীর ওই বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। এ ঘটনায় ওই ভবনের তিন নিরাপত্তাকর্মীসহ ৬ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

বনানী থানার ওসি নূরে আযম মিয়া জানান, গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে বনানীর ২৩ নম্বর রোডের ৮২ নম্বর বাড়ির পাশে খোলা জায়গায় মাটি খোঁড়ার কাজ করছিলেন কয়েক জন শ্রমিক। এ সময় তারা মাটির নিচে পোঁতা অবস্থায় এক ব্যক্তির লাশ দেখতে পেয়ে বনানী থানা পুলিশকে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মাটির নিচ থেকে ওই চীনা নাগরিকের লাশটি উদ্ধার করে। পরে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিটের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আলামত সংগ্রহ করেন।

তিনি জানান, ওই চীনা নাগরিক বনানীর ভবনের ষষ্ঠ তলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করতেন। সেই ভবনের পাশেই মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় তার লাশ পাওয়া যায়। তিনি বলেন, আসলে কী ঘটেছিল তা এখনো স্পষ্ট নয়। কিছু দিন আগে ওই ব্যক্তির পরিবারের সদস্যরা চীনে গেছেন।
ওসি জানান, এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ওই ভবনের তিন নিরাপত্তাকর্মীসহ কয়েকজনকে থানায় আনা হয়েছে। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে তাকে গত মঙ্গলবার খুন করা হয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সার্বিক বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করছি। পোস্টমর্টেমের জন্য তার লাশ মর্গে পাঠানো হয়েছে।

বনানীর ওই ভবনের ম্যানেজার বাপ্পি সিনহা জানান, মঙ্গলবার বিকেলেও চীনা নাগরিকের সাথে তার দেখা হয়েছে। তিনি এক বছর ধরে পরিবার নিয়ে এই বাড়িতে আছেন। ওই চীনা নাগরিক পদ্মা সেতুতে পাথর সরবরাহসহ সরকারের কয়েকটি মেগা প্রকল্পে কাজ করতেন। সম্প্রতি তার পরিবার চীনে যায়।

চীনা নাগরিক হত্যাকাণ্ডের কারণ খুঁজছে পুলিশ। ডিএমপির গুলশান বিভাগের উপ-কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা হচ্ছে ব্যবসায়িক দ্বন্দ্ব থেকে চীনা ব্যবসায়ীকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। তিনি বলেন, জে জিয়াং ফি পদ্মা সেতুতে পাথর সাপ্লাই দিতেন। এর আগে কাপড়ের ব্যবসা করতেন তিনি।

পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে বাসায় (বাড়ি নং ৮২, রোড নং ২৩, ফ্ল্যাট নং ৬বি) ফেরেন চীনা নাগরিক। গতকাল দুপুরে খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। বাড়ির পেছনের ফাঁকা জায়গায় তার মাটিচাপা দেয়া লাশ পাওয়া যায়। চুল ও পা বাইরে বেরিয়ে ছিল। কান ও মুখে রক্ত ছিল। গলায়ও দাগ আছে। তিনি জানান, বাসার ভেতরে একটি কক্ষে জুতার ওপর কয়েক ফোটা রক্তের দাগ পাওয়া গেছে। মূল দরজা খোল ছিল। পোস্টমর্টেমের পর তার মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, এক ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে ওই বাসায় থাকতেন জে জিয়াং ফি। গত ২৩ অক্টোবর চীন থেকে ঢাকায় ফেরেন তিনি। দুই-এক দিনের মধ্যে তার স্ত্রী-সন্তানদের ঢাকায় আসার কথা। এ ঘটনায় ড্রাইভার, সিকিউরিটি গার্ডসহ ছয়জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশ হেফাজতে নেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।


আরো সংবাদ



premium cement