১৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`

যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ফের ধরাশায়ী বাংলাদেশ, লজ্জার সিরিজ হার

- ছবি : সংগৃহীত

এই মুখ কোথায় লুকাবেন সাকিব-শান্তরা? কোথায় রাখবেন এই লজ্জা! যুক্তরাষ্ট্রের কাছে সিরিজ হার, তবুও কিনা টানা দুই ম্যাচে হেরে! প্রথম ম্যাচের হার না হয় অঘটন ছিল, তবে আজকের হারে কিছু বলার সুযোগ আছে কি আদৌ?

বৃহস্পতিবার (২৩ মে) টেক্সাসের হিউস্টনে প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে সিরিজের দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টিতে ৬ রানে হেরেছে শান্তের দল।

১৪৫ রানের মধ্যমমানের লক্ষ্য। আধুনিক ক্রিকেটে সহজলভ্যই বটে। দেখেশুনে খেললে পাড়ি দেয়ার কথা অনায়াসেই। অথচ যুক্তরাষ্ট্রের ম্যারম্যার বোলিংয়ের বিপক্ষে এই রান তুলতে গিয়েই দম ফুরালো টাইগারদের। ১৯.৩ ওভারে ১৩৮ রানেই শেষ বাংলাদেশের দৌড়।

সহজ লক্ষ্য তাড়ায় শুরুতেই দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়ে যায় টাইগাররা। সৌম্য সরকার থিতুই হতে পারেননি, তানজিদ তামিম ভালো শুরুর পরও ফিরেন ইনিংস বড় না করেই। ৪.২ ওভারে ৩০ রানে সফরকারীরা হারায় ২ উইকেট।

শুরুতেই ভুল করেন সৌম্য, ইনিংসের চতুর্থ বলেই ফিরলেন উইকেট বিলিয়ে। সৌরভ নেত্রাভালকারকে তার বলেই ক্যাচ অনুশীলন করিয়ে ফেরেন গোল্ডেন ডাক মেরে। তামিম অবশ্য শুরুটা ভালোই করেন। যদিও ১৫ বলে ১৯ করেই থামতে হয় তাকে।

নাজমুল হোসেন শান্ত ও তাওহীদ হৃদয়ের ব্যাটে চতুর্থ উইকেট জুটিতে সেই ধাক্কা সামলে উঠার চেষ্টা করে বাংলাদেশ। পরের ৩৮ বলে ৪৮ রান যোগ করেন দু'জনে। তবে যখনই মনে হচ্ছিলো, হয়তো বিপদ কাটিয়ে উঠেছে দল; তখনই ফেরেন শান্ত।

রান আউটের ফাঁদে পড়ে বাংলাদেশ অধিনায়ক আউট হন ৩৪ বলে ৩৬ রানে৷ এক ওভার পর হৃদয়কে আন্ডারসন ফেরালে ফের শঙ্কায় পড়ে যায় দল। হৃদয় আউট হন ২১ বলে ২৫ করে। জয়ের জন্য তখনও ৪৩ বলে প্রয়োজন ৫৩ রান।

সময়ের প্রত্যাশা মেটাতে পারেননি মাহমুদউল্লাহ, ৪ বলে ৩ রানে আউট করে সেডলি ভ্যানের শিকার হন তিনি। একই বোলার পরের ওভারে এসে জাকের আলিকেও (৪) ফেরান। ১৭ ওভারে ১২৪ রানে ৬ উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

তখনও অবশ্য পথের প্রদীপ হয়ে জ্বলতে থাকা সাকিব ছিলেন মাঠে। তবে পরের বলেই সেই প্রদীপ নিভিয়ে দেন আলি খান, ২৩ বলে ৩০ রান করা সাকিবকে ফেরান তিনি। একই ওভারে তানজিম সাকিবকেও ফেরান এলবিডব্লুর ফাঁদে ফেলে।

শেষ ১২ বলে বাংলাদেশের প্রয়োজন হয় ১৫ রান। তবে ১৯তম ওভারে শরিফুলের উইকেট হারিয়ে ৩ রান তুলতে পারে টাইগাররা। শেষ ওভারে তুলতে হতো ১২ রান। তবে প্রথম দুই বল থেকে ৫ রান তুলার পরই শেষ হয় বাংলাদেশের ইনিংস। শেষ ১৪ রান তুলতেই হারায় ৫ উইকেট!

এর আগে বল হাতে শুরু যুক্তরাষ্ট্রকে বেশ চাপেই রাখে শরিফুল - রিশাদরা। হাত খুলে খেলতে দেননি মোনাক- আন্ডারসনদের। যদিও পাওয়ার প্লেতে বিনা উইকেটে ৪২ রান তুলে ভিন্ন কিছুরই আভাস দিয়েছিল স্বাগতিকেরা। তবে পরের ওভারেই সব কিছু বদলে দেন রিশাদ।

বাংলাদেশকে উদযাপনের উপলক্ষ এনে দিলেন রিশাদ হোসেন। পাওয়ার প্লে থেকে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যাওয়া যুক্তরাষ্ট্রকে জোড়া ধাক্কা দিলেন তিনি। পরপর দুই বলে উইকেট তুলে নিয়ে জাগিয়ে ছিলেন হ্যাটট্রিকের সম্ভাবনাও। যদিও তা আর হয়নি।

গলার কাঁটা হয়ে যাওয়া স্টিভেন টেলরকে ফিরিয়েই দলকে প্রথম উপলক্ষ এনে দেন রিশাদ। ভাঙেন উদ্বোধনী জুটি। ভয়ংকর হয়ে উঠার আগে তাকে ২৮ বলে ৩১ রানে ফেরান টেলরকে। ৬.৪ ওভারে ৪৪ রানে প্রথম উইকেটে হারায় যুক্তরাষ্ট্র।

দ্বিতীয় উইকেট তুলে নিতে অবশ্য বাংলাদেশকে অপেক্ষা করতে হয়নি, পরের বলেই পেয়ে যায় তার দেখা৷ তিনে নামা আন্দ্রেস গোসকে গোল্ডেন ডাক উপহার দেন রিশাদ। উইকেটের পেছনে জাকেরের ক্যাচ বানান তাকে।

রিশাদ মাত্র ১ রানে ২ উইকেট তুলে নেয়ায় ভারসাম্য ফিরে ইনিংসে। যদিও তৃতীয় উইকেট জুটিতে মোনাক প্যাটেল ও অ্যারন জোন্স মিলে যোগ করেন ৬০ রান, তবে তাতে খরচ করেন ৫৬ বল!

১৬.১ ওভারে জোন্সকে ৩৪ বলে ৩৫ রানে ফিরিয়ে এই যুগলবন্দী ভাঙেন মোস্তাফিজ। পরের ওভারে এসে জোড়া আঘাত আনেন শরিফুল ইসলাম। কোরি আন্ডারসনকে ১১ ও শুরু থেকে ব্যাট করা মোনাককেও ফেরান তিনি। মোনাক আউট হন ৩৮ বলে ৪২ করে।

শেষ ওভারের প্রথম বলে হারমিত সিংকে ফেরান ২ বলে ০ রানে ফেরান মোস্তাফিজ। যুক্তরাষ্ট্রের ইনিংস থামে ১৪৪ রানে। রিশাদ ২১ রানে ২, শরিফুল ২৯ রানে ২ ও মোস্তাফিজ ২ উইকেট নেন ৩১ রানে।


আরো সংবাদ



premium cement