১৯ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩০, ১৫ রবিউস সানি ১৪৪৬
`

বিসিবির অভিযোগের যে জবাব দিলেন হাথুরুসিংহে

চন্ডিকা হাথুরুসিংহে - ছবি : সংগৃহীত

ক্রিকেটারের সাথে অসদাচরণ ও আচরণবিধি ভাঙার দায়ে বাংলাদেশের প্রধান কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে চন্ডিকা হাথুরুসিংহেকে। শুরুতে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য না করলেও ৩ দিন পর সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বিবৃতি দিয়েছেন টাইগারদের সদ্য সাবেক হেড কোচ।

শুক্রবার সাবেক এই কোচ নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিয়েছেন।

বিবৃতিতে জাতীয় দলের স্পিনার নাসুম আহমেদকে চড় মারার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রথমত, অভিযুক্ত ঘটনাটি খেলোয়াড়দের ডাগআউট বা ড্রেসিংরুমে ঘটেছিল, যেখানে বিশ্বকাপের ম্যাচ চলাকালে সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকে। খেলার প্রতিটি মুহূর্ত সাথে সাথে ধারণ করে ৪০ থেকে ৫০টিরও বেশি ক্যামেরা। আমি অভিযোগকারীকে যাচাই করার সুযোগ পাইনি বা কোনো সাক্ষীও পাইনি, আদৌ যদি থেকে থাকে।’

তিনি আরো বলেন, ‘সেদিন যদি এতটাই গুরুতর হয়ে থাকে, তাহলে সেই ক্রিকেটার সাথে সাথে কেন দলের ম্যানেজার বা কোনো কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেনি? আর যদি অভিযোগ করা হয়ে থাকে, তাহলে আমাকে তখন কেন প্রশ্ন করা হয়নি? এটাই প্রশ্নের উদ্রেক করে যে এত মাস পর কেন কোনো ব্যক্তি ইউটিউবে এটা নিয়ে আলোচনার জন্ম দেবে।’

হাথুরুসিংহে বলেন, ‘দ্বিতীয়ত, ছুটি নেয়ার বিষয়ে স্পষ্ট করে বলতে চাই যে যখনই ব্যক্তিগত ছুটি নিয়েছি, সেটা আমি সিইও বা ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যানের অনুমতি নিয়েই নিয়েছি। বিসিবি আমাকে কখনোই বলেনি যে তারা আমার ছুটির বিষয় নিয়ে অসন্তুষ্ট। বরং আমি যখনই ছুটি চেয়েছি, বিসিবি তা অনুমোদন দিয়েছে। আমি তাদের অনুমোদন ছাড়া কখনোই ছুটিতে যাইনি।’

তিনি বলেন, ‘নতুন বোর্ড সদস্যরা যখন অভিযোগ করল যে আমি অতিরিক্ত ছুটি নিয়েছি, তারা ঈদ বা শুক্রবারের মতো সরকারি ছুটিগুলো হিসাবে আনেনি। এমনকি সরকারি ছুটির সময় যে ছুটি কাটাতে পারিনি, এর কৃতিত্বও তারা আমাকে দেয়নি। আমার জানামতে, বাংলাদেশের শ্রমিক আইন অনুযায়ী শুক্রবার কাজ করার জন্য আমার পরবর্তী সময়ে ছুটি পাওয়ার কথা। এ ছাড়া বিসিবির একজন চাকরিজীবী হিসেবে আমার শুক্রবার ছুটি পাওয়ার কথা এবং বৃহস্পতিবার অর্ধদিবস ছুটি পাওয়ার কথা।’

তিনি আরো বলেন, এটাও এখানে তুলে ধরা গুরুত্বপূর্ণ যে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) চলার সময় বিদেশী কোচদের ছুটি পাওয়া এখানকার সাধারণ নিয়ম। এমন নয় যে এটা আমার ক্ষেত্রেই ব্যতিক্রম ছিল, বরং আমার মেয়াদের আগেও অনেক বিদেশী কোচের ক্ষেত্রে এটাই রীতি ছিল। যাই হোক, বিপিএলের সময় নেয়া ছুটি বিবেচনা করা হয়নি এবং এটা আমার চুক্তি অনুযায়ী পাওনা ছুটির বাইরেই ছিল।’

নিজের মর্যাদা রক্ষায় লড়াইয়ের ঘোষণা দিয়ে হাথুরু বলেন, 'আমি আমার মর্যাদা রক্ষা করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং এ বিষয়ে যেকোনো তদন্তে পূর্ণ সহায়তা করব। শেষ পর্যন্ত সত্যের জয় হবেই এবং যে খেলাটিকে আমি ভালোবাসি, সেটাতে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারব।'

এর আগে মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে হাথুরুসিংহেকে জাতীয় দলের প্রধান কোচের পদ থেকে বরখাস্ত করেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। আগামী চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত হাথুরুর সাথে চুক্তি থাকলেও এখানেই তার সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করে বিসিবি।

যার কারণ হিসেবে বড় অভিযোগ এনেছে হাথুরুসিংহের বিরুদ্ধে। সাফল্য-ব্যার্থতার মূল্যায়ন করে কোচ বরখাস্ত স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হলেও হাথুরুর ক্ষেত্রে আনা হয়েছে বিরল অভিযোগ। যা ক্রিকেটে এর আগে শোনা যায়নি কখনো।

২০২৩ বিশ্বকাপে একজন ক্রিকেটারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় হাথুরুসিংহকে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে দাবি করেন বিসিবি সভাপতি। সেই ঘটনায় হাথুরুর ওপর অসদাচরণ ও আচরণবিধি ভাঙার অভিযোগ তুলেছে বিসিবি।

যেখানে ক্রিকেটারকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছনা কেবল নয়, নিয়ম ভেঙে তিন মাসের বেশি অতিরিক্ত ছুটি কাটানোর অভিযোগও তুলেছে বিসিবি।


আরো সংবাদ



premium cement