পাবজি-ফ্রি ফায়ার বন্ধ, তালিকা হচ্ছে টিকটক-লাইকি-বিগোর
- নয়া দিগন্ত অনলাইন
- ২৫ আগস্ট ২০২১, ২২:২৯
ক্ষতিকর বিবেচনায় বাংলাদেশে অনলাইন গেম পাবজি ও ফ্রি ফায়ার আদালতের নির্দেশে বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। আরো কিছু অনলাইন গেম ও অ্যাপ বন্ধ করার জন্য কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার।
পাবজি ও ফ্রি ফায়ার বন্ধ করতে এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে ১৬ আগস্ট হাইকোর্ট ১০ দিনের মধ্যে পাবজি ও ফ্রি ফায়ারসহ সব ক্ষতিকর গেম তিন মসের জন্য বন্ধের নির্দেশ দেন। একইসাথে অনলাইন প্লাটফর্ম থেকে টিকটক, বিগো লাইভ, পাবজি, ফ্রি ফায়ার গেম ও লাইকির মতো সকল প্রকার অনলাইন গেমস ও অ্যাপ বন্ধে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত। ১০ দিনের মধ্যে এর জবাব দিতে বলা হয়।
বিটিআরসির ভাইস চেয়ারম্যান সুব্রত রায় মৈত্র বলেন, এরই মধ্যে পাবজি ও ফ্রি ফায়ার বন্ধ হয়ে গেছে। আমরা ডিপার্টমেন্ট অব টেলিকমকে নির্দেশ দেয়ার পর তারা বন্ধ করে দিয়েছে। বাকি ক্ষতিকর অনলাইন প্লাটফর্ম নিয়েও সিদ্ধান্ত হবে।
তিনি জানান, পাবজি ও ফ্রি ফয়ার বন্ধে হাইকোর্টের স্পষ্ট নির্দেশনা আছে। আর বাকি যেগুলো আছে ওইগুলো ক্ষতিকর কি না, তা পর্যালোচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, টিকটক, লাইকি, বিগোসহ আরো যেগুলো আছে সেগুলোর তালিকা করছি আমরা। আমরা কমিটি করে দিয়েছি পর্যালোচনা করার জন্য। ক্ষতিকরগুলো আমরা বন্ধ করে দেব। যেগুলো পারব না সেগুলো ওই প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করতে বলা হবে।
পাবজি ও ফ্রি ফায়ারের বাংলাদেশে কোনো প্রকাশ্য এজেন্ট নেই। তবে বাংলাদেশে অনেকগুলো অনলাইন এজেন্ট দেখা যায়। যাদের কাছে এই গেমের জন্য বিকাশ বা ক্রেডিট কার্ডে পেমেন্ট করা যায়।
ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমার জানা মতে পাবজি দেশের বাইরে থেকে বিটিআরসির সাথে ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ রাখে। আর ফ্রি ফায়ার কখনোই যোগাযোগ করেনি। বাংলাদেশে তাদের কোনো এজেন্ট আছে বলে আমার জানা নেই।
তিনি বলেন, আমরা হাইকোর্টের রুলের আওতায় কাজ করছি। যে দু’টিকে সরাসরি বন্ধ করতে বলেছেন তা বন্ধ করে দিয়েছি। বাকিগুলো এখন দেখতে হবে ক্ষতিকর কি না। কারণ কেউ বলে ক্ষতিকর আবার কেউ বলে ক্ষতিকর নয়। আমরা এর সাথে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, রিটকারীসহ আরো অনেকের সাথে কথা বলব। তারপর সিদ্ধান্ত নেব। আদালত প্রাথমিকভাবে তিন মাসের জন্য বন্ধ করতে বলেছেন আমরা সেটাই করব।
তিনি আরেক প্রশ্নের জবাবে বলেন, এসব গেম কর্তৃপক্ষ দাবি করছে যে বাংলাদেশ থেকে কোনো টাকা নিচ্ছে না। তবে এটা দেখা উচিত। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড- এনবিআর সেটা পেলে তো ট্যাক্স আদায় করতে পারে।
বাংলাদেশে এসব অনলাইন গেমের বিস্তৃতি ও এর প্রভাব নিয়ে বিস্তারিত কোনো গবেষণা বা জরিপ নেই। তবে তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্লেষক তানভীর হাসান জোহা বলেন, পাবজি ও ফ্রি ফায়ার অনলাইন গেম ও যুদ্ধভিত্তিক। অনলাইন গেমে অনেকে একসাথে সংযুক্ত হয়ে খেলেন। আর কিশোর তরুণেরাই এই গেমে আসক্ত। তারা গেমের বাইরে ব্যক্তিগত যোগাযোগও গড়ে তুলতে পারে দেশে বিদেশে।
মন্ত্রী জব্বারের মতে, এর ফলে দু’টি ঘটনা ঘটে। প্রথমত, যুদ্ধভিত্তিক গেম হওয়ায় তারা সহিংস হয়ে উঠতে পারে। খেলার সময়ও তারা অসহিষ্ণু হয়ে ওঠে। দ্বিতীয়ত, ব্যক্তিগত যোগাযোগের সূত্র ধরে তারা অপরাধে জড়িয়ে পড়তে পারে। অপরাধের শিকার হতে পারে।
তিনি বলেন, এই গেম এখন দেশের প্রত্যন্ত এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তারা মাঠে গিয়ে খেলাধুলা না করে গোল হয়ে বসে মোবাইলে এই গেম খেলে। আর শহরেও কিশোর-তরুণরা এই গেমের কারণে খেলাধুলা বিমুখ হয়ে উঠছে।
এই মামলার রিটকারী অ্যাডভেকেট মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির জানান, ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশ দুই কোটি ৬০ লাখ মানুষ বিভিন্ন ডিজিটাল গেম খেলে। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে দিনে দুই-তিন ঘণ্টা গেম খেলে কাটানোর প্রবণতা লক্ষ্য করা গেছে।
তিনি বলেন, এসব গেমে তারা আসক্ত হয়ে লেখাপড়া ও খেলাধুলা বিমুখ হয়ে পড়ছেন। তারা ফিজিক্যাল ফিটনেস হারাচ্ছেন। আমরা একটি মেধাহীন প্রজন্ম পাচ্ছি। এই গেম গ্রামাঞ্চলে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। আর সম্প্রতি টিকটকের মাধ্যমে তারাকা হওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে নারী পাচারের ঘটনা বেড়েছে।
সূত্র : ডয়েছে ভেলে
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা