২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ০৯ মাঘ ১৪৩১, ২২ রজব ১৪৪৬
`

দেশে গত ৩০ বছরের তুলনায় কম তাপমাত্রা : কারণ কী?

কম তাপমাত্রা-আবহাওয়া অধিদফতর-আবহাওয়া-শৈত্যপ্রবাহ-মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ-তীব্র শৈত্যপ্রবাহ
দেশের উত্তরাঞ্চল সবচাইতে শীতপ্রবণ এলাকা - ফাইল ছবি

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, ডিসেম্বরের ২০ এবং ২১ তারিখে সারাদেশে যে তাপমাত্রা, তা গত ৩০ বছরের একই সময়ের স্বাভাবিক তাপমাত্রার গড়ের চেয়ে বেশ কম।

গত দুই দিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে তাপমাত্রা রাতে গড়ে ৯-১৫ ডিগ্রি এবং দিনের বেলায় ২২-২৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল।

আবহাওয়াবিদরা বিবিসিকে বলছেন, এই তাপমাত্রা গত ৩০ বছরের এই সময়ে দেশের স্বাভাবিক তাপমাত্রার গড়ের চেয়ে এক থেকে পাঁচ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কম।

একারণেই এই মুহূর্তে দেশের ১০টি জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ চললেও, সারাদেশেই স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপমাত্রা অনুভূত হচ্ছে।

আবহাওয়াবিদ মো: আবুল কালাম মল্লিক বিবিসিকে বলেছেন, এ বছর শীতের অনুভূতি বেশি দেখা যাচ্ছে।

পুরো দেশেই বিশেষ করে উত্তর এবং উত্তর-পশ্চিমের জেলাগুলোতে তাপমাত্রা আগামী কয়েকদিনও স্বাভাবিকের চেয়ে কমই থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, বাংলাদেশের সাধারণ তাপমাত্রার হিসাব অনুযায়ী বড় কোনো এলাকা জুড়ে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ৮ থেকে ১০ ডিগ্রির মধ্যে থাকলে সেটিকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়।

তাপমাত্রা যদি ৬ থেকে ৮ ডিগ্রির মধ্যে থাকে তাহলে তাকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ বলে।

কিন্তু তাপমাত্রা যদি ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে যায়, তাহলে তাকে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ হিসেবে ধরা হয়।

চলছে শৈত্যপ্রবাহ
বাংলাদেশের ১০টি জেলায় এই মুহূর্তে চলছে মৃদু থেকে মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ।

বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, এই শৈত্যপ্রবাহ আরো দুই থেকে তিন দিন চলবে।

এই মুহূর্তে গোপালগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা, বরিশাল, নওগাঁ, পঞ্চগড়, কুড়িগ্রাম, যশোর, কুষ্টিয়া এবং চুয়াডাঙ্গায় শৈত্যপ্রবাহ চলছে।

এর মধ্যে মঙ্গলবার সকালে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল তেঁতুলিয়ায়, ৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।

এর আগে সোমবার চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অধিদফতর, ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। কিন্তু ২১ ডিসেম্বর সকালে কিছুটা বেড়েছে।

আগের দিন অর্থাৎ ২০ ডিসেম্বরে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা ছিল যশোর, তেঁতুলিয়া, পাবনার ঈশ্বরদী, রাজশাহী এবং বরিশালে।

আরো আটটি জেলার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ঘরে রয়েছে।

আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক বলেছেন, বুধবার থেকে তাপমাত্রা কিছুটা বৃদ্ধি পাবে, কিন্তু শীতল বাতাসের কারণে দেশজুড়ে শীতের অনুভূতি বেশিই থাকবে।

এ সময়ে রোদের দেখা কম মিলবে, আকাশ মেঘলা থাকতে পারে অনেক জায়গায়।

কোথাও হালকা কুয়াশা পড়তে পারে, আর সারাদেশে রাত এবং দিনের তাপমাত্রা একই রকম থাকতে পারে।

গড় তাপমাত্রা কমে যাওয়ার কারণ কী?

বাংলাদেশে এখন চলছে বাংলা পৌষ মাস।

সাধারণত বছরের এই সময়টায় অর্থাৎ ডিসেম্বর মাসের শেষদিকে এমনিতেই তাপমাত্রা কম থাকে।

ডিসেম্বরের শুরু থেকেই কমতে শুরু করে তাপমাত্রা।

আর এ বছর কিছুটা আগেই দেশে শুরু হয়েছিল শীতের মৌসুম।

এর আগে আবহাওয়া অধিদফতর পূর্বাভাস দিয়েছিল, ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ একটি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে।

তবে আবুল কালাম মল্লিক বলেছেন, এ মাসের অবশিষ্ট কয়েকদিনে তীব্র শৈত্যপ্রবাহের কোনো সম্ভাবনা নেই।

কিন্তু তিনি বলেছেন, এ বছরের এই শীতল তাপমাত্রা গত ৩০ বছরের তাপমাত্রার চাইতে অঞ্চলভেদে এক থেকে পাঁচ ডিগ্রি পর্যন্ত কম।

এর পেছনে কারণ হিসেবে তিনি যেসব কারণ ব্যাখ্যা করেছেন, সেগুলো হলো :

- বাতাসের দিক এবং গতিবেগে পরিবর্তন : এ সময়ে হিমালয় থেকে আসা হিমেল বাতাস উত্তর ও উত্তর-পশ্চিম দিকে থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করে। বাতাসের গতিবেগ ভৌগোলিক কারণে বেশি থাকে। এ বছর সেটি স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি দেখা যাচ্ছে।

- সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য কম : কোনো একটি এলাকার সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য এ বছর অনেক কমে গেছে। আবার সাধারণ সময়ে দিনের বেলায় যে তাপমাত্রা থাকে, রাতে তার চাইতে কয়েক ডিগ্রি কমে যায়। পরদিন সূর্য ওঠার পর সেটি বাড়ে। কিন্তু এ বছর দিন ও রাতে তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য কমে গেছে সারাদেশেই। এই মুহূর্তে পুরো দেশে রাতের তাপমাত্রা ৯ থেকে ১৫ ডিগ্রির মধ্যে ওঠানামা করছে। দিনের তাপমাত্রাও অনেক জেলাতে একই রকম রয়েছে।

- সূর্যের কিরণকাল : কুয়াশার কারণে এই সময়টাতে দেশের অনেক জায়গাতেই সূর্য দেরি করে ওঠে। এর ফলে দিনে সূর্যের কিরণকাল কমে যায়, মানে যতক্ষণ সময় সূর্যালোক পাবার কথা, তার চেয়ে কম পাওয়া যায়, ফলে উষ্ণতার হারও কমে যায়। এ বছর কুয়াশা কিছুটা বেশি।

- সূর্যের অবস্থান : বছরের এই সময়টায় সূর্যের দক্ষিণায়ন হয়, এর মানে হচ্ছে সূর্যের অবস্থান সরাসরি বাংলাদেশের ভূমি বরাবর নয়। বরং এখন সূর্যের অবস্থান বঙ্গোপসাগর বরাবর রয়েছে, যে কারণে সূর্য কিছুটা তির্যকভাবে আলো দিচ্ছে বাংলাদেশে। এ কারণে সূর্যের তাপ কম অনুভূত হয়।

- জলীয় বাষ্প কমে যাওয়া এবং শুষ্ক আবহাওয়া : কোনো অঞ্চলের বাতাসে জলীয় বাষ্প ৪০ শতাংশের নিচে নেমে গেলে আবহাওয়া শুষ্ক এবং বাতাস ভারী হয়ে পড়ে। তার ফলে অবশ্যম্ভাবীভাবেই শীত বাড়ে। বাংলাদেশে এই মুহূর্তে গড়ে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ অনেক কম।

সূত্র : বিবিসি


আরো সংবাদ



premium cement
দেশের সুবিধা বঞ্চিত শিশুকে আমরা সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলব : দেলাওয়ার হোসেন আ’লীগকে রাজনৈতিক ব্ল্যাঙ্ক চেক দিতে চায় বিএনপি : হাসনাত আব্দুল্লাহ মিয়ানমারের বিদ্রোহীদের সাহায্য করছে যে ‘তরমুজ‘ গুপ্তচররা পটুয়াখালীতে আজহারীর মাহফিল ২৫ জানুয়ারি, ব্যাপক প্রস্তুতি বনশ্রীর স্কুল অফ দ্য নেশনে অনুষ্ঠিত হলো পিঠা উৎসব সিরাজগঞ্জ জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতপন্থী পূর্ণপ্যানেল জয়ী হারানো সম্মান, চাকরি ও ক্ষতিপূরণ চান মুক্তিপ্রাপ্ত বিডিআর সদস্যরা বিএনপি মহাসচিবের দাবি আরেকটা ১/১১ এর ইঙ্গিত : উপদেষ্টা নাহিদ ভোরের কাগজ খুলে দেয়ার দাবিতে কর্মীদের অবস্থান কর্মসূচি মালয়েশিয়ায় ৭১ বাংলাদেশীসহ ১৭৬ অভিবাসী আটক রাশিয়ার সাথে নৌঘাঁটি চুক্তি বাতিল করল সিরিয়ার নতুন সরকার

সকল