জবি ছাত্রলীগ সম্পাদকের বিরুদ্ধে মেডিক্যালে ভর্তির প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ
- জবি প্রতিনিধি
- ০১ জুলাই ২০২৪, ০১:১৪
মেয়াদোত্তীর্ণ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইনের বিরুদ্ধে মেডিক্যালে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। নিজের মেসেঞ্জারের মাধ্যমে অজ্ঞাত এক ব্যক্তিকে এ প্রশ্নপত্র ও উত্তর দিতে দেখা যায় তাকে।
প্রশ্নফাঁসের মেসেঞ্জারের স্ক্রিন রেকর্ডের ভিডিওসহ সব তথ্য প্রমাণ এই প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। মেসেঞ্জার রেকর্ডে দেখা যায়, জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন তার নিজের মেসেঞ্জার থেকে একজনকে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার উত্তরপত্র সরবরাহ করছেন। ওই উত্তরপত্রের অধিকাংশ ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সাথে মিলে গেছে।
মেসেঞ্জারে দেখা যায়, যিনি উত্তরপত্র নিচ্ছেন তিনি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আকতারকে বলছেন, ‘সব দিছেন ভাই?’ জবাবে আকতার হোসাইন বলেন, ‘হ্যা, কেউ কে দিয়ো না আবার।’ এরপর স্কিন রেকর্ডে মেসেঞ্জার থেকে আকতার হোসাইনের ফেসবুক প্রোফাইলে ঢুকে আইডির সত্যতাও দেখা গেছে।
এ দিকে প্রশ্নফাঁসের বিষয়টি অনুসন্ধানে এস এম আকতার হোসাইনের মামাতো ভাই পরিচয়ে মাদারীপুরের কাঁকন মিয়ার একটি অডিও ক্লিপও এ প্রতিবেদকের হাতে এসেছে। তিনি একজন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে ভর্তি পরীক্ষায় টিকিয়ে দেয়ার গ্যারান্টি দেন। কাঁকন মিয়া বলেন, ‘এখানে আমি আকতারের আপন মামাতো ভাই। আকতারও এটা বলেছে। আপনিও বলেছেন যে ভাই আপনি যে কয়টা কাজ দিয়েছেন একটাও মিস হয় না।’ এ বিষয়ে কাকন মিয়ার কাছে জানতে চাইলে তিনি গণমাধ্যমকে জানান, ‘আপনি ওই যার পরিচিত তার কাছে শোনেন। আমার কাছে জানার কী আছে?
জবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের নেতিবাচক এরুপ সংশ্লিষ্টতার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করেন অন্যান্য নেতারা। সহসভাপতি মিথুন বাড়ৈ বলেন, সাধারণ সম্পাদক এস এম আকতার হোসাইন দীর্ঘ দিন ধরে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র জালিয়াতি ও অপকর্মের সাথে জড়িত।
জবি ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল রায়হান বলেন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কখনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না। প্রশ্নফাঁসের মতো এই গুরুতর অভিযোগে সাংগঠনিক ব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রবিরোধী এ কাজের জন্য আইনগত ব্যবস্থা নেয়া উচিত।
জবি ছাত্রলীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ রাসেল বলেন, আশা করছি সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবে। আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মফিজুর রহমান হামিম বলেন, কেউ যদি ছাত্রলীগের নাম ব্যবহার করে সংগঠনকে কলুষিত করে আশা করছি এর যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে এসব কর্মকাণ্ডের জড়িত থাকার বিষয় অস্বীকার করে এস এম আকতার হোসাইন বলেছেন, ‘এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ভিত্তিহীন- এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।’
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালি আসিফ ইনান বলেন, প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ একটি গুরুতর বিষয়। আমরা যদি কারো বিরুদ্ধে এমন সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাই তাহলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেবো। জবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকের প্রশ্নফাঁসের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, আমি বিষয়টি অবগত নই। যদি কোনো অপরাধে যুক্ত থাকে তবে অপরাধীর স্থান ছাত্রলীগে নেই।
আরো সংবাদ
-
- ৫ঃ ৪০
- খেলা