১২ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৬ হিজরি
`
হাইকোর্টের রায় প্রকাশ

আইনের সংস্পর্শে আসা শিশুর বয়স নির্ধারণের এখতিয়ার তদন্ত কর্মকর্তার নেই

-

আইনের সংস্পর্শে আসা বা আইনের সাথে সঙ্ঘাতে জড়িত কাউকে শিশু হিসেবে নির্ধারণ করার এখতিয়ার কোনো তদন্ত কর্মকর্তার নেই বলে পর্যবেক্ষণসহ রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। তবে কাউকে শিশু হিসেবে মনে হলে তদন্ত কর্মকর্তা বা প্রতিষ্ঠান তার বয়স নির্ধারণে শিশু আদালতে হাজির করবে এবং সেক্ষেত্রে শিশু আদালত ২০১৩ সালের শিশু আইনের ২১ ধারার বিধান অনুসরণ করে বয়স নির্ধারণ করবে।
বিচারপতি শেখ মো: জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ কে এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চের দেয়া এ-সংক্রান্ত পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এই রায় দেন আদালত। পূর্ণাঙ্গ রায়টি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।

মাওলানা আবদুস সাত্তার বনাম রাষ্ট্র এবং অন্য একজন শিরোনামের একটি ফৌজদারি আপিল মঞ্জুর করে হাইকোর্টের দেয়া রায়ে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
রায়ে হাইকোর্ট বলেছেন, শিশু আইনের ২১ ধারার বিধান অনুযায়ী, কেউ অভিযুক্ত হোক বা না-হোক, কেবল কাউকে শিশু হিসেবে অভিহিত করার অধিকার শুধু শিশু আদালতকে দেয়া হয়েছে। হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে, আইনের সাথে সঙ্ঘাতে জড়িত কোনো শিশুর বয়স নির্ধারণে কোনো শিশুর শিক্ষাগত সনদে উল্লিখিত জন্মতারিখ এবং জন্মমৃত্যু নিবন্ধন আইনের বিধানমতে নিবন্ধিত জন্মসনদের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে জন্মসনদ প্রাধান্য পাবে। আর জন্মনিবন্ধনের জন্মতারিখ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সনদের জন্ম তারিখ ও আইনের সাথে সঙ্ঘাতে জড়িত শিশুর বাহ্যিক অবয়ব-শারীরিক গঠন আপাতদৃষ্টে সাংঘর্ষিক বলে মনে হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভর্তি রেজিস্ট্রার ও ছাত্রছাত্রীর হাজিরা খাতা তলব করে মিলিয়ে দেখতে হবে। তা সম্ভব না হলে সরকারি মেডিক্যাল কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেডিওলজি ও ইমেজিং বিভাগের তিনজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দিয়ে গঠিত বোর্ডের মাধ্যমে বয়স নির্ধারণ করতে হবে।

রায়ে আরো বলা হয়েছে যে, আইনের সাথে সঙ্ঘাতে জড়িত কোনো শিশু বা ব্যক্তিকে যদি ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার বিধানমতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী লিপিবদ্ধের জন্য কোনো ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে উপস্থাপন করা হয়; আর সেক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে বয়স নির্ধারণের কোনো অকাট্য বিশ্বাসযোগ্য দলিল উপস্থাপন না করা হয়, তাহলে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারার বিধানমতে জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করার আগে আইনের সাথে সঙ্ঘাতে জড়িত শিশুর বয়স নির্ধারণে শিশু আইনের বিধান অনুযায়ী উপরি-উক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে। একই ভাবে শিশু আদালত কিংবা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল আইনের সাথে সংঘর্ষে জড়িত কোনো শিশুর বয়স নির্ধারণে উপরি-উক্ত পদ্ধতি অনুসরণ করবেন।


আরো সংবাদ



premium cement